বিনোদন ডেস্ক : বিনোদন জগতের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ফেরদৌস আরা। যিনি ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বাংলাদেশ বেতারে গান গাইতে পারেননি। অংশ নিতে পারেননি কোনো অনুষ্ঠানে। ভিন্ন মতের হওয়ায় বিগত সরকারের আমলে কালো তালিকাভুক্ত ছিলেন তিনি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। এরপর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আবারও ফেরদৌস আরা বিটিভি ও বেতারের অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। হাসিনার বিদায়ে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আবারও সরকারি অনুষ্ঠানগুলোতে আমন্ত্রণ পেতে শুরু করেছেন তিনি। নজরুল ইনস্টিটিউটের সদস্যও নির্বাচিত হয়েছেন।

এবার পেলেন রাষ্ট্রের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার একুশে পদক।

বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য এ বছর ১৫ বিশিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে একুশে পদকের জন্য মনোনীত করেছে সরকার। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে মনোনীতদের নাম ঘোষণা করা হয়। সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী মনোনীতদের নাম প্রকাশ করেন।

এই তালিকায় নিজের নাম দেখার তাৎক্ষণিক অনুভূতি প্রকাশ করে ফেরদৌস আরা বলেন, ‘একুশে পদক পাওয়ায় আমি ভীষণ আনন্দিত। এই অনুভূতি সত্যিই প্রকাশের ভাষা নেই। আমার দীর্ঘ সংগীত ক্যারিয়ারে যারা পাশে ছিলেন, শ্রোতা, ভক্ত, অনুরাগী এবং আমার পরিবারের সবার কাছেই কৃতজ্ঞতা জানাই। একজন শিল্পী হিসেবে এমন পুরস্কারে দায়িত্ব আরো বেড়ে গেল। সবার কাছে দোয়া চাই যেন সুস্থ থেকে গান করে যেতে পারি।

তিনি বলেন, ‘স্বীকৃতি ব্যাপারটা কাগজ-কলমের। কিন্তু মানুষের ভালোবাসাটাই একজন শিল্পীর জন্য বড় পাওয়া। মানুষ ভালোবাসে বলেই গান গেয়ে যেতে পারছি। মাঝে কিছু অনুষ্ঠানে এমনও হয়েছে, মানুষ বাধভাঙা উচ্ছ্বাস নিয়ে আসছে শুধু দেখার জন্য। এমন পরিস্থিতি হয়েছে, তাদের জন্য তিনটি রাস্তার মোড় আটকে রাখতে হয়েছিল। এই যে মানুষের ভালোবাসা সেটা তো অ্যাওয়ার্ডে পাওয়া যায় না। তবে স্বীকৃতি শিল্পীসত্তার পূর্ণতা দেয়।’

দেশের নজরুলসংগীত শিল্পীদের মধ্যে যে কজন প্রথিতযশা পেশাদার নজরুলসংগীত শিল্পী রয়েছেন, তাদের অন্যতম একজন ফেরদৌস আরা। সব ধরনের গান গাইলেও নজরুলসংগীত শিল্পী হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন তিনি। চার যুগেরও বেশি সময় ধরে সংগীতচর্চা করছেন এই শিল্পী। উজবেকিস্তানে জাতিসংঘ আয়োজিত লোকসংগীত উৎসবে নজরুলসংগীত গেয়ে পুরস্কৃত হয়েছিলেন তিনি।