অনলাইন ডেস্ক : ভারতে বসে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনাকে সমর্থন করে না মোদি সরকার। এটি দুই দেশের সম্পর্কের একটি ক্ষুদ্র প্রতিবন্ধক বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি।
ভারতের বিরোধী দলীয় এমপি শশী থারুর নেতৃত্বাধীন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সামনে সাম্প্রতিক ঢাকা সফরের বিস্তারিত তুলে ধরার সময় তিনি এ মন্তব্য করেন।দ্য হিন্দু, ইন্দো-এশীয় নিউজ সার্ভিসসহ ভারতের একাধিক গণমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সফর থেকে ফেরার দুদিন পর ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে ব্রিফ করেন। বুধবার নয়াদিল্লির সংসদ ভবনের অ্যানেক্স বিল্ডিংয়ে আড়াই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা ব্রিফে দেশটির ২১ থেকে ২২ জন সংসদ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
ব্রিফিংয়ে শেখ হাসিনা, ভারতের মাটিতে বসে তার রাজনৈতিক কার্যক্রম, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত নির্যাতনের মতো বিষয় উঠে আসে।
এ বিষয়ে স্থায়ী কমিটিকে বিক্রম মিশ্রি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কোনো একক রাজনৈতিক দল বা সরকারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বরং বাংলাদেশের জনগণের প্রতি মনোযোগ দিয়েই সম্পর্ক বিবেচনা করে ভারত।’
তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা বিভিন্ন মাধ্যমে তার বক্তব্য বা মন্তব্য প্রচারের জন্য ব্যক্তিগত যোগাযোগের উপকরণ ব্যবহার করছেন। ভারতের ভূখণ্ডে বসে তার (শেখ হাসিনার) রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া জন্য ভারত সরকার তাকে কোনো প্ল্যাটফর্ম বা সুযোগ প্রদান করেনি। তৃতীয় দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ এড়ানো ভারতের ঐতিহ্যগত প্রথার অংশ।’
শেখ হাসিনাকে নিয়ে বিক্রম মিশ্রির এ বক্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে জানায় দ্য হিন্দু। কারণ, গত কয়েক দিনে ভারতে বসে শেখ হাসিনা অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে বেশ কয়েকটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন। তার এমন রাজনৈতিক কার্যক্রম ভালোভাবে নেয়নি বাংলাদেশ সরকার।
কমিটিকে পররাষ্ট্রসচিব জানান, সোমবার ঢাকা সফরের সময় তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে জানিয়েছেন যে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কোনো বিশেষ রাজনৈতিক দল বা সরকারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। ভারত বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দেয় এবং যেকোনো সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখবে।
উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ আগস্টে শেখ হাসিনা পতন এবং ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তার নিয়ে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে বেশ টানাপড়েন চলছে। এমন পরিস্থিতিতে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক ঠিক রাখতে চলতি সপ্তাহে ঢাকা সফর করেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব।
সফরে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পাশাপাশি ঢাকায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও পররাষ্ট্রসচিব জসীম উদ্দিনের সঙ্গেও বৈঠক করেন বিক্রম মিশ্রি।