অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠাতে ভারত সরকারকে উদ্যোগ নিতে পশ্চিমবঙ্গের মুখমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে আহ্বান জানিয়েছেন তার কড়া সমালোচনা করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত মির্জা ফখরুল বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার ভোররাতে ফেসবুক স্ট্যাটাসে মমতার সমালোচনা করেন।
সেখানে মির্জা ফখরুল লিখেছেন, ভারতের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের মুখমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে উক্তি করেছেন, তা সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতি একটা হুমকিস্বরূপ এবং আমরা মনে করি। এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে ভারতের নেতাদের যে দৃষ্টিভঙ্গি তা কিছুটা হলেও প্রকাশিত হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব লিখেছেন, ‘এ ধরনের কোনো চিন্তা ভারতের নেতাদের মধ্যে থাকা উচিত হবে না। কারণ বাংলাদেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীন হয়েছে এবং সম্প্রতি একটা বিপ্লবের মধ্য দিয়ে তারা গণতন্ত্রকে ফিরে পেয়েছে। এ দেশের মানুষ যেকোনো মূল্যে এ ধরনের চক্রান্তের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।’
ভারতীয় মিডিয়ার সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল লিখেছেন, বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ক্ষুণ্ন হওয়া বা বিপন্ন হওয়ার যে অলীক কাহিনি ভারতীয় মিডিয়াগুলোতে প্রচারিত ও প্রকাশিত হচ্ছে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা বারবার বলেছি এখানে ভারতের সাংবাদিকেরা এসেছিলেন, তারাও দেখেছেন, বাংলাদেশে এই ধরনের কোনো পরিস্থিতি নেই। অথচ ভারতবর্ষের মিডিয়া ও তাদের নেতৃবৃন্দ যেভাবে সম্পূর্ণ একটা মিথ্যাকে তারা প্রচার করছেন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি দিচ্ছেন, তা কোনোমতেই বাংলাদেশের মানুষ গ্রহণ করবে না।’
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে শেখ হাসিনা ভারতে চলে যাওয়ার পর দেশের দায়িত্ব নেওয়া অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে।
বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের নির্যাতন হচ্ছে এমন অভিযোগে সরব ভূমিকায় রয়েছে ভারতের গণমাধ্যম, যাকে অতিরঞ্জিত এবং সংঘবদ্ধ অপপ্রচার হিসেবে বর্ণনা করে আসছে বাংলাদেশ সরকার।
সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে দুদেশের সরকারের মধ্যে কয়েকবার বিবৃতি, পাল্টা বিবৃতি দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
সর্বশেষ রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে সংখ্যালঘুদের আট দফা দাবি আদায়ে মাঠে নামা সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতার ও কারাগারে পাঠানোর ঘটনাও পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের সূত্রপাত ঘটিয়েছে। এর মধ্যে গতকাল সোমবার বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী পাঠাতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজ্য বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে যোগ দিয়ে তৃণমূল নেত্রী মমতা বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপও চেয়েছেন।
মমতার এমন মন্তব্যে ক্ষোভে ফেটে পড়েছে বাংলাদেশ। গতরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে।