অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর জন্য ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার যাতে জাতিসংঘকে আহ্বান জানায় সে অনুরোধ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। তার এই বক্তব্য রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সঠিক পদক্ষেপ নয় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

আজ সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অবস্থান নিয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের ব্রিফ করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। পরে এক সংবাদ সম্মেলনে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের মন্তব্যের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানান তিনি।

তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘উনি (মমতা) এই বক্তব্য কেন দিলেন এটা আমি বুঝতে পারছি না। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এটা তার জন্য সঠিক পদক্ষেপ নয়। রাজনীতিবিদরা তো সবসময় রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বক্তব্য দিয়ে থাকেন। আমি মনে করি, এটা পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির জন্য সহায়ক হবে না। এটা অবশ্য আমার মত।’

চলতি মাসে বাংলাদেশ-ভারত ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) হওয়ার কথা রয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রির নেতৃত্বে ভারতীয় প্রতিনিধিদল এতে অংশ নেবে বলে জানা গেছে।ভারতের সঙ্গে দিন দিন সম্পর্কের টানাপোড়েনকে কেন্দ্র করে এফওসি হওয়া নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা আছে কি না, জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এফওসি হওয়ার কথা। আমি মনে করি হবে। এখন দুইপক্ষ একসঙ্গে হতে হবে।’

সামনের দিনগুলোতে দিল্লিকে ঢাকা কীভাবে সামলাবে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘পারস্পরিক স্বার্থ ঠিক রেখে আমরা ভারতের সঙ্গে একটা স্বাভাবিক, ভালো ও সুসম্পর্ক চাই।’

বাংলাদেশিদের জন্য ভারতের পর্যটক ভিস্যা ইস্যু বন্ধ থাকার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘ভারতীয় ভিসা বন্ধ। যে কারণে অনেকে চিকিৎসা নিতে ভারত যেতে পারছে না। আবার কলকাতার ব্যবসায়ীদের অবস্থা খারাপ, এটা ভারতের স্বার্থ কি না তাদের দেখতে হবে। বৃহত্তর স্বার্থে তারা যদি মনে করে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষতি হোক তবুও ভারতের সরকার অন্যটাতে…। ভারতের স্বার্থ তো আমি বুঝতে পারব না।’

সংখ্যালঘুদের নির্যাতন করা হচ্ছে দাবি করে বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী পাঠাতে ব্যবস্থা নিতে ভারত সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন জানিয়ে আজ দুপরে বিধানসভায় দেওয়া বক্তব্যে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেছেন, ‘জাতিসংঘের সঙ্গে এই বিষয়ে ভারত সরকার কথা বলুক, যাতে সেখানে তারা শান্তি বাহিনী পাঠাতে পারে। আমাদের এই বিষয়ে অনুরোধ রইল।’

তিনি বলেন, ‘বর্ডার সিকিউরিটি কেন্দ্রের আওতায় আমাদের এখতিয়ার বা দায়িত্বে নেই। আমরা হাউজের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানাচ্ছি প্রধানমন্ত্রী যেন সংসদে বাংলাদেশের বিষয়ে কথা বলেন। যদি প্রধানমন্ত্রীর অসুবিধা থাকে কোনো ব্যাপারে তাহলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী যেন সংসদে বিবৃতি দিয়ে জানান যে কেন্দ্রীয় সরকার এই বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

মমতা আরও বলেন, ‘আমার দ্বিতীয় পরামর্শ যদি এ জাতীয় ঘটনা (সহিংসতার) ঘটতে থাকে তাহলে আমরা আমাদের লোকেদের ফিরিয়ে আনব। সরকার উদ্যোগ নেবে। তারা ফিরে আসলে থাকার, খাওয়ার কোনো সমস্যা হবে না। কোনো ভারতীয়ের ওপর অত্যাচার হবে, সেটা আমরা হতে দিতে পারি না।’