অনলাইন ডেস্ক : ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে গত কয়েকদিনের বন্যায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২ জনে পৌঁছেছে। শুক্রবার (২৩ আগস্ট) রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বৃহস্পতিবার রাজ্যের শান্তিরবাজার জেলার দেবীপুরের অশ্বিনী ত্রিপুরা পাড়া এলাকা ভূমিধসে অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। এতে মৃতের সংখ্যা ২২ জনে পৌঁছেছে।

এদিকে স্থানীয় সাংবাদিক আয়ুব সরকার বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, “আমাদের বাড়িটা এলাকার সব থেকে উঁচু জায়গায়। সবাই তাই আমাদের বাড়িতেই আশ্রয় নিয়েছিল। কিন্তু আমাদের বাড়িতেও যে পানি ঢুকে যাবে, এটা কেউ ভাবতেও পারিনি।” গত তিনদিন ধরে সব ধরণের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, শুক্রবার সকালে মোবাইল চার্জ দিয়ে চালু করেছি। সাম্প্রতিক বন্যায় সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যেসব এলাকা, তার মধ্যে অন্যতম গোমতী জেলা। তার জেলা সদর শহর উদয়পুরে বসবাস করেন আয়ুব।

তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবার বিকাল তিনটা পর্যন্ত লাগাতার ৩৮ ঘণ্টা বৃষ্টি হয়েছে এখানে। সেই পানি তো ছিলই, তারপরে ডম্বুর ড্যামের পানি ঢুকতে শুরু করে। আবার জেলার কিছু অংশে মিজোরামের দিক থেকেও পানি চলে এসেছিল। সব মিলিয়ে যে অবস্থা, তা ভয়াবহ। মাত্র দুঘণ্টার মধ্যে আমাদের ঘরে চার ফুট পানি জমে গিয়েছিল। রাতে বাধ্য হয়েই সবাইকে নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে হয়”

মূলত গত পাঁচ দিন ধরে ভারী বর্ষণে বিপর্যস্ত ত্রিপুরার বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ অবস্থায় পৌঁছেছে। ভারতের আবহাওয়া দপ্তর (আইএমডি) পূর্বাভাসে জানিয়েছে, শিগগিরই এই বর্ষণ থামবে না; কারণ বঙ্গোপসাগরের উত্তরাংশে একটি নিম্নচাপ তৈরির পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার (২৪ আগস্ট) থেকে সেটি গঠিত হওয়া শুরু করবে।

রাজ্য প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রবল বর্ষণ ও বন্যার কারণে গত ৫ দিনে ত্রিপুরার বিভিন্ন এলাকায় মোট ২ হাজার ৩২টি ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন রাজ্যের বিভিন্ন এলাকার অন্তত ১৭ লাখ মানুষ। তাদের মধ্যে বিভিন্ন ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় ৬৫ হাজার ৪০০ জন।

রাজ্যের অনেক এলাকা থেকে পানি নামতে শুরু করলেও ভারতীয় আবহাওয়া বিজ্ঞান দপ্তর ত্রিপুরার চারটি জেলায় আগামী তিনদিন অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছিল সকালে। তবে দুপুরে নতুন উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণ করে সতর্কতার মাত্রা কমিয়ে দেয়া হয়েছে। এখন বলা হচ্ছে দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার দুটি এলাকায় আগামী দুদিন ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকলেও রাজ্যের অন্য কিছু এলাকায় শুধুই বজ্র-বিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা দেখছে তারা।