অনলাইন ডেস্ক : কথায় আছে- ‘ব্রিটিশ রাজ্যে সূর্য কখনো অস্ত যায় না।’ কোন না কোন প্রান্তে জেগে থেকে আলো ছড়ায়। সেকালের ঔপনিবেশিক শাসন এখন কার্যত নেই। তবে পৃথিবীর মানচিত্রে এখনও গুরুত্বপূর্ণ যুক্তরাজ্য। একসময় প্রায় গোটা পৃথিবী শাসন করা দেশটিতে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়ে গেল জাতীয় নির্বাচন। ঘটেছে ক্ষমতার পালাবদল, ব্রিটিশরা পেয়েছেন নতুন প্রধানমন্ত্রী। মন্ত্রিপরিষদ শাসিত দেশটির প্রধানমন্ত্রীরা বিশ্ব রাজনীতিতে রাখেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। অনেকের মনে প্রশ্ন, কত টাকা বেতন পান একজন ব্রিটিশ সরকারপ্রধান?

যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের তথ্য অনুসারে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বার্ষিক বেতন ১ লাখ ৭২ হাজার ১৫৩ পাউন্ড। এর মধ্যে ৮০ হাজার ৮০৭ পাউন্ড পান প্রধানমন্ত্রীর সম্মানী ভাতা বাবদ। বাকি ৯১ হাজার ৩৪৬ হাজার পাউন্ড পান এমপি হিসেবে।

তবে মোট পরিমাণের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর পকেটে ঢুকবে মাত্র ৭৫ হাজার ৪৪০ পাউন্ড। হাউস অফ কমন্সের ওয়েবসাইট অনুসারে, যুক্তরাজ্যের অন্যান্য সাধারণ ব্যক্তির মতো সংসদ সদস্যদেরও একই পরিমাণ কর ও জাতীয় বীমা দিতে হয়।

যুক্তরাজ্যে একই ধরনের দায়িত্বের অন্যান্য পেশার তুলনায় একজন প্রধানমন্ত্রীকে খুব বেশি বেতন-ভাতা দেওয়া হয় না। বিবিসি নিউজের একটি পুরোনো প্রতিবেদন অনুসারে, দেশটির পূর্ববর্তী একাধিক প্রধানমন্ত্রী রয়েছেন, যাদের ঋণের বোঝা বইতে হয়েছে। কেউ কেউ সরকারি সহায়তা নিতেও বাধ্য হয়েছেন।

দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েক শতাব্দী ধরে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীদের জীবনযাত্রার মান উল্লেখযোগ্যভাবে পতন হয়েছে। আঠারো শতকে ব্রিটিশ ট্রেজারির প্রথম লর্ড হিসেবে বার্ষিক ১০ হাজার ৫০০ পাউন্ড পেতেন উইলিয়াম পিট। বিশ শতকের শুরুর দিকে একজন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বার্ষিক পাঁচ হাজার পাউন্ড বেতন পেতেন, যা আজকের বিনিময় হার অনুসারে প্রায় দেড় মিলিয়ন পাউন্ডের সমান। এছাড়া ১৯৩৭ সাল নাগাদ প্রধানমন্ত্রীর বার্ষিক বেতন ছিল বর্তমান সময়ের প্রায় ৬ লাখ পাউন্ডের সমান।

মার্গারেট থ্যাচারের পদত্যাগের পর পাবলিক ডিউটিকস্টস অ্যালাউন্স (পিডিসিএ) প্রতিষ্ঠা করা হয়। পিডিসিএ থেকে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীদের প্রয়োজনীয় অফিস খরচ ও জনজীবনে তাদের বিশেষ অবস্থানের জন্য অন্যান্য খরচ বাবদ বার্ষিক ১ লাখ ১৫ হাজার পাউন্ড অর্থ দাবি করা করা হয়। বিশ্লেষকরা মনে করেন, একজন প্রাক্তন সরকারপ্রধানের জীবনধারণের জন্য এ পরিমাণ অর্থ দাবি করা যেতেই পারে।

প্রসঙ্গত, যুক্তরাজ্যের এবারের সাধারণ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভদের হারিয়ে ভূমিধস জয় পেয়েছে লেবার পার্টি। এতে টোরিদের ১৪ বছরের শাসনের অবসান ঘটেছে। পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউজ অব কমন্সের ৬৫০ আসনের ৪১২টিতেই জয় পেয়েছে বামপন্থীরা। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে ইতোমধ্যেই মন্ত্রিসভা গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে দলটি। এতে প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন লেবার নেতা কিয়ের স্টারমার।