অনলাইন ডেস্ক : ব্যবধান ৮ মাসের। ২০২৩-এর সেপ্টেম্বরের পর ২০২৪-এর মে। একই রকম বক্তব্য, একই দাবি। পার্থক্য কেবল একটাই। কানাডায় খালিস্তানি জঙ্গিনেতা হরদীপ সিং নিজ্জরকে গুলি করে খুনের ঘটনায় ৮ মাস আগে ভারতের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। একই অভিযোগ এ বার, ৮ মাস পর আনলেন কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি-ও। বরং, এ বার ভারতের বিরুদ্ধে কানাডার অভিযোগ যেন আরও সরাসরি ও পরিষ্কার।
মঙ্গলবার অটোয়ায় সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময়ে জোলির বক্তব্য, ‘কানাডার অবস্থান বরাবর স্পষ্ট। আমাদের কাজ হলো, ক্যানাডিয়ানদের সুরক্ষিত রাখা এবং কানাডার মাটিতে ভারতীয় এজেন্টদের হাতে এক ক্যানাডিয়ান খুন হয়েছেন- এই অভিযোগকে আমরা সমর্থন করি।’ গত শুক্রবার, ৩ মে আলবার্টার এডমন্টন শহর থেকে ক্যানাডিয়ান পুলিশ নিজ্জর খুনে জড়িত সন্দেহে তিন ভারতীয়কে গ্রেপ্তার করে। ওই ঘটনাক প্রেক্ষিতে করা সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মঙ্গলবার ওই মন্তব্য করেছেন কানাডার বিদেশমন্ত্রী।
আবার মঙ্গলবারই কানাডার ভারতীয় হাই কমিশনার সঞ্জয়কুমার ভার্মা কানাডায় বসবাস করা খালিস্তানপন্থী শক্তিদের জন্য ভারতের বিপদের কথা উল্লেখ করে সতর্ক করেছেন। ভার্মার বক্তব্য, ‘এ ক্ষেত্রে দু’টো রেড লাইন রয়েছে।’ মন্ট্রিয়াল কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্স-এ উপস্থিত সঞ্জয় বলেন, ‘আমার চিন্তা হলো, ভারতের জাতীয় সুরক্ষা নিয়ে। যার বিপদ আসছে কানাডা থেকে। বিপদের মূলে অনেকটাই কানাডার নাগরিকরা। আমি এই দু’টো রেড লাইনের কথা বলছি।’ ভারতীয় হাই কমিশনারের ব্যাখ্যায়, ‘ওই ক্যানাডিয়ানরা একটা সময়ে ভারতের নাগরিক ছিলেন। এখন তারা ভারতের অখণ্ডতার দিকে অশুভ দৃষ্টি দিচ্ছেন।’
সব মিলিয়ে, কূটনীতিক মহলের একাংশের আশঙ্কা, এতে নয়াদিল্লি ও অটোয়ার মধ্যে টেনশন আরও বাড়বে। গত বছর ১৮ জুন নিজ্জরকে ব্রিটিশ কলম্বিয়ার সারে-তে খুন করা হয়। তার পর সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো কানাডার পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে দাবি করেছিলেন, নিজ্জর খুনে ভারতীয় এজেন্টদের হাত রয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে, সেই অভিযোগের বিশ্বাসযোগ্যতা রয়েছে। ট্রুডোর ওই বক্তব্যকে নয়াদিল্লি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও হাস্যকর বলে উড়িয়ে দেয়।
তবে নিজ্জর খুনের তদন্তে তিন ভারতীয়ের গ্রেপ্তারি নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে কানাডার বিদেশমন্ত্রী বলেন, ‘রয়্যাল ক্যানাডিয়ান মাউন্টেড ঘটনার পুলিশ তদন্ত করছে। এই ব্যাপারে আমি কোনও মন্তব্য করব না। আমাদের সরকারের অন্য কেউও কিছু বলবেন না।’ ভারতের সঙ্গে কানাডার সম্পর্ক নিয়ে জোলির বক্তব্য, ‘আমি মনে করি, কূটনীতি ব্যাপারটা নিভৃতেই থাকাই উচিত। তবে কানাডা আগে ক্যানাডিয়ানদের সুরক্ষা দেবে, সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবে এবং দেশে আইনের শাসন নিশ্চিত করবে।’