নিজস্ব প্রতিবেদক : গত ২১ এপ্রিল রবিবার, বাংলাদেশ এস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি এবং রাজশাহী এস্ট্রোনমি সেন্টার এর যৌথ উদ্যোগে রাজশাহী শহরের টি-বাঁধ এ ‘ডেভিল ধূমকেতু’ দেখতে একটি আকাশ পর্যবেক্ষণ ক্যাম্প এর আয়োজন করা হয়। সবার জন্য উন্মুক্ত এই আকাশ পর্যবেক্ষণ ক্যাম্পের আয়োজন চলে সূর্যাস্ত থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।
উল্লেখ্য, ধূমকেতু’টির আসল নাম 12P/Pons-Brooks হলেও, এটি ‘ডেভিল ধূমকেতু’ নামে পরিচিত। এর প্রধানতম কারণ হচ্ছে, এ ধূমকেতু’র নিউক্লিয়াসের অগ্ন্যুৎপাতের ফলে এটিকে দুটি শৃঙ্গের মতো দেখায় । অতি স¤প্রতি, স্টার ওয়ারস ভক্তরা এটিকে ‘মিলেনিয়াম ফ্যালকন’ ডাকনাম দিয়েছে।
প্রতি ৭১ বছর পর সবুজ রঙের ‘ডেভিল ধূমকেতু’ আকাশে ফিরে আসে। এর নিউক্লিয়াসের ব্যাস ৩৪ কিলোমিটার এবং একে ‘হ্যালির ধূমকেতু’র সাথে তুলনা করা হয়েছে কারণ হ্যালির ধূমকেতুটি প্রায় ৭৬ বছর পর পর দেখা যায় এবং ১৯৮৬ সালে শেষবার দেখা তাকে দেখা গিয়েছে।
‘ডেভিল ধূমকেতু’ সূর্যের বরফের কোরের কাছাকাছি আসার সাথে সাথে গ্যাসের ট্রেইলটি আরও গরম হয়ে ওঠে এবং এটিকে আরও দৃশ্যমান করে তোলে। এটি দিগন্তের ঠিক উপরে ২১ এপ্রিল তার উজ্জ্বলতম অবস্থানে ছিল। এটিকে ‘মাদার অফ ড্রাগন’ও বলা হয়েছে কারণ এটি ক্রায়োভোলক্যানিক – এক ধরনের আগ্নেয়গিরি যা মূল থেকে জলীয় বাষ্প এবং অন্যান্য উপাদানকে বিস্ফোরিত করে।
চলচ্চিত্র নির্মাতা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আহসান কবীর লিটন রাজশাহীর যুব সমাজকে বিজ্ঞানমুখী করার জন্য গত বছর রাজশাহী এস্ট্রোনমি সেন্টার গঠন করেন। এ সেন্টারে বর্তমানে একটি আধুনিক টেলিস্কোপ রয়েছে, যা বেশ কিছু অনুসন্ধিৎস্যু তরুণ তরুণীর মধ্যে আকাশ পর্যবেক্ষণের আগ্রহ বাড়িয়ে দিয়েছে। রাজশাহী এস্ট্রোনমি সেন্টার গঠন এবং এর কাজ সম্পর্কে আহসান কবীর লিটন জানান, এমন এক সংগঠন তৈরির অভাব তিনি বোধ করেছেন তাঁর আশেপাশের কিছু উদ্যোগী ও জ্ঞানপিপাসু তরুণ তরুণীকে দেখে, যারা প্রতিনিয়ত নিজেদের জ্ঞানের সীমাকে বাড়াতে চায় এবং অজানাকে জানতে চায়। তিনি বলেন, এই সেন্টারের সদস্যরা প্রতি মাসে নিয়মিত জোতির্বিজ্ঞানের মত একটি কঠিন ও দূর্বোধ্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করে এবং মহাবিশ্ব সম্পর্কে নিজেদের জানার আগ্রহকে জাগিয়ে তুলে। তিনি আরও বলেন, এর ফলে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, এই সেন্টারের সাথে সম্পৃক্ত তরুণ-তরুণীরা নিজেদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় পূর্বের চেয়ে আরও বেশি ভালো করার সাথে সাথে নিজেদেরকে নতুন বিশ্বের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলছে। আর এই গড়ে তোলা অনেকটা ‘কুনোর ব্যাঙ’ থেকে নিজেদেরকে এক বিশাল জগতে উম্মোচিত করার মত ব্যাপার। আহসান কবীর লিটন আশাবাদ ব্যক্ত করেন, আগামীতে বিপুল সংখ্যক তরুণ সমাজ জোতির্বিজ্ঞানের মত বিষয় নিয়ে আগ্রহী হয়ে উঠবে।