অনলাইন ডেস্ক : কানাডায় খালিস্তানিদের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের মধ্যে ক্রমে হামলা বাড়ছে সেখানকার হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর। এতদিন, নিশানায় ছিল হিন্দু মন্দিরগুলি। এবার, ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার প্রদেশের সারেতে, গুলি চলল এক বিশিষ্ট হিন্দু ব্যবসায়ীর বাড়িতে। তদন্ত শুরু করেছে কানাডার পুলিশ। তারা জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটে ২৭ ডিসেম্বর সকাল আটটা নাগাদ। সারে রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ জানিয়েছে, কমপক্ষে ১৪ রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়, এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সতীশ কুমারের বড় ছেলের বাড়ি লক্ষ্য করে। গুলিতে কেউ আহত হয়নি ঠিকই। তবে, কী হতে পারত, তার ছাপ রয়ে গিয়েছে বাড়ির দেওয়ালে। দেওয়াল জুড়ে তৈরি হয়েছে বুলেটের ছিদ্র। প্রসঙ্গত, ব্যবসা পরিচালনার পাশাপাশি সতীশ কুমার সারে লক্ষ্মী নারায়ণ মন্দিরের সভাপতিও।
সারে আরসিএমপি জেনারেল ইনভেস্টিগেশন ইউনিট এই ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছে। ঘটনার পর, কয়েক ঘন্টা ধরে ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন প্রমাণ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলেছে। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজগুলি সংগ্রহ করেছে। তবে, এই হামলা কারা চালাল, এর পিছনে তাদের উদ্দেশ্য কী ছিল – এই সব প্রশ্নের উত্তর তারা এখনও পায়নি। এর আগে, সারের লক্ষ্মী নারায়ণ মন্দিরে ভারত-বিরোধী গ্রাফিতি স্প্রে করা হয়েছিল। এছাড়া, ব্রাম্পটন এবং গ্রেটার টরন্টো এলাকাতেও হিন্দু মন্দিরে ভাঙচুর করা হয়েছিল।
সম্প্রতি, কানাডায় এক খালিস্তানি জঙ্গি নেতার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ভারত ও কানাডার মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ব্যাপক অবনতি হয়েছে। ওই জঙ্গির হত্যার পিছনে ভারতের হাত আছে বলে অভিযোগ করেছেন সেই দেশের প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এরপরই, কানাডায় বসবাসকারী আরেক খালিস্তানি জঙ্গি নেতা, গুরপতবন্ত সিং পান্নুন, সেই দেশের হিন্দু সম্প্রদায়কে সরাসরি হুমকি দিয়েছিল। তাদের সেই দেশ ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিস। পান্নুনের সেই হুমকির পর থেকেই, কানাডা জুড়ে একের পর এক হিন্দু মন্দিরে হামলা হয়েছে।
কানাডার হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা, এই ঘটনাগুলিকে ‘হেট ক্রাইম’, অর্থাৎ, ঘৃণামূলক অপরাধ হিসাবে তদন্ত করার জন্য অনুরোধ করেছেন। মন্দিরগুলির নিরাপত্তা সুনিশ্চি করারও অনুরোধ করা হয়েছে। তবে, কানাডা সরকার শুধুমাত্র হামলাগুলির নিন্দা করা এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দেয়ার মধ্যে আটকে রয়েছে। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনাগুলিতে জড়িতদের একজনকেও আটক করা হয়নি। তাই, হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্কও রয়ে গিয়েছে।