সোনা কান্তি বড়ুয়া : বৌদ্ধ ধর্মে বৌদ্ধধর্ম (‘ধম্ম’) মানে হল চিকিৎসা করা এবং ‘বুদ্ধ’ মানে হল SUPREMELY ALL ENLIGHTENED ONE এবং চিকিৎসা প্রদানকারী চিকিৎসক। বাস্তবিক বৌদ্ধ ইতিহাসকে বিলুপ্ত করার জন্য ব্রাহ্মণেরা ত্রিপিটকের খুদ্দক নিকায়ের গ্রন্থ ‘ধম্মপদ’ এর ২০৪ সংখ্যক গাথায় বর্ণিত হয়েছে-‘আরোগ্য পরমা লাভা।’ অর্থাৎ নীরোগ জীবনের মত উত্তম কোন উপহার আর নাই। বিনয় পিটকের মহাবর্গে বর্ণিত হয়েছে! VENERABLE ড. বরসম্বোধি ভিক্ষু লিখেছেন, “বৌদ্ধ চিকিৎসষর ইতিহাস ভারতে এবং হিমালয়ান দেশসমূহে ও পূজনীয় গৌতমবুদ্ধকে ‘ভৈষজ্য গুরু’ (MEDICINE BUDDHA), ‘বৈদ্যরাজ’ (KING OF HEALING), ‘ধন্বন্তরী’ (GOD OF HEALING) ইত্যাদি আলাদা আলাদা পরিচয়ে জানা যায়। শুশ্রূত সংহিতা (MEDICL SCIENCE) অনুসারে ‘ধনবন’ মানে হল চিকিৎসা করা এবং ‘ধন্বন্তরী’ মানে হল চিকিৎসা প্রদানকারী চিকিৎসক।’ বুদ্ধের ধর্মে (ধম্মের) মূল সিদ্ধান্ত ইহাই যে, সমস্ত দুঃখ এবং রোগের কোন না কোন কারণ অবশ্যই রয়েছে এবং কারণ ব্যতীত কোন পরিণাম হতে পারে না। এজন্য বুদ্ধ বলেছেন যে, যদি আপনি দুঃখ বা রোগ সমূহ দূর করতে ইচ্ছা করেন, তাহলে সর্ব প্রথমে কারণ সমূহকে অনুসন্ধান করতে হবে এবং অতঃপর কারণসমূহ নষ্ট করে দিতে হবে। তাতে দুঃখ তথা রোগসমূহ নষ্ট হয়ে যাবে এবং আপনার জীবন সুখ-শান্তিময় হয়ে উঠবে।
হিন্দুরাজনীতি গৌতমবুদ্ধকে হিন্দুধর্মের নবম অবতার করে হিন্দু বৌদ্ধ হল এবং “হিন্দুধর্মের পরিবর্তন মানে নাকি হিন্দুধর্মের বিপন্নতা! দেশদ্রোহ” স¤প্রতি আনন্দবাজার পত্রিকায় (দীপঙ্কর ভট্টাচার্য ৬ নভেম্বর ২০২২) কেন? বর্তমান ব্রাহ্মণেরা অন্যান্য বৌদ্ধ CIVILIZATION এবং HERITAGE কে ও আত্মসাৎ করে এর সাথে ব্রাহ্মণ্য মসলা মিশ্রিত করে নতুন কাহিনী বানিয়েছে। হিন্দুরাজনীতি বৌদ্ধদেরকে হত্যা করে বৌদ্ধ CIVILIZATION এবং HERITAGE কে কাল্পনিক হিন্দু পুরাণের সমুদ্র মন্থনের কাহিনী লিখে সেখানে কাল্পনিক হিন্দুধর্মের দেব – দেবী, এবং ‘ভৈষজ্য গুরু আয়ুর্বেদাচার্য ধন্বন্তরি নামে এসেছে।
হিন্দুরাজনীতির ব্রাহ্মণেরা ভারতে বৌদ্ধগণকে হিন্দু বানষনোর ভয়ঙ্কর ষড়য়ন্ত্র এবং হিন্দু জঙ্গিবাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে স্বাধীন বিবেকের ঊর্ধ্বে গিয়ে বৌদ্ধ গ্রন্থসমূহকে নিশ্চিহ্ন করে অন্ধভাবে কাল্পনিক হিন্দু ধর্মের ধর্মীয় অপব্যাখ্যা সাধারণ মানুষের ওপর চাপিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করা।
সম্রাট অশোককে বৌদ্ধধর্মের কনস্ট্যান্টাইন বলা হয়! কলিঙ্গ যুদ্ধের পর ন্যাগ্রোধ শ্রামণের দ্বারা বুদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেন এবং অহিংসা নীতি অনুসরণ করে চন্ডাশোক থেকে ধর্মাশোক নামে পরিচিত হয়। তিনি ৮৪ হাজার ধর্মচৈত্য নির্মাণ করেন। তাছাড়া, তিনি অশোকারাম নামক মহাবিহার নির্মাণ করেন। সম্রাট অশোকের তাম্রশাসনে তার নামে “দেব নামপ্রিয়” উপাধি পাওয়া যায়। বৌদ্ধ ধর্মের কনস্ট্যান্টাইনসম্রাট অশোক! পিতা: মহারাজ বিন্দুসার এবং মাতা: সুভদ্রাঙ্গী! অসন্ধিমিত্রা, দেবী, কারুবকী, পদ্মাবতী, তিষ্যরক্ষা। সন্তান: মহেন্দ্র, সংঘমিত্রা, তিবল, কুণাল, চারুমতী। কেননা তার শাসন আমলে বৌদ্ধ ধর্ম রাজধর্মের স্বীকৃতি পায়। প্রথম দিকে তিনি অত্যন্ত রাগী ও খুবই নিষ্ঠুর ছিলেন যার কারণে তিনি চণ্ডাশোক নামে পরিচিতি লাভ করেন।
হিন্দুরাজনীতি বুদ্ধের দেহকে দেখে কিন্তু বুদ্ধের উপদেশ মেনে চলে না এবং বুদ্ধের উপদেশ ছিল, “যে আমার দেহকে দেখে সে আমাকে দেখে না, যে আমার উপদেশ মেনে চলে সে আমাকে দেখে ও মেনে চলে। আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো চর্যাপদে আমরা দেখতে পাই সেন আমলে সর্বগ্রাসী হিন্দু রাজনীতি গায়ের জোরে উচ্চবর্ণের হিন্দু শাসকগণ বৌদ্ধগণকে দলিত বানিয়েছিলেন (দেশ, ৪ মে ২০০১ কলিকাতা পৃষ্ঠা ১২)! মানুষের মনুষ্যত্ব কেড়ে নেওয়াটাই হিন্দু রাজনীতি এবং দশরথ জাতককে হিন্দুপন্ডিতগণ বদলায়ে রামায়ণ রচনা করার পর উক্ত রামায়নের অযোধ্যা কান্ডের বত্রিশ নম্বর শ্লোকে গৌতমবুদ্ধকে চোর এবং বৌদ্ধদেরকে নাস্তিক বানিয়েছে। উদাহরন স্বরুপ হিন্দু রাজনীতির অন্যায়ের বিরুদ্ধে বৌদ্ধদের মুক্তিযুদ্ধ এবং গৌতমবুদ্ধের ধ্যানভ‚মি বুদ্ধগয়া কে হিন্দুরাজনীতি আজ দখল করে আছে। আমার দেশ আমার পরম তীর্থভ‚মি! কোন হিন্দু মন্দিরে সকাল বিকাল বুদ্ধ পূজা না করে ও হিন্দুরাজনীতি গৌতমবুদ্ধকে হিন্দুধর্মের নবম অবতার করে হিন্দু বৌদ্ধ হল এবং “হিন্দুধর্মের পরিবর্তন মানে নাকি হিন্দুধর্মের বিপন্নতা! দেশদ্রোহ” স¤প্রতি আনন্দবাজার পত্রিকায় (দীপঙ্কর ভট্টাচার্য ৬ নভেম্বর ২০২২) হিন্দু রাজনীতির অন্যায় কেন?
মানবতার কল্যাণে নিবেদিত বাংলাদেশ এবং বাঙালি সংস্কৃতির মূল কথা হলো বিশ্বমানবতা, অসা¤প্রদায়িকতা ও স¤প্রীতি। ‘আজি ভুসুকু বঙ্গালী ভইলী ভুসুকু আজ আলোকপ্রাপ্ত সিদ্ধপুরুষ বা বাঙালি হলেন” থেকে ঐতিহাসিক’ শব্দের অভ‚তপূর্ব সংযোজন হয়েছিল। স¤প্রতি টরন্টোর বাংলাদেশী সাপ্তাহিক আজকাল (১১ আগষ্ট, ২০০৯) পত্রিকার ৩০ পৃষ্ঠায় ইংরেজি সংবাদে আমরা পড়েছি, বৌদ্ধধর্ম পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্মের পুরস্কার লাভ করেছেন।” এবং আগামীর বাংলাদেশ হবে মানবতার কল্যাণে নিবেদিত একটি দেশ। জনষব মহসিনুল হক: (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ, চাঁদপুর, SAMAKAL, 13 NOVEMBER 2023), লিখেছেন, “আমরা চাই বাংলাদেশের তরুণদের একদিকে থাকবে বিশ্বাস, আরেকদিকে থাকবে যুক্তি ও বিবেক। ধর্মের জিগির তুলে মুক্তচিন্তা বা বিশ্বাসকে ভুল পথে প্রবাহিত করে স্বার্থোদ্ধারে দেশ-জাতির জন্য ক্ষতিকর কাজে তাদের কেউ ব্যবহার করতে পারবে না। ধর্ম হবে এক আলোকবর্তিকা। সমাজে ন্যায়, সুবিচার ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় মানুষকে উজ্জীবিত করে তোলার মূলমন্ত্র হবে এই ধর্ম। সবার ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক জীবন হবে নৈতিকতা, মূল্যবোধ, সংস্কার ও আদর্শ দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত। সেখানে কেউ কারও বিশ্বাসের প্রতি অবজ্ঞা হেতু কুৎসিত আক্রমণ করবে না।
এই প্রজন্ম স্বপ্ন দেখে, আগামীর বাংলাদেশ হবে মানবতার কল্যাণে নিবেদিত একটি দেশ। এই বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিকের মধ্যে থাকবে গভীর দেশপ্রেম। তারা হবে এই দেশ ও জাতির সম্পদের রক্ষক, সৎ ও আদর্শ নাগরিক। সেই বাংলাদেশে শুধু শাস্তির ভয়ে নয়, বরং আত্মার তাগিদেই মানুষ যাবতীয় অপরাধ থেকে নিবৃত্ত থাকবে। প্রতিটি জীবন ও সম্পদের থাকবে পূর্ণ নিরাপত্তা। এ দেশে নারীকে কেউ কখনও অসম্মান করার কথা কল্পনাতেও ভাববে না। স্কুলফেরত ছোট্ট শিশুটি সড়ক কিংবা ফুটপাত ধরে নিশ্চিন্তে পথ হেঁটে পৌঁছে যাবে নিজ বাড়িতে।
এই প্রজন্ম এখন মনে-প্রাণে বিশ্বাস করে, জঙ্গিবাদী গোষ্ঠী ও তাদের সমর্থকরা হিংসা ও নিপীড়নের মাধ্যমে যে সমাজ গড়ে তুলতে চায়, সেখানে আমাদের মানবিক বোধ বিপন্ন হতে বাধ্য। বিচারক জগন্নাথ-সোহেলের মৃত্যু দিবসে এই প্রজন্মের একজন প্রতিনিধি হয়ে স্পষ্ট বলতে চাই, আমরা বাংলাদেশকে একটি শক্তিশালী, প্রগতিশীল, সুকুমারবৃত্তিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আমরা চাই বাংলাদেশ হবে সারাবিশ্বের জ্ঞান-বিজ্ঞানের চিন্তা-চর্চার প্রাণকেন্দ্র। আগামীর বাংলাদেশ হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আলোকিত বাংলাদেশ।
তবে জঙ্গিবাদীদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমাজ গড়ে তোলার কাজটি সহজ নয়। এ জন্য আমাদের আরও অনেক পথ অতিক্রম করতে হবে। আমরা যখন আত্মত্যাগ করতে শিখেছি; যখন আমাদের রয়েছে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের স্রোতধারা; যখন আমাদের সামনে রয়েছে জগন্নাথ-সোহেলের রক্তের ঋণ, তখন আমাদের এই প্রজন্মকে কেউ বিপথে নিয়ে যেতে পারবে না। আমরা এসব শহীদের রক্ত বৃথা যেতে দিতে পারি না। মেনে নিতে পারি না পরাজয়।”
VENERABLE ড. বরসম্বোধি ভিক্ষু লিখেছেন “হিন্দুরাজনীতির ব্রাহ্মণেরা মানবতার কল্যাণে নিবেদিত বুদ্ধের নষম, সম্রাট অশোকের নাম, এবং বৌদ্ধ গ্রন্থসমূহকে নিশ্চিহ্ন করে কাল্পনিক হিন্দু ধর্মের ধন্বন্তরী ব্রাহ্মণ চিকিৎসক আয়ুর্বেদাচার্য ধন্বন্তরি করেছে। হিন্দুরাজনীতির ধন্বন্তরীর কোন ঐতিহাসিক প্রমাণ মওজুদ নাই। বাস্তবে, তথাগত বুদ্ধকেই ব্রাহ্মণেরা চিকিৎসার দেবতা ধন্বন্তরীরূপে দেখিয়েছে এবং বুদ্ধমাতা মহামায়াকে সম্পন্নতার দেবী ল²ীরূপে সামনে নিয়ে এসেছে। ইজিপ্ট, রোমান এবং গ্রীক পরম্পরায় বুদ্ধকে ‘থেরাপুটী, এস্কেলিয়স, হামিজ’ ইত্যাদি পৃথক পৃথক নামের দেবতা বলে জেনেছেন এবং বুদ্ধের ধম্মকে ‘চিকিৎসার লাঠি (Rod of Caduceus, Rod of Asclepius, Rod of Hermes, Rod of Therapeutic) বলা হয়েছে। অনুরুপভাবে ভারতে এবং হিমালয়ান দেশসমূহেও বুদ্ধকে ‘ভৈষজ্য গুরু’ (Medicine Buddha), ‘বৈদ্যরাজ’ (King of Healing), ‘ধন্বন্তরী’ (God of Healing) ইত্যাদি আলাদা আলাদা পরিচয়ে জানা যায়।
ভারতে ‘বৌদ্ধদের বহিৃমান জীবন’ করতে হিন্দু রামায়নের অযোধ্যা কান্ডের বত্রিশ ও ৩ নম্বর শ্লোকে গৌতমবুদ্ধকে চোর এবং বৌদ্ধদেরকে নাস্তিক বানিয়ে কাল্পনিক পুরাণের সমুদ্র মন্থনের কাহিনী লিখেছে! বৌদ্ধধর্মকে ধ্বংস করার নাম বৈদিক হিন্দুধর্ম! হিন্দু রাষ্ট্রশক্তি বৌদ্ধ ত্রিপিটককে নিশ্চিহ্ন করে অশোকের বৌদ্ধ ভারতকে হিন্দু ভারত করেছেন। এবং সেখানে হিন্দু রামায়নের অযোধ্যা কান্ডের বত্রিশ নম্বর শ্লোকে গৌতমবুদ্ধকে চোর এবং বৌদ্ধদেরকে নাস্তিক বানিয়েছে।
বৌদ্ধধর্মকে ধ্বংস করার নাম বৈদিক হিন্দুধর্ম! হিন্দু জঙ্গিবাদ গৌতমবুদ্ধকে হিন্দু ধর্মের নবম অবতার বানিয়ে বৌদ্ধদেরকে হত্যা করে কাল্পনিক পুরাণের সমুদ্র মন্থনের কাহিনী লিখে সেখানে কাল্পনিক আয়ুর্বেদাচার্য ধন্বন্তরি এসেছে। জাতক কথায় যিনি কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন ঋষি তাঁরই নাম মহাভারতের লেখক ব্যাসকে দিয়েছেন। হিন্দু জঙ্গিবাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে স্বাধীন বিবেকের ঊর্ধ্বে গিয়ে অন্ধভাবে ধর্মীয় অপব্যাখ্যা সাধারণ মানুষের ওপর চাপিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করা। ভারতে বৌদ্ধগণকে হিন্দু বানানোর ভয়ঙ্কর ষড়য়ন্ত্র! হিন্দুরাজনীতি বৌদ্ধ ধর্মচক্রকে বদলায়ে অশোকচক্র বানিয়েছে এবং সম্রাট অশোকের বৌদ্ধ ভারতকে হিন্দু ভারত করেছেন। হিন্দুরাজনীতির গভীর চক্রান্তে “জগন্নাথ বুদ্ধ পুরাণ” শীর্ষক তিন হাজার পৃষ্ঠার বই লিখে উড়িষ্যায় রথ যাত্রা এবং পুরীর বৌদ্ধ জগন্নাথ মন্দির নাম বদলিয়ে দখল করেছে।
প্রাচীন বাংলাদেশে ঐতিহ্যবাহী পুণ্যতীর্থ সার্বজনীন মহাস্থানের পুন্ড্রবর্দ্ধনে (বগুড়া) এবং পাহারপুরে (রাজশাহীর সোমপুরী বিহার) বসে গৌতমবুদ্ধ দিনের পর দিন বাঙালি সমাজকে দান, শীল, ভাবনা এবং সুন্দও ভাবে জীবন যাপনের শিক্ষা দিয়েছেন এবং স্মৃতির মনিমালায় পোড়ামাটির শিল্পকর্মে “গৌতমবুদ্ধ ধর্মচক্র মূদ্রায়” আজ ও বাংলাদেশে বিরাজমান। মানবতার কল্যাণে নিবেদিত বাংলাদেশে ভৈষজ্য গুরু (চিকিৎসক) গৌতম বুদ্ধ!
হিন্দু রাষ্ট্রশক্তি বৌদ্ধ ত্রিপিটককে নিশ্চিহ্ন করে হিন্দু ধর্মকে মহিমান্বিত করতে বৌদ্ধ জাতকের গল্পকে চুরি করে (১) রামায়ন (২) মহাভারত (৩) বেতাল পঞ্চবিংশতি (পঞ্চতন্ত্র, (৫) HITOPADESA এবং (৬) কথাসরিৎসাগর রচনা করেছেন (WEEKLY BARTAMAN MAGAZINE EDITORIAL page 4, dated 2 January 2016)! সম্রাট অশোকের অশোকচক্র খচিত বর্তমান ভারতের জাতীয় পতাকা বিরাজমান।
ডাক্তার কে যমানাদাসের লেখা ‘তিরুপতি বালাজি ওয়াজ এ বুদ্ধিষ্ঠ স্রাইন’ শীর্ষক মহাগ্রন্থে লেখা আছে, “আসলে এটি একটি প্রাচীন বুদ্ধমূর্তি। ভারতবর্ষে বৌদ্ধধর্ম পতনের সময় হিন্দুরা স্রেফ গায়ের জোরে বিহারটিকে দখল করে নেয়। VENERABLE ড. বরসম্বোধি ভিক্ষু লিখেছেন – “ভিক্ষুদেরকে আলেক্সজান্দ্রিয়ায় থের শব্দ হতে থেরাপুটী বলে জানা যেত। থেরাপুটী মানে হল বৈদ্য বা চিকিৎসক। থেরাপুটী শব্দ হতে থেরাপি (Therapy), থেরাপ্যুটিক্স, থিওরী’র মত শব্দসমূহ গঠিত হয়েছে। চরক সংহিতার লেখক ছিলেন বৌদ্ধ ভিক্ষু চরক। তিনি ছিলেন খৃষ্টীয় প্রথম শতকে কুষাণ সম্রাট কনিষ্কের রাজবৈদ্য। শুশ্রূত সংহিতার লেখক ছিলেন প্রখ্যাত বৌদ্ধ ভিক্ষু দার্শনিক নাগার্জুন। শুশ্রূত সংহিতায় শৈল্য চিকিৎসার জন্য ‘ধনবন’ শব্দ রয়েছে (Susruta Samhita, P-116).
সমুদ্রমন্থন দ্বারা ধন্বন্তরী, ল²ী এবং অন্য রতেœর উদ্ভব হয়েছে বলে যে এরকম গল্প পুরাণসমূহে বর্ণিত হয়েছে, তা হল কেবল কপোল কল্পনা। পুরাণ সমূহের কাল্পনিক কাহিনী লিখে ব্রাহ্মণেরা মূল বৌদ্ধ ইতিহাস, ঐতিহ্য, প্রতীক এবং পরম্পরা সমূহের ব্রাহ্মণীকরণ করে নিয়েছে। চিকিৎসার বাস্তবিক ইতিহাস হল বৌদ্ধ ইতিহাস এবং সকল মহান চিকিৎসক ছিলেন বৌদ্ধ ভিক্ষু ও বৌদ্ধানুসারী। তথাগত বুদ্ধ নিজেই ছিলেন মহান চিকিৎসক (মহাবর্গ, ১.৮)। কিন্তু এরূপ বাস্তবিক বৌদ্ধ ইতিহাসকে বিলুপ্ত করার জন্য ব্রাহ্মণেরা ত্রিপিটকের খুদ্দক নিকায়ের গ্রন্থ ‘ধম্মপদ’ এর ২০৪ সংখ্যক গাথায় বর্ণিত হয়েছে-‘আরোগ্য পরমা লাভা।’ অর্থাৎ নীরোগ জীবনের মত উত্তম কোন উপহার আর নাই। বিনয় পিটকের মহাবর্গে বর্ণিত হয়েছে যে, তথাগত বুদ্ধ নিজেই তিষ্য নামক এক রোগগ্রস্থ বৃদ্ধ ভিক্ষুকে তাঁর প্রধান সেবক ভদন্ত আনন্দ স্থবিরের সহযোগিতায় চিকিৎসা সেবা দিয়েছিলেন। করুণাময় বুদ্ধ ভিক্ষু সঙ্ঘকে সম্বোধন করে নির্দেশ প্রদান করেছিলেন যে-‘ভিক্ষুগণ! যদি তোমরা রোগী ভিক্ষুদের সেবা প্রদান করো, তা তথাগতের সেবা হবে।’ (If you will tend the sick, you will tend me, Vinaya, Vol. 1, 301-303). বুদ্ধের এ আদেশকে শিরোধার্য করে ভিক্ষুরা নিজেদের বিহার সমূহকে রোগীর সেবা কেন্দ্র করে তুলেছিলেন। সেখান হতে বৌদ্ধ বিহার সমূহকে লোকেরা ‘আরোগ্য বিহার’ (Health Care Centres) বলতে শুরু করেছিল। বৌদ্ধ ভিক্ষু-ভিক্ষুণীগণকে ‘চিকিৎসক’ বা ‘চিকিৎসক বৈদ্য’ নামে অভিহিত করেছে। জীবক, চরক, শুশ্রূত (নাগার্জুন) ইত্যাদি ছিলেন প্রসিদ্ধ বৌদ্ধ চিকিৎসক।
দুঃখকে বিনাশ করে শান্তিময় ও আনন্দময় জীবন গড়ার উদ্দেশ্যে বুদ্ধ ধম্মের প্রতিষ্ঠা করেছেন। এজন্য বুদ্ধের ধম্মকে ‘কল্যাণকারী ধম্ম’ বলা হয়েছে, যা হল আদি, মধ্য এবং অন্তে পর্যন্ত পূর্ণতঃ কল্যাণকর। বুদ্ধের ধম্মে দুঃখককে এক রোগের মত দেখা হয়েছে এবং এ দুঃখের নিরাময়ের ঔষধরূপে ধম্মকে ব্যবহার করা হয়েছে। এজন্য চিকিৎসার (Ther apy) পদ্ধতিরূপে ধম্মকে চিকিৎসার প্রতীক কাডুশিয়াস (Caduceus) বলে দেখানো হয়েছে। এর মানে ইহাই হল যে, আচার্য নাগার্জুন ভিক্ষু কর্তৃক বুদ্ধকে সামনে রেখে যে শৈল্য চিকিৎসা পদ্ধতি বিকশিত করা হয়েছে, তাকে ‘ধন্বন্তরী চিকিৎসা পদ্ধতি’ বলা হয়েছে এবং তাঁর আদর্শের প্রতীক বুদ্ধকে ‘ধন্বন্তরী বুদ্ধ’ বলা হয়েছে। এভাবে তথাগত বুদ্ধই হলেন বাস্তবে আয়ুর্বেদাচার্য ধন্বন্তরি , পুরাণ সমূহে বর্ণিত ধন্বন্তরী দেবতা।
বৌদ্ধধর্মকে ধ্বংস করার নাম বৈদিক হিন্দুধর্ম! হিন্দু শাসকগণ রাশি রাশি বৌদ্ধমন্দির ধ্বংস করে হিন্দু মন্দিরে বদলানো হয়েছিল IN 9TH CENTURY. হিন্দুত্ববাদীদের বুদ্ধমূর্তি চুরি এবং ‘তিরুপতি বালাজি বৌদ্ধ বিহার দখল প্রসঙ্গ! আইনের শাসনে হিংস্র ত্যাঁদড় হিন্দুত্ববাদীরা চোর এবং বৌদ্ধদের! তিরুপতি বালাজি সোনালী বুদ্ধমূর্তি (তিরুপতি মন্দির, অন্ধ্রপ্রদেশ) চুরি করেছে! বুদ্ধিষ্ঠ স্রাইন KERALA SHABARI MALA হিন্দু মন্দির এবং বুদ্ধিষ্ঠ স্রাইন’ তিরুপতি বালাজি হিন্দু মন্দির! বৌদ্ধ বিহার ভেঙ্গে গড়ে তোলা হয়েছে পুরীর জগন্নাথ দেবের হিন্দু মন্দির, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায় :
“কথা কও, কথা কও। / অনাদি অতীত, অনন্ত রাতে
কেন বসে চেয়ে রও? / কথা কও, কথা কও।
যুগযুগান্ত ঢালে তার কথা / তোমার সাগরতলে,
কত জীবনের কত ধারা এসে / মিশায় তোমার জলে।”
পাটনার (পাটলী পুত্রের) স্তূপের খননকার্যের সময় সেখানে এক অভিলেখ পাওয়া গিয়েছে। তাতে বৌদ্ধ বিহারকে ‘আরোগ্য বা চিকিৎসা বিহার’ বলা হয়েছে এবং পরবর্তীতে ‘ধন্বন্তরেহ’ মানে ধন্বন্তরী বৌদ্ধ ভিক্ষুদের চিকিৎসা বিহার’ বলা হয়েছে (তুংশ, ১৯৯১, চ-৪৫). বুদ্ধ এবং মগধরাজ বিম্বিসারের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ছিলেন প্রখ্যাত বৈদ্য জীবক। তিনি ছিলেন প্রসিদ্ধ শৈল্য চিকিৎসক। তাঁর চিকিৎসার পদ্ধতির গবেষণার ভিত্তিতে পরবর্তী সময়ে আচার্য নাগার্জুন কর্তৃক শুশ্রূত সংহিতা লিখা হয়েছিল এবং তিনি তাতে শৈল্য চিকিৎসা সম্বন্ধে সবিস্তারে মার্গ দর্শন করেছেন। শৈল্য চিকিৎসার জন্য বৌদ্ধ ভিক্ষু নাগার্জুন কর্তৃক ধনবন শব্দের ব্যবহার করেছেন। যার ভিত্তিতে ধন্বন্তরী পন্থের বিকাশ হয়েছে। ধন্বন্তরী পন্থে শৈল্য চিকিৎসার দেবতা ধন্বন্তরীকে গুরুত্বপূর্ণ বলে অভিহিত করা হয়েছে।
বাণভট্ট রচিত হর্ষচরিত গ্রন্থানুসারে, ১৮৫ খ্রিস্ট পূর্বাব্দে (B. C.) মৌর্য্য রাজবংশের নবম বৌদ্ধসম্রাট বৃহদ্রথের (5th Generation of Emperor Asoka) প্রধান সেনাপতি পুষ্যমিত্র শুঙ্গ মৌর্য্য সেনাবাহিনীর কুচকাওয়াজে শক্তি প্রদর্শনের সময় তাকে হত্যা করে মৌর্য্য সাম্রাজ্যের পতন ঘটান ও শুঙ্গ রাজবংশের প্রতিষ্ঠা করে বৌদ্ধ হত্যাযজ্ঞ করে চলেছে। বৌদ্ধ সম্রাটের ব্রাহ্মণ সেনাপতি পুষ্যমিত্র শুঙ্গ মহামতি সম্রাট অশোকের বংশজ মৌর্য বংশের সর্বশেষ বৌদ্ধ সম্রাট বৃহদ্রথকে হত্যা করেছিল এবং বৌদ্ধ ধর্মের মুল গ্রন্থ বৌদ্ধ ত্রিপিটককে নিশ্চিহ্ন করে হিন্দু ধর্মকে মহিমান্বিত করতে বৌদ্ধ জাতকের গল্পকে চুরি করে (১) রামায়ন (২) মহাভারত (৩) বেতাল পঞ্চবিংশতি (পঞ্চতন্ত্র, (৫) HITOPADESA এবং (৬) কথাসরিৎসাগর রচনা করেছেন! বৌদ্ধ নলিনীকা (৫২৬) এবং কট্টহারী জাতক হতে নেওয়া হয়েছে মহাভারতের শকুন্তলা ও রাজা দুস্যনের প্রেম কাহিনী। তাই বৌদ্ধবিশ্বের প্রার্থনার জায়গা বুদ্ধগয়ায় হিন্দু রাজনীতির শিবলিঙ্গ দুর্বৃত্তপনা ছিল! হিন্দুরাজনীতি সম্রাট অশোকের বৌদ্ধ ভারতকে হত্যা করল কেন?
হিন্দুরাজনীতি ও ভারত রাষ্ট্রশক্তির “সত্য“ বড় বিষম বস্তু। রাষ্ট্রীয় সেন্সরশিপের ফলে তাতে কোপ পড়লে গণতন্ত্রের বিপদ, আবার শাসকবর্গের কায়েমি স্বার্থে তার বাগাড়ম্বরও সমস্যাকর। বস্তুত, সত্যকে সহজ ভাবে প্রকাশিত হতে না দিলে তা কি আর সত্য থাকে? রামায়ন ও মহাভারতের কথাই ধরা যাক। হিন্দু সাম্রাজ্যবাদ প্রতিষ্ঠিত করার পর ৭ম শতাব্দীতে রাজা শশাঙ্ক বুদ্ধগয়ার বোধিবৃক্ষ ধ্বংস করেছিলেন। হিন্দু সমাজে মানবাধিকার হিন্দু ধর্ম কি ভাবে বৌদ্ধধর্মকে অর্ন্তভ্ক্তু করে? সাবেক প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর রচিত “ভারত সন্ধানে” (ডিসকভারি অব ইন্ডিয়া) শীর্ষক গ্রন্থে ১৫০ পৃষ্ঠায় ”হিন্দু ধর্ম কি ভাবে বৌদ্ধধর্মকে অর্ন্তভ্ক্তু করে” প্রশ্নটা প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর আঁন্দ্রে ম্যালরো জওহরলাল নেহেরুকে করেছিলেন!
হিংসাকে অহিংসা দিয়ে জয় করতে হবে। বৌদ্ধদের শত শত বুদ্ধ মন্দির ও বিহার আজও হিন্দু মৌলবাদীরা দখল করে আছে। ১৯৫৬ সালে ১৪ অক্টোবর জাতিভেদ প্রথার ট্রাজেডি সহ্য করতে না পেরে ভারতীয় সাবেক আইন মন্ত্রী ডঃ বি. আর আম্বেদকর ৫০ হাজার জনতা নিয়ে বৌদ্ধধর্ম গ্রহন করেন। ভারতীয় হিন্দু শাসকগণ বুদ্ধকে হিন্দুর অবতার বানিয়ে বৌদ্ধগণকে নীচ জাতি করে রাখেন। ফল বিশ্ববৌদ্ধদের শ্রেষ্ঠতম তীর্থস্থান “বুদ্ধগয়ার মহাবোধি মন্দির” (যেই পবিত্র বোধিবৃক্ষের তলে বসে রাজকুমার সিদ্ধার্থ কঠোর সাধনার মাধ্যমে সম্যক সম্বুদ্ধ বা বুদ্ধত্ব লাভ করেন) হিন্দু রাজনীতি দখলে রাখবে। হিংস্র মুসলমান জনগণ ধর্মকে ঢাল তলোয়ারের মত ব্যবহার করছে!
বুদ্ধগয়ায় হিন্দুরাজনীতির বৌদ্ধ হত্যাযজ্ঞের ইতিহাস! কর্নাটকের রাজা বিজয় সেনের বাংলাদেশ দখল করাতে একাদশ শতাব্দীতে বৌদ্ধ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলো! হিন্দু রাজা শশাঙ্ক ৭ম শতাব্দীতে বুদ্ধগয়ায় মহাবোধি মন্দির দখল করে বোধিবৃক্ষ ধ্বংসসহ শত শত বৌদ্ধহত্যা যজ্ঞ করার ইতিহাস চীনা পরিব্রাজক বৌদ্ধভিক্ষু ইউয়েন সাং তাঁর ভ্রমন কাহিনীর ইতিহাসে লিপিবদ্ধ করেছেন। ব্রাহ্মণ্য হিন্দু ধর্মের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দিতায় বৌদ্ধ চর্যাপদের উৎপত্তি এবং হিন্দুরাজনীতির বৌদ্ধ হত্যাযজ্ঞের জন্যে (দেশ, ৪ মে ২০০১ কলিকাতা পৃষ্ঠা ১২) ত্রয়োদশ শতাব্দীতে বাঙালি বৌদ্ধগণ by force মুসলমান হয়েছিলেন! হিন্দুরাজনীতি বৌদ্ধধর্ম গ্রহন না করে বা বৌদ্ধ ধর্মালম্বী না হয়ে পূজনীয় গৌতমবুদ্ধকে হিন্দুরাজনীতি নবম অবতার বানিয়ে বানিয়ে গোলে মালে আধুনিক সমাজের চোখে ধূলো দিচ্ছেন। বুদ্ধগয়া মহাবোধি ম্যানেজম্যান্ট কমিটির Chairman must a BUDDHIST but হিন্দুরাজনীতি made a HINDU forever (Magistrate) and স¤প্রতি ভারতের “দৈনিক পাটনা” পত্রিকার সংবাদ ছিল মানুষের সকল মৌলিক অধিকার পরিপন্থী, মানবতা বিরোধী এক কালো আইনের নাম “বুদ্ধগয়া মহাবোধি ম্যানেজম্যান্ট কমিটির সদস্যগণের নীতিমালা” (ভারত, দৈনিক পাটনা, ২৪ মে, ২০০৮)। বাংলাদেশ & INDIA এনলাইটেনমেন্টে একদা দক্ষিন এশিয়ায় ব্রাহ্মণ ব্যতীত সবাই বৌদ্ধ ছিলেন। সম্রাট অশোকের মৃত্যুর পর ব্রাহ্মণ রাজা পুষ্যমিত্র (খৃষ্ঠ পূর্ব ১ম শতাব্দী)সহ চক্রান্তকারীরা বিভিন্ন জঙ্গীদের সাথে ক‚ঠনীতি করে উপমহাদেশে বৌদ্ধধর্ম এবং মন্দির ধ্বংস করেন।
২৫৫৪ বছর পূর্বে ভারতের বিহার প্রদেশে গৌতমবুদ্ধের “বুদ্ধত্ব লাভের” পবিত্র জায়গাটির নাম “বুদ্ধগয়া।” পলিটিক্যাল হিন্দুধর্ম ভারতীয় বৌদ্ধগণের মানবাধিকার হরণ করেছে। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ”চন্ডালিকা” শীর্ষক নৃত্যনাট্যে বিশ্বমানবতার বানী অহিংসা পরম ধর্ম প্রচার করেছেন। হিন্দু মুসলমান, বৌদ্ধ, খৃষ্ঠানসহ সকল মানব সন্তান মিলে আমাদের মানবজাতি। রাজনীতি ও ধর্ম মানবাধিকারকে ধ্বংস করা অমানবিক অপরাধ বলে কবি দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের ভাষায়, “গোত্র দেবতা গর্তে পুরিয়া, / এশিয়া মিলাল শাক্যমুনি। অবশেষে হিন্দু রাজনীতির আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সন্মিলিত বৌদ্ধবিশ্বের প্রতিবাদ মুখরিত বুদ্ধগয়ায় মহাবোধি মন্দিরে বুদ্ধ বন্দনার পর মহাভিক্ষু সমাগমে প্রতিবাদ আন্দোলন শুরু হয়। নয়জনের বুদ্ধগয়া ম্যানেজম্যান্ট কমিটিতে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটসহ আর ও চারজন হিন্দু সদস্য কেন? ভারতে জৈন, মুসলমান, শিখ এবং খৃষ্ঠান ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে কোন হিন্দু সদস্য নেই। হিন্দু রাজনীতির দাদারা মাফিয়া চক্রের মতো বৌদ্ধদের তীর্থভ‚মি বুদ্ধগয়ার মহাবোধি মন্দির শত শত বছর পর্যন্ত দখল করে আছে।
জাতিভেদ প্রথার ট্রাজেডিতে “বৌদ্ধগণ” ভারতে হিন্দু রাজনীতির ক্রীতদাসে পরিনত হয়েছে। আজ বৌদ্ধধর্ম ভারতের গরীব আদিবাসীদের ও ডঃ বি. আর. আম্ভেদকরের অনুসারীদের ধর্ম। জাতিভেদ প্রথা ভিত্তিক হিন্দুধর্মে বৌদ্ধদের বিন্দুমাত্র ও অস্তিত্ব নেই। ভারত বাংলাদেশের বৌদ্ধগণ ছিল ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুধর্মের পথের কাঁটা।” হিন্দু শাসকগণ বুদ্ধগয়ার মাধ্যমে রাজনীতির “ব্রহ্মজাল” পেতে রেখেছে। এই চাণক্য রাজনীতির ক‚ট কৌশলে ব্রাহ্মণ্যবাদের সমাজপাঠ। তাই সম্রাট অশোক কলিঙ্গযুদ্ধের ভয়াবহ পরিনাম দেখে শান্তির জন্যে ত্রাহি ত্রাহি করতে করতে বৌদ্ধধর্ম গ্রহন করেন। হিন্দু সমাজে মানবাধিকার নেই। হিন্দু রাজনীতি বৌদ্ধদের হাত থেকে বৌদ্ধধর্ম, অশোকচক্র এবং বুদ্ধগয়া কেড়ে নিয়েছে। হিন্দুশাসকদের কাছে বৌদ্ধগণ হিন্দু রাজনীতির গোলাম। শান্তিকামী হিন্দু জনতা বৌদ্ধদের পরম বন্ধু, কিন্তু পলিটিক্যাল অত্যাচারী হিন্দু শাসকগণই অভিশপ্ত বৌদ্ধদের শত্র“।
ভারতে একমাত্র বুদ্ধগয়ার মহাবোধি মন্দিরে হিন্দু নেতাগণের ষড়যন্ত্রে ম্যানেজম্যান্ট কমিটির এ আইন মনুষ্য সৃষ্ঠ অথচ মনুষ্যত্ব বিরোধী। জঙ্গি হিন্দুত্ববাদীদের গভীর ষড়যন্ত্র থেকে মুক্তি পেতে (কলকাতার দেশ ৪ মে, ২০০১ পৃ: ১০) ভারতীয বৌদ্ধদের অক্লান্ত প্রয়াসের ফলে মহাবোধি মন্দির উদ্ধারের দাবীদে অনশন, অবস্থান, মিছিল, ধর্ণা ইত্যাদি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের কর্মসুচি রুপায়ন চলতে থাকে বছরের পর। ব্রাহ্মণ্যবাদের মাফিয়াচক্রে “ধর্মের অপব্যবহারে” লোভী ব্রাহ্মণ সহ শাসকগণ জাতিভেদ প্রথায় সনাতন ধর্মের মস্তক বিক্রয় করে গণতান্ত্রিক বৌদ্ধধর্মকে করেছিলেন। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরাই শুধু ভারতের সত্যিকারের নাগরিক হলে, সংখ্যালঘুদের জন্য তো আপনার প্রাণ কাঁদে না। কোন পরিকল্পনা ও নেই। প্রসঙ্গত: বিশ্বমানবাধিকাররের আলোকে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের কারন কি ছিল? ভারতের বিহার সরকার ক্ষতিগ্রস্থ নির্যাতীত বৌদ্ধদেরকে তাঁদের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া রাষ্ঠ্রের দায়িত্ব এই সহজ কথাটি পর্যন্ত ভুলে গেছে।
বুদ্ধগয়ায় মহাবোধি মন্দির হিন্দুত্বকরনের বিরুদ্ধে ভারতীয় বৌদ্ধভিক্ষুদের আমরণ অনশন ধর্মঘটের সংবাদ টরন্টোর বাংলা কাগজ (জানুয়ারী ১২, ২০১০), বাংলাদেশের নয়া দিগন্ত (২ এবং ৩রা জানুয়ারি, ২০১০) ও কলকাতার টেলিগ্রাফ পত্রিকাসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে জানতে পেরে বিশ্ববৌদ্ধ সমাজ বিস্মিত। জঙ্গি হিন্দুত্ববাদীদের গভীর ষড়যন্ত্র থেকে মুক্তি পেতে (কলকাতার দেশ ৪ মে, ২০০১ পৃ: ১০) ভারতীয বৌদ্ধদের অক্লান্ত প্রয়াসের ফলে মহাবোধি মন্দির উদ্ধারের দাবীদে অনশন, অবস্থান, মিছিল, ধর্ণা ইত্যাদি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের কর্মসুচি রুপায়ন চলতে থাকে বছরের পর। বৌদ্ধদের তিরুপতি বালাজী মন্দির এবং পুরীর জগন্নাথ মন্দির হিন্দু রাজনৈতিকগণ দখল করার পর গৌতমবুদ্ধকে হিন্দু রাজনীতির ভগবান বা অবতার বলে বৌদ্ধধর্মকে হিন্দু রাজনীতি তিলে তিলে কিডন্যাপ করেছেন। “শক্তি মরে ভীতির কবলে / পাছে লোকে কিছু বলে। সর্বগ্রাসী হিন্দুধর্ম শক্তিশালী অনার্য সভ্যতাকে আয়ত্ত করে নিজের কুক্ষিগত করেছিলেন। বিশেষতঃ কুমারিল ভট্ট, শংকরাচার্য প্রমুখের নেতৃত্বে ব্রাহ্মণ্য ধর্মের পূনরুত্থান আন্দোলন আরম্ভ হয়েছিল। এ সময়ে বৌদ্ধ সমাজের বুদ্ধিজীবিগণ নিস্তেজ হয়ে পড়েন এবং রিক্ত সর্বশান্ত হয়ে তাঁরা ধীরে ধীরে ভারতবর্ষ হতে তিব্বত ও আসামের দিকে সরে পড়েছেন।”
বিশ্ববৌদ্ধ পুরস্কার প্রাপ্ত প্রখ্যাত মানবতাবাদী লেখক সোনা কান্তি বড়ুয়া (Bachelor of Arts, University of Toronto), The AuthorÕs World famous and glorious New Book entitled ÒPRE – VEDIC MOHENJODARO BUDDHISM & MEDITATION IN THE NUCLEAR AGE , (516 Pages) “ সাবেক সভাপতি, বাংলা সাহিত্য পরিষদ, টরন্টো, খ্যাতিমান ঐতিহাসিক, কথাশিল্পী, বিবিধগ্রন্থ প্রনেতা প্রবাসী কলামিষ্ঠ, লাইব্রেরীয়ান, বিশ্ববৌদ্ধ সৌভ্রতৃত্ব পত্রিকার সহ সম্পাদক এবং জাতিসংঘে বিশ্ববৌদ্ধ প্রতিনিধি