অনলাইন ডেস্ক : গুলশানের বারিধারার পার্ক রোডের ৩২ নম্বর বাসার দোতলার ফ্ল্যাটে থাকেন ব্যবসায়ী মামুন আহমেদ। ব্যবসার সুবাদে বিদেশ ভ্রমণের সময় তার শখ বিশ্বের নামিদামি ব্র্যান্ডের ঘড়ি কেনা। তার সংগ্রহে রয়েছে শতাধিক দামি ব্র্যান্ডের ঘড়ি। বাসায় তিনি একাই থাকতেন। ৯ জুন সকালে তিনি ঘুম থেকে উঠে দেখেন পাশের রুম থেকে একটি আইফোন ও পাঁচটি ঘড়ি চুরি হয়ে গেছে। এসবের মধ্যে একটি ঘড়ি বিশ্ববিখ্যাত রিশা মিল্লে ব্র্যান্ডের, যার দাম সোয়া কোটি টাকা। প্যাটেক ফিলিপ ব্র্যান্ডের ঘড়ির দাম ছিল ৩০ লাখ টাকা। বিএমডব্লিউ ব্র্যান্ডের ঘড়ির দাম ৫০ হাজার টাকা। আর মোভাদা মিউজিয়াম ব্র্যান্ডের দুটি ঘড়ির চেইন স্বর্ণের তৈরি বলে এগুলোর প্রতিটির দাম ২ লাখ টাকার ওপরে।

এ ঘটনায় পুলিশ টানা তদন্ত করে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে। তারা হলো মিজান, উজ্জ্বল মিয়া ও তাজুল ইসলাম লিটন। মিজান ঘড়িগুলো চুরি করে। তাদের কাছ থেকে তিনটি ঘড়ি ও একটি আইফোন উদ্ধার করে পুলিশ। স্বর্ণের চেইনওয়ালা দুটি ঘড়ির স্বর্ণ গলিয়ে ফেলায় তা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে স্বর্ণ বিক্রি করা ১ লাখ ৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম বলেন, এই মামলায় গ্রেফতারকৃতরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। চলতি মাসের মধ্যে এই মামলার চার্জশিট দেওয়া হবে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার এসআই মাসুম বিল্লাহ রনি জানান, চুরির ঘটনার পরপরই তারা ঐ বাসার চারদিকের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেন। ফুটেজ থেকে মিজান নামে এক তরুণকে শনাক্তের পর উত্তরখান এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার সুদীপ চক্রবর্তী বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে মিজান জানায়, রিশা মিল্লে ও প্যাটেক ফিলিপ ব্র্যান্ডের দুটি ঘড়ি একজনের কাছে ২ হাজার টাকা করে বিক্রি করেছিল, কিন্তু তখনো ক্রেতার কাছে ঘড়িগুলো হস্তান্তর করেনি।

বিএমডব্লিউ ব্র্যান্ডের ঘড়িটি উজ্জ্বল নামে এক মোবাইল ফোন মেকারের কাছে ২ হাজার টাকায় এবং আইফোনটি ১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি করেছে। পরে মিজানকে সঙ্গে নিয়ে ভাটারা এলাকার ফাঁসেরটেক বালুর মাঠ এলাকা থেকে উজ্জ্বলকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ঘড়ি ও আইফোনটি। বাকি দুটি ঘড়ির কথা জিগ্যেস করলে সে একই এলাকার এক স্বর্ণকারের কাছে বিক্রি করেছে বলে জানায়। পরে তাকে নিয়ে লিটন নামে ঐ স্বর্ণকারের দোকানে অভিযান চালানো হয়। লিটন স্বর্ণের ঘড়ি দুটি কেনার কথা স্বীকার করলেও সে জানায়, কেনার পরপরই সেগুলো গলিয়ে সে গলিত স্বর্ণ বিক্রি করে দিয়েছে। পরে তার কাছ থেকে স্বর্ণের ঘড়ি বিক্রির ১ লাখ ৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।