বাহারুল হক
গাঢ় সবুজ পত্রের মনোরম পোশাকে সুসজ্জিত তুমি।
ঝল মল আকাশ আর ঝিরি ঝিরি বাতাস তোমার সাথি।
আমি মুগ্ধ হয়ে বললাম – বড় বেশি সুন্দর লাগছে তোমাকে,
সব সময় এরকম পোশাকে থাকবে।
তুমি স্মিত হাসি দিলে।
এভাবে ‘সামার’ গেল, ‘স্প্রিং’ গেল, তারপর আসলো ‘ফল’।
তুমি কাতর, বিবর্ণ, তোমার সবুজ বসন ধীরে ধীরে গা থেকে খসে পড়ছে।
আমি বললাম – কি হয়েছে তোমার?
তুমি বিনম্র হাসি দিয়ে বললে – না উইন্টার আসবেতো তাই।
আমি বিস্মিত হয়ে বললাম – তাতে কি হয়েছে?
তুমি বললে – ঠান্ডা হাওয়ায় উইন্টার খবর পাঠিয়েছে
আমি যেন বিবস্ত্র হয়ে তার অপেক্ষায় থাকি।
আমি বিচলিত হয়ে বললাম-খবরদার উইন্টারের আবদার
পূরণ করতে যেও না।
শতবার বললাম – এটা একটা অত্যান্ত নোংরা আবদার;
আর ও বললাম – উইন্টার মেরুদন্ডহীন ভীরু কাপুরুষ
উইন্টার একা আসবে না; আসবে দুর্দান্ত শক্তির
অধিকারী কালো মনের নির্লজ্জ সাদা বরফের হাত ধরে।
উইন্টারের সামনেই অসভ্য সাদা বরফ
বিবসনা তোমার জীবনের সব কেড়ে নেবে;
ভিরু উইন্টার দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখবে আর দেখবে।
তুমি আমার কথা কিছুতেই শুনলে না, বিবসনা হলেই।
‘ফল’কে দূরে ঠেলে তোমার প্রাণপ্রিয় ‘উইন্টার’ আসলো।
উইন্টারের হাত ধরে আসলো সাদা বরফ, তারপর যা হবার তাই হলো।
উইন্টারের সামনেই বেহায়া বরফ হিংস্র ক্ষুধা নিয়ে লাফিয়ে পড়লো
তোমার বিবসনা শরীরের উপর।
তোমার উদাম শরীর এখন বরফের শক্ত নোংরা বাহু ডোরে।
এখন তুমি কেঁদে কেঁদে অপেক্ষা কর
কখন অমিত তেজ নিয়ে ত্রাতা সামার আসবে,
কখন বিতাড়িত হবে লম্পট বরফ।
সবুজ পত্র আর বাহারি ফুলে সজ্জিত হয়ে মনোহারি
রুপে তুমি আবার দাঁড়াবে।