অনলাইন ডেস্ক : এযেন সত্যিই টুইঙ্কেল টুইঙ্কেল লিটল স্টার। তবে একটা নয়। একসঙ্গে একজোড়া। নিকষ কালো মহাশূণ্যের বুকে হিরার টুকরো হয়ে আলো ছড়াচ্ছে তারা। সেই ছবি এবার প্রকাশ্যে আনল মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। সৌজন্যে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ।
সম্প্রতি হারবিগ-হারো ৪৬/৪৭ জোড়া তারার ছবি ছবি সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে নাসা। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থার দেয়া তথ্য অনুযায়ী, পৃথিবী থেকে এক হাজার ৪৭০ আলোকবর্ষ দূরে রয়েছে ওই দু’টি তারা। জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের ইনফ্রারেড ছবিতে মহাশূন্যে তারা দু’টির ঘূর্ণন স্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে। নাসা সূত্রে খবর, তারা দু’টি একে অপরের চারপাশে ঘুরছে। উল্লেখ্য, গত এক দশক ধরে হারবিগ-হারো ৪৬/৪৭ নামের জোড়া তারা নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন মার্কিন জ্য়োতির্বিজ্ঞানীরা। নক্ষত্র দু’টিকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করেন তারা।
গবেষকদের দাবি, হারবিগ-হারো ৪৬/৪৭-কে ঘিরে রয়েছে নীহারিকামণ্ডলী। একটি ঘন মোটা গ্যাসীয় আস্তরণ ও পুরু ধূলিকণা রয়েছে সেখানে। সেটা ভেদ করে তারা দু’টির ছবি তোলা রীতিমতো জটিল বিষয় ছিল। তবে সব বাধা কাটিয়ে শেষপর্যন্ত মহাশূন্যের বিরল দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের দাবি, অন্যান্য নক্ষত্রর তুলনায় এই দুৎটি তারার বয়স অনেকটাই কম। তারা দু’টি কেন্দ্রীয় অংশের রং কমলা-সাদা। এর মধ্যে আবার লাল ও গোলাপী ছোট দেখা গিয়েছে। তারা দু’টি যেহেতু ঘন গ্যাসীয় মণ্ডলী ও ধূলিকণার মধ্যে রয়েছে, তাই এই রঙের কারণ স্পষ্ট করতে পারেননি নাসা-র বিজ্ঞানীরা।
প্রসঙ্গত, জোড়া তারার আশপাশের অঞ্চলে নীল রঙের একটি রেখা দেখা গিয়েছে। সেটিকে নীহারিকামণ্ডলীর অংশ বলেই মনে করছেন মহাকাশ গবেষকরা। গত কয়েক লাখ বছর ধরে নক্ষত্র দু’টি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন নাসা-র বিজ্ঞানী। শুধু তাই নয়, তারা দু’টির গঠন এখনও শেষ হয়নি বলেও জানা গিয়েছে। তবে এই দুই নক্ষত্রের কোনও গ্রহ বা উপগ্রহ রয়েছে কিনা তা জানা যায়নি।
২০২১-র ২৫ ডিসেম্বরে মহাশূন্যে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ পাঠায় নাসা। বর্তমানে এই টেলিস্কোপকেই বিশ্বের সর্বাধিক শক্তিশালী বলে ধরা হয়। এর আগেও মহাবিশ্বের একাধিক বিরল ছবি পাঠিয়েছে এই টেলিস্কোপ। কিছুদিন আগেই জেমস ওয়েবের তোলা মহাশূন্যের ছবি প্রকাশ্যে আনে নাসাA-র। পৃথিবী থেকে প্রায় ৩৯০ আলোকবর্ষ দূরের ছবি তুলে পাঠিয়েছিল এই টেলিস্কোপ। যা দেখে রীতিমতো বিস্ময় প্রকাশ করেন জ্য়োতির্বিজ্ঞানীদের একাংশও।