বিনোদন ডেস্ক : ভারতীয় সংগীতের জগতে এআর রহমানের তুলনা হয়তো তিনি নিজেই। কিংবদন্তী এই শিল্পীকে ভালোবাসায় ভরিয়ে দেন মানুষ বরাবরই। তবে অনেকেই হয়তো জানেন না ক্যারিয়ারের শুরুতে কিন্তু হিন্দুই ছিলেন তিনি। নাম ছিল দিলীপ কুমার। তবে বাবা, তামিল সংগীত পরিচালক আরকে শেখরের মৃত্যুর কয়েক বছর পরে ইসলাম গ্রহণ করেন তিনি। নিজের নাম বদলে রাখেন আল্লারাখা রহমান। তার মা-ও নাম পরিবর্তন করে হন করিমা বেগম।

বহুবার উঠে এসেছে রহমানের এই ধর্ম পরিবর্তনের কারণ। তবে সুরকারের সাফ কথা, ধর্ম পরিবর্তন তাকে দিয়েছিল মানসিক শান্তি।রহমানের কথায়, ‘ইসলাম আমায় মানসিক শান্তি দেয়। কেউ আমাকে এই পথে আসার জন্য বলেনি। আমিই অনেক শান্তি পেতাম। মনে হচ্ছিল, সব যেন ঠিক চলছে। মনের ভেতর কিছু বিশেষ অনুভূতি কাজ করত। যে জিঙ্গেলগুলো প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল, প্রার্থনার পর সেগুলোই কবুল হয়ে যেতে থাকল।’

তা হলে ইসলাম ধর্মগ্রহণের পরই কি জীবনে সফলতা এসেছে- এমন প্রশ্ন অনেকেই করেন এআর রহমানকে। উত্তরে এই সংগীতজ্ঞ বলেন, ‘এটা ইসলামে ধর্মান্তরের বিষয় নয়। এটি আসলে সেই কেন্দ্রটি খুঁজে পাওয়া এবং নিজের ভেতর থেকে তাগিদ অনুভব করা। এ ক্ষেত্রে আধ্যাত্মিক ও সুফি গুরুদের শিক্ষা এবং আমার মায়ের ভাবনাচিন্তাও বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। প্রত্যেক বিশ্বাসেই বিশেষ কিছু রয়েছে এবং আমরা একটি বিশ্বাস বেছে নিয়েছি মাত্র। এবং আমরা এর পক্ষে।

তবে নিজে ইসলাম গ্রহণ করলেও, পরিবারের কারও ওপর তা জোর করে চাপিয়ে দেননি। রহমানের কথায়, ‘আপনি কারও ওপর কিছু জোর করে চাপিয়ে দিতে পারেন না। আপনি কি সন্তানকে বলতে পারেন- ইতিহাস পড়ো না, সেটা বোরিং কিংবা অর্থনীতি বা বিজ্ঞান নিয়েই পড়তে হবে। এটা তাদের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। তেমন ধর্মও।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রার্থনা খুব উপকারী। অসংখ্য পতন থেকে এটি আমাকে রক্ষা করেছে। প্রার্থনার মাঝে মনে হয়, ওহ, আমাকে প্রার্থনা করতে হবে। তাই আমি খারাপ কাজ করতে পারব না। অন্য ধর্মবিশ্বাসীরাও একই কাজ করেন এবং তারাও শান্তিকামী। আমি এভাবেই ভাবি।’

১৯৯২ সালে মণিরত্নম পরিচালিত একটি কফির বিজ্ঞাপনের জিঙ্গেলে কণ্ঠ দিয়ে তাক লাগিয়ে দেন। এর পরই তিনি মণিরত্নমের তামিল সিনেমা ‘রোজা’ ছবিতে প্রথম সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে কাজের সুযোগ পান। পারিশ্রমিক পান ২৫ হাজার রূপি।

২০১৪ সালে তিনি চারটি জাতীয় পুরস্কার, ১৫টি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জিতেছিলেন। সে বছর ১৩৮ নমিনেশনের মধ্যে ১১৭টিতেই পুরস্কার জিতে নিয়েছিলেন রহমান। এশিয়া মহাদেশের মধ্যে তিনিই প্রথম একই বছর দুটি অস্কার জিতেছিলেন। তার নামে কানাডার মরখমে একটি রাস্তাও রয়েছে।

সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস।