কানাডা দিবসে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্্রুডো জনগণকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন

হাসান আমিন: গত ১লা জুলাই, শনিবার বিশ্বের রেকর্ডসংখ্যক অভিবাসীর দেশ কানাডায় বক্তৃতা, বিশেষ নাগরিকত্ব অনুষ্ঠান এবং সঙ্গীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে ১৫৬তম কানাডা দিবস পালিত হয়। যদিও দিনটিতে ধোঁয়া ও মেঘলা আকাশ অন্টারিও ও কুইবেকের অনেক স্থান অন্ধকারাচ্ছন্ন করে রেখেছিল। তারপরও প্রতি বছরের মত এবার বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে কানাডা দিবস পালন করা হয়। তবে দাবালনের ধোঁয়ার জন্য এ বছরের কানাডা দিবসে বাজি পুড়ানো হয়নি।

কানাডা দিবসের রাজধানী অটোয়ায় অনুষ্ঠিত এক সরকারি এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন, কানাডার জনসংখ্যা অতিস¤প্রতি ৪০ মিলিয়ন বা ৪ কোটি অতিক্রম করেছে। এটা আমাদের জন্য এক বিশেষ মুহূর্ত। প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক বিপর্যয়, ইউক্রেনের যুদ্ধ এবং ক্রমবর্ধমান দামসহ নানা বিষয়ে কানাডা ও বিশ্ব যে সমস্যার মুখোমুখি তার কথাও উল্লেখ করেছ।

তিনি বলেন, আমরা যে চ্যালেঞ্জেরই সম্মুখীন হই না কেন, আমরা সবসময় যেভাবে তা মোকাবেলা করি সেভাবে আমরা এ চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করব, আর আমরা এসব কিছু করবো আমাদের মূল্যবোধের প্রতি অনুগত থাকার মাধ্যমে।
কানাডার গভর্নর জেনারেল মেরি সাইমন তাঁর কানাডা দিবসের বার্তায় বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য কানাডিয়ানদের কাজ করতে হবে। আমাদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়ার সাথে সাথে আমাদের সমতা, ন্যায্যতা, ন্যায়বিচার এবং বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতাগুলো অতিক্রম করতে হবে। কানাডা দিবসের সকালে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় ট্রæডো বলেন, কানাডিয়ানরা এমন একটি দেশ নিয়ে গর্ব করতে পারে যেটি বিশ্বের কাছে হিংসার পাত্র এবং যেখানে ভিন্নতা উদযাপন করা হয় এবং বৈচিত্র্যকে আলিঙ্গন করা হয়। তিনি উল্লেখ করেন, ধ্বংস ও নিপীড়ন থেকে পালিয়ে আসা লোকেরা এখানে একটি জীবনের স্বপ্ন দেখে।

মন্ট্রিয়লে কানাডা দিবসের প্যারেড

কানাডা দিবসের সন্ধ্যার উদযাপন রাত ৮ টায় শুরু হয়। এতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা কানাডিয়ান শিল্পীর পারফরম্যান্স করে। এদের মধ্যে ছিল – জ্যান আরডেন, রোক্সেন ব্রুনো, প্রেস্টন পাবলো, টেগান এবং সারা, ডিয়ার রুজ, ম্যাডিসন ভায়োলেট, জোশ কিউ এবং আরও অনেকে। এ ছাড়াও প্রয়াত কানাডিয়ান গায়ক-গীতিকার গর্ডন লাইটফুটের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়, যিনি এই বছরের শুরুতে মারা গিয়েছেন। প্রতি বছর ১ জুলাই কানাডিয়ান ন্যাশনাল ডে উদযাপন করা হয়। ১৮৬৭ সালের এই দিনে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে কানাডা। এরপর থেকেই স্বাধীন জাতি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত হওয়ার এই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে বিভিন্ন উৎসবের মধ্য দিয়ে পালন করে আসছে কানাডিয়ানরা। দক্ষিণ মহাসাগর, আটলান্টিকা এবং প্যাসিফিক এই তিন মহাসমুদ্রে পরিবেষ্টিত কানাডা পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ, যার আয়তন হচ্ছে ৯৯,৭৬,১৮৬ বর্গ কিলোমিটার।

ডোমিনিয়ন অব কানাডা নামের এই দেশটিতে ১০টি প্রভিন্স এবং ৩টি টেরিটোরি রয়েছে। বর্তমান কানাডার সব ছোট প্রদেশ প্রিন্স এডওয়ার্ড আইল্যান্ডকে বলা হয় গার্ডেন অফ কানাডা। এই মনোরম দ্বীপে ব্রিটিশরা বিদায় নেয়ার সময় বৈঠক করে কানাডাকে আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতা প্রদান করে ১৮৬৭ সালের ১ জুলাই। কানাডা মুক্ত হলেও ব্রিটেনের সঙ্গে ভিন্ন বন্ধন রয়েছে। অর্থাৎ এখনো প্রথাগত বিধি মোতাবেক এ রাষ্ট্রের প্রধান হচ্ছেন ব্রিটেনের বর্তমান রাজা চার্লস। তাঁর অনুক‚লে প্রতিনিধিত্ব করেন নির্বাচিত গভর্নর জেনারেল। সূত্র ঃ সিবিসি নিউজ