অনলাইন ডেস্ক : গত ২৭ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার অনলাইন স্ট্রীমিং পরিষেবাগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে কানাডিয়ান স¤প্রচার আইনগুলোকে সংশোধন করার জন্য একটি বিতর্কিত সরকারি বিল সিনেটে চূড়ান্ত ধাপে অনুমোদন পাবার পর রাজকীয় সম্মতি পেয়েছে। এতে দেশটিতে নেটফ্লিক্স ও স্পটিফাইয়ের মতো স্ট্রীমিং কোম্পানিগুলোকে তাদের আয়ের ৩০ ভাগ কানাডিয়ান কনটেন্টের প্রচার-প্রসারের জন্য খরচ করতে হবে।

আইনটির ফলে ডিজিটাল মিডিয়া কোম্পানির ওপর কানাডিয়ান রেডিও-টেলিভিশন ও টেলিকমিউনিকেশন কমিশন এবং কানাডার স¤প্রচার নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে ক্ষমতা অর্পণ করা হয়। আইন লঙ্ঘন করলে ডিজিটাল মিডিয়া কোম্পানিকে জরিমানাও করতে পারবে তারা। তবে আইনটি স্বাধীন কনটেন্ট নির্মাতাদের নিয়ন্ত্রণ করার উদ্দেশ্যে করা হয়নি বলে জানিয়েছে কানাডার সরকার। আইনে বিশেষভাবে বলা হয়েছে, এসব অনলাইন প্ল্যাটফর্ম কানাডিয়ান প্রোগ্রামকে সরকারি ও আদিবাসী ভাষায় স্পষ্টভাবে প্রচার ও সুপারিশ করে থাকবে। সরকার বলছে, প্রচলিত স¤প্রচারকারীরাও অনলাইন মাধ্যমে স¤প্রচারে গেলে এই আইন মেনে চলবে। স¤প্রচারকরা কানাডিয়ান কনটেন্টকে সাপোর্ট করতে তাদের আয়ের কমপক্ষে ৩০ শতাংশ খরচ করবেন।

অনলাইন স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের ব্যাপক প্রভাবের কথা উল্লেখ করে সরকারি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্ল্যাটফর্মগুলো ভোক্তার অভ্যাস ও সংস্কৃতির ওপর প্রভাব বিস্তার করছে, এমনকি গ্রাস করছে। তাই আমাদের সিস্টেম আপডেট করার সময় এসে গেছে। কনজারভেটিভরা অবশ্য এই আইনকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ বলে মন্তব্য করেছে। এই আইনের প্রভাব যাদের ওপর পড়বে সেসব কোম্পানিগুলোও এর সমালোচনা করেছে। অনলাইন ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটক মনে করছে, এর প্রভাব পড়তে পারে টিকটক ব্যবহারকারীদের ওপর। তবে কানাডার সরকার এর আগে বলেছে, ব্যবহারকারীদের ওপর এই আইন প্রভাব ফেলবে না। গুগল ও ইউটিউব এই আইনের বিরুদ্ধে প্রচারণা শুরু করেছে। তারাও বলছে, এটি ব্যবহারকারীদের ওপর নেতিবাচকভাবে প্রভাব ফেলবে।

সি-১১ বিলটির পৃষ্ঠপোষক হেরিটেজ মিনিস্টার পাবলো রদ্রিগেজ রক্ষণশীল এবং কারিগরি সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে বিলটির বিষয়ে যে সমালোচনা এসেছে তা খারিজ করে দিয়ে এটিকে ভুল বলে বর্ণনা করেছেন।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে হাউস অব কমন্সে সি-১১ বিলটি উত্থাপন করা হয়। পরে এ নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক ও আলোচনা-সমালোচনা হয়। প্রায় এক বছর পরে সিনেট এটি সংশোধন করে হাউস অব কমন্সে ফেরত পাঠায়। হাউস বেশিরভাগ সংশোধনী গ্রহণ করে। দীর্ঘ বিতর্কের পরে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার এই অনলাইন স্ট্রীমিং আইন সিনেটে পাস হয়। বিল উত্থাপনের পর সবচেয়ে বেশি বিতর্ক হয়েছে যে বিষয়গুলো নিয়ে তা হলো, অনলাইন প্ল্যাটফর্মের সাধারণ ব্যবহারকারীর তৈরি কনটেন্ট, যেমন- পডকাস্ট ও অনলাইন ভিডিওর ক্ষেত্রে এই আইন প্রযোজ্য হবে কি না। তবে সরকার জোর দিয়ে বলেছে, আইনটি স্বাধীন কনটেন্ট নির্মাতাদের নিয়ন্ত্রণ করার উদ্দেশ্যে করা হয়নি।
সূত্র ঃ সিবিসি নিউজ