অনলাইন ডেস্ক : পরিস্থিতি বিবেচনায় একে অপরের প্রতি সমব্যথী ও সহনশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বলেন, সংকটে অনেকের আয় কমেছে। হারিয়েছে চাকরি। কেউ কেউ পরিবার নিয়ে কষ্টে জীবন-যাপন করছেন। এমন পরিস্থিতিতে মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন। গতকাল সংসদ ভবন এলাকায় অবস্থিত তার সরকারি বাসভবনে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে তিনি বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়াদের উদ্দেশ্যে এসব কথা বলেন।

এ সময় তিনি ঈদুল আজহার তিনদিন আগে থেকে সড়ক-মহাসড়কে পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান বন্ধ রাখতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন- কৃষি, শিল্প ও রপ্তানিমুখি পণ্য, চিকিৎসা সরঞ্জাম, ত্রাণ, জ্বালানি, ওষুধ, খাদ্যদ্রব্য পচনশীল পণ্য জরুরি সার্ভিসের আওতামুক্ত থাকবে। পাশাপাশি ঈদের আগে ও পরে আটদিন সড়ক-মহাসড়ক সংলগ্ন সিএনজি স্টেশনগুলো ২৪ঘণ্টা খোলা থাকবে। ফিটনেসবিহীন যানবাহন কোরবানির পশুরহাটে চলাচলে বিরত থাকতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এরইমধ্যে ফিটনেসবিহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

পশুরহাটের অনুমতি প্রদানের ক্ষেত্রে মন্ত্রী আবারো স্মরণ করে দিয়ে বলেন, সড়ক-মহাসড়কের ওপরে কিংবা আশেপাশে পশুরহাট বসানো যাবে না। প্রয়োজনে এ বছর কমসংখ্যক হাট বসানোর বিষয়টি বিবেচনায় আনতে হবে। এক্ষেত্রে অনলাইনে পশু বেচাকেনার বিষয়টিও বিকল্প হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ধর্মীয় অনুভূতির পাশাপাশি কোরবানি ঈদ কেন্দ্রিক অর্থনীতির সঙ্গে অনেক মানুষের জীবন ও জীবিকা সংযুক্ত, পশুপালন, অ্যানিমেল ফার্মিং, পশুর চামড়া রপ্তানিসহ ঈদ-অর্থনীতি দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক প্রবাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তিনি জীবনের পাশাপাশি অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে শেখ হাসিনা সরকারের যে অবস্থান তা এগিয়ে নিতে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলারও আহ্বান জানান। এ সময় পোশাক শিল্প কারখানা মালিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, সংক্রমণ বিস্তাররোধে ঈদের আগে পর্যায়ক্রমে পোশাক শ্রমিকদের ছুটির ব্যবস্থা করুন। বরাবরের মতো এবারো ঈদের আগে বেতন-ভাতা পরিশোধের ব্যবস্থা করুন। বাড়িওয়ালা ভাড়াটিয়াদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ এবং শিক্ষার্থীরা মেসে থাকছে ভাড়া দিয়ে, তাদের মালপত্র ফেলে দেয়া হচ্ছে এমন অভিযোগের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, এটাও সত্য কোনো কোনো বাড়িওয়ালা আছেন ভাড়া থেকে আয়ই তার একমাত্র উৎস। আবার ব্যাংক লোনও থাকতে পারে। পরিস্থিতি বিবেচনায় দু’পক্ষকেই ধৈর্য্য, সহনশীল ও মানবিকতার আশ্রয় নিতে হবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ঋণখাতের অধিকাংশ ঋণগ্রহীতা প্রান্তিক ও নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর জীবনে করোনার আকস্মিক অভিঘাত নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। অনেকেই সঞ্চয় ভেঙে চলছে। অন্যদিকে ঋণের কিস্তি দিতে হিমশিম খাচ্ছে। এমন অবস্থায় তাদের ওপর কিস্তি শোধের বাড়তি চাপ জীবনযুদ্ধ থেকে তাদের ছিটকে ফেলতে পারে। ভেঙে দিতে পারে মনোবল। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, শেখ হাসিনা সরকার অর্থনীতির প্রতিটি খাতকে চাঙা রাখতে বাজেট প্রণোদনাসহ নানামুখি উদ্যোগ নিয়েছে। মানুষের জীবন রক্ষার পাশাপাশি জীবিকার চাকা সচল রাখতে নিয়েছে ভারসাম্যমূলক ব্যবস্থা।