অনলাইন ডেস্ক : জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, সর্বগ্রাসী সুদহার ও পঙ্গু করে দেওয়ার মতো জ্বালানির দাম নির্ধারণ করে গরিব দেশগুলোর ‘টুঁটি চেপে ধরেছে’ জ্বালানি কোম্পানি এবং ধনী দেশগুলো। কাতারের দোহায় স্বল্পোন্নত দেশগুলোর পঞ্চম সম্মেলনে উপস্থিত নেতাদের সামনে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

আজ (রবিবার) শুরু হতে যাওয়া এই সম্মেলনে ৪০টির বেশি স্বল্পেন্নোত দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান অংশ নিচ্ছেন। এর আগে গতকাল শনিবার উপস্থিত নেতাদের সামনে গুতেরেস বলেন, দুষ্টুচক্রে আটকা পড়া গরিব দেশগুলোর সাহায্যে ধনী দেশগুলোর প্রতি বছর ৫০০ বিলিয়ন ডলার দেওয়া উচিত। এ সময় তিনি বলেন, বর্তমান যে বিশ্বব্যবস্থা বা বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সেটা ধনী দেশগুলোর তৈরি। ধনী দেশগুলোন স্বার্থেই এ ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে।

করোনা মহামারির কারণে ২০২১ সালে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) এই সম্মেলন স্থগিত হয়। এবার এলডিসিভুক্ত ৪৬ দেশের মধ্যে সম্মেলনে অংশ নিয়েছে ৪৪টি দেশ। এবারের সম্মেলনে নেই দুই দেশ মিয়ানমার ও আফগানিস্তান। কারণ, এই দুই দেশের সরকারকে জাতিসংঘ এখনো স্বীকৃতি দেয়নি। এ ছাড়া বৃহৎ অর্থনীতির কোনো দেশ সম্মেলনে অংশ নেয়নি।

শনিবার স্বল্পোন্নত দেশের নেতাদের সম্মেলনে গুতেরেস গরিব দেশগুলোর সঙ্গে ধনী দেশগুলো যা করছে তার কঠোর সমালোচনা করে বলেন, (গরিব) দেশগুলো যখন সীমিত সম্পদের সংকটে, ঋণের দায়ে জর্জরিত ও এখনো করোনা মহামারির কারণে ইতিহাসের সবচেয়ে বৈষম্যের ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে, তখন এসব দেশের পক্ষে অর্থনৈতিক উন্নয়ন অনেক চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশগুলোর অভিযোগ, করোনাভাইরাস টিকা ন্যায্যভাবে বণ্টন করা হয়নি। মূলত ইউরোপ ও আমেরিকা টিকা পেয়েছে। এতে করে বঞ্চিত হয়েছে তারা।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট বিপর্যয়ের বিষয়টি উল্লেখ করে গুতেরেস বলেন, কোনো কিছু না করেও দরিদ্র দেশগুলোর সামনে নানামুখী চ্যালেঞ্জ হাজির হয়েছে। এতে করে এসব দেশের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। অথচ এর ক্ষতিপূরণ হিসেবে সামান্য তহবিলই পাচ্ছে তারা। এই তহবিল একটি বালতিতে এক ফোঁটা পানি দেওয়ার মতো। বৃহৎ জ্বালানি কোম্পানিগুলো যখন বিপুল মুনাফা করছে তখন দরিদ্র দেশগুলোর মানুষদের পাতে এক বেলা খাবার জোটানো দুঃসহ হয়ে উঠেছে। সূত্র: আল জাজিরা