অনলাইন ডেস্ক : যত দিন যাচ্ছে ততই স্পষ্ট হচ্ছে- কভিড-১৯ শুধু শ্বাসতন্ত্রের রোগ নয়, এটি মস্তিস্ক এবং স্নায়ুতন্ত্রেও বহু রকমের সমস্যা সৃষ্টি করে। এর মধ্যে রয়েছে স্ট্রোক, মানসিক বিকার, প্রলাপ, বিভ্রম, ক্লান্তি ও দুশ্চিন্তা। বিজ্ঞানীরা দেখছেন, করোনাভাইরাসজনিত নিউরোলজিক্যাল সমস্যার এই তালিকা যেন শেষ হচ্ছে না। করোনায় মৃদু উপসর্গ ছিল এমন অনেকে অভিযোগ করছেন, তারা অনেক কিছু মনে রাখতে পারছেন না। কেউ-বা মানসিক অবসাদ বোধ করছেন। অনেকে আবার কোনো কিছুতে আগের মতো মনঃসংযোগ করতে পারছেন না। তবে যারা করোনা আক্রান্ত হয়ে স্ট্রোকের শিকার হয়েছেন, তাদের পরীক্ষা করে চিকিৎসকরা রীতিমতো ভীতিকর পরিস্থিতি দেখতে পেয়েছেন। করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর দু?’?বার স্ট্রোকের শিকার হয়েছিলেন পল মিলরি। কনসালট্যান্ট নিউরোলজিস্ট ডা. অরবিন্দ চন্দ্রদেবা বলেন, পল যখন হাসপাতালে আসেন, তখন তার মুখে ভাবলেশহীন অভিব্যক্তি। তিনি শুধু এক পাশে দেখতে পাচ্ছিলেন। পল মনে করতে পারছিলেন না, কীভাবে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে হয় বা তার পাস কোড কী। দ্বিতীয় স্ট্রোকের পর পলের মস্তিষ্কের একটি অংশে রক্ত পৌঁছাতে পারছিল না। ডা. চন্দ্রদেবা এ প্রসঙ্গে বলেন, রক্ত জমাট বাঁধার পরিমাণ মাপার একটি সূচক আছে যাকে বলা হয় ডি-ডাইমার। স্ট্রোকের রোগীদের ক্ষেত্রে তা এক হাজার পয়েন্টে উঠে যায়। কিন্তু পলের ক্ষেত্রে এটা ৮০ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছিল, যা অবিশ্বাস্য। তার শরীরে রক্ত জমে আঠালো হয়ে গিয়েছিল। পল অবশ্য সেরে উঠেছেন। তবে তিনি আগের মতো দ্রুতগতিতে পড়তে পারেন না। কখনও কখনও তিনি নানা বিষয় ভুলে যাচ্ছেন।
ড. চন্দ্রদেবার হাসপাতাল এনএইচএনএন-এ দুই সপ্তাহের মধ্যে ছয়জন কভিড-১৯ আক্রান্ত লোককে ভর্তি করা হয়। তাদের স্ট্রোক হয়েছিল। তাদের প্রত্যেকের দেহে রক্ত গুরুতরভাবে জমাট বেঁধে গিয়েছিল।
দি ল্যান্সেট সাইকিয়াট্রির এক জরিপে দেখা যায়, যুক্তরাজ্যের হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া ১২৫ জন কভিড-১৯ রোগীর মধ্যে মস্তিষ্কের জটিলতা দেখা গেছে। তাদের প্রায় অর্ধেকের রক্ত জমাট বাঁধার কারণে স্ট্রোক হয়েছে, অন্যদের ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের প্রদাহ হয়েছে। কারও স্মৃতিভ্রংশের লক্ষণ দেখা দিয়েছে। কারও কারও ক্ষেত্রে দেখা দিয়েছে মানসিক ব্যাধি। সূত্র:বিবিসি