অনলাইন ডেস্ক : ২০১৪ সালের দিকে ভারতে বিক্রি হওয়া ফোনের বেশিরভাগই ছিল আমদানিকৃত। তবে কয়েক বছর ধরে দেশটিতে বেশ পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। ইন্ডিয়া সেলুলার অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক্স অ্যাসোসিয়েশনের (আইসিইএ) মতে, ২০২২ সালে ভারতে বিক্রি হওয়া প্রায় সব ফোনই স্থানীয়ভাবে তৈরি। এসব ফোনের বেশিরভাগই ভারতে অবস্থানরত তাইওয়ানের ফক্সকন বা দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাংয়ের মতো কোম্পানিগুলোর তৈরি। তবে ভারতে ফোন উৎপাদনকারী স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও দ্রুত বাড়ছে।

মাইক্রোম্যাক্স ইনফরমেটিক্স সেই প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি। ২০০৮ সালে মোবাইল ফোনের বাজারে এই প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু হয়। মাত্র দুই বছরের মধ্যে এটি ভারতের বৃহত্তর নির্মাতা কোম্পানির তালিকায় চলে আসে। পাশাপাশি তাদের ফোনগুলো দামেও সস্তা।

মাইক্রোম্যাক্সের সহ-প্রতিষ্ঠাতা রাজেশ আগারওয়াল বলেন, চীনা স্মার্টফোন নির্মাতাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করা বেশ কঠিন। তার প্রতিষ্ঠান যদি নতুন কোনও ফোন নিয়ে আসে, ভারতে সেটি ১০ লাখ বিক্রি হবে বলে আশা করেন তিনি। কিন্তু চীনা কোনও ফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান তা এক কোটি বা তার বেশিও বিক্রি করতে পারে। যা চীনা কোম্পানিগুলোর জন্য বড় সুবিধা।

তবে এটি ভারতের জন্য কেবল শুরু জানিয়ে তিনি বলেন, ব্যাটারি, ক্যাবল ছাড়াও স্ক্রিন ও কম্পিউটার চিপের মতো পার্টসগুলো নিজেদের তৈরী করতে হবে।

ভারত সরকারও এই পদক্ষেপ ত্বরান্বিত করতে চায়। এটি সরকারের নীতিমালাগুলোর একটি, যার লক্ষ্য ভারতের সব ধরনের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানো।

২০২১ সালে টেলিকম ও নেটওয়ার্কিং সরঞ্জামের জন্য প্রোডাকশন লিঙ্কড ইনসেন্টিভ (পিএলআই) স্কিম চালু করেছে ভারতের সরকার। পিএলআই স্কিমটি ভারতে তৈরি মোবাইল ফোনের উপকরণে ভর্তুকি দেয়। এতে প্রতিযোগিতা এবং উৎপাদন— উভয় বাড়তে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

ইন্ডিয়া সেলুলার অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স অ্যাসোসিয়েশনের (আইসিইএ) তথ্য অনুযায়ী, এই মুহূর্তে ভারতীয় ফোনের ১৫ থেকে ২০ শতাংশ যন্ত্রাংশ স্থানীয়ভাবে তৈরি হয়। পিএলআই স্কিমের লক্ষ্য হল এটিকে ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা।

ভারতীয় ফোন নির্মাতা লাভা ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারম্যান হরি ওম রাই ভবিষ্যদ্বাণী করে বলেছেন, মোবাইল ফোন নির্মাতাদের জন্য ভারত পরবর্তী গ্লোবাল হাব হয়ে উঠবে।

তিনি বলেন, সারা বিশ্বের সংস্থাগুলো চীনা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল হওয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন। হরি ওম রাই বলেন, বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ১৮ শতাংশ ভারতে বাস করে। দেশের জিডিপি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এটি বিশ্বের বৃহত্তম বাজারগুলোর একটি হয়ে উঠবে।