স্পোর্টস ডেস্ক : স্বপ্নকে সত্যি করেছে সানজিদারা। কথা দিয়ে কথা রেখেছে ওরা। বাংলার বাঘিনীদের জন্য এমন একটি অভ্যর্থনা যেনো পাওনাই ছিলো। ইতিহাস গড়ে হিমালয় চূড়া থেকে সাফের শিরোপা জিতে দেশে ফিরেছে সাবিনা-কৃষ্ণারা। দেশে ফিরে বিমানবন্দরে উষ্ণ অভ্যর্থনায় সিক্ত হয়ে সানজিদারা চেপেছে তাদের স্বপ্নের ছাদ খোলা চ্যাম্পিয়ন বাসে।
চ্যাম্পিয়নদের জন্য অপেক্ষারত সেই বাসে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি হাতে নিয়ে বিমানবন্দর থেকে চ্যাম্পিয়ন যাত্রা শুরু করেছে সোনার মেয়েরা। ঢাকার রাজপথে অগণিত মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েই বাফুফে কার্যালয়ের দিকে এগিয়ে চলেছে সাবিনা-সানজিদা-মারিয়ারা।
বিমানবন্দর থেকে সাবিনাদের চ্যাম্পিয়ন যাত্রা শুরু হওয়া মাত্রই দেখা যায় ঢাকার রাজপথের দুই ধারে অসংখ্য মানুষ। কেউ ছুটছেন চ্যাম্পিয়নদের বাসের পাশ দিয়ে, কেউ দাঁড়িয়ে হাত নাড়ছেন। বিমানবন্দর থেকে মতিঝিল বাফুফে কার্যালয়, প্রতিটি সড়কে মানুষের জটলা। তাদের সঙ্গে রয়েছে গণমাধ্যম আর ক্রীড়া সংশ্লিষ্টদের গাড়িও।
ছাদ খোলা বাসে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি নিয়ে দাড়িয়ে সানজিদারা। বাংলার সাহসিকারা বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে, হাত নেড়ে অভিবাদন জানাচ্ছেন তাদের জন্য অপেক্ষারত অগণিত জনতাকে।
সাফের ফাইনালে মাঠে নামার আগে আফসোস প্রকাশ করেই সানজিদা তার ফেসবুকে লিখেছিলো, ‘ছাদখোলা চ্যাম্পিয়ন বাসে ট্রফি নিয়ে না দাঁড়ালেও চলবে, সমাজের টিপ্পনী কে একপাশে রেখে যে মানুষগুলো আমাদের সবুজ ঘাস ছোঁয়াতে সাহায্য করেছে, তাদের জন্য এটি জিততে চাই। ‘
সানজিদার ওই এক লাইনেই ঝড় উঠেছে দেশের মানুষের হৃদয়ে। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর আপামর জনসাধারণও এই মেয়েদের জন্য ছাদখোলা বাসের দাবি জানিয়েছিলো।
সানজিদার ওই ফেসবুক পোস্ট চোখে পড়েছিলো যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলের। পরে মন্ত্রণালয় আর বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) যৌথ প্রচেষ্টায় একদিনের ভেতরেই সানজিদাদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ছাদখোলা চ্যাম্পিয়ন বাস। বিআরটিসির একটি ডাবল ডেকার বাসের ছাদের অংশ কেটে ফেলে, সেই বাসটিকেই চ্যাম্পিয়নদের ছবিতে মুড়িয়ে তৈরি হয়েছে সানজিদাদের স্বপ্নের চ্যাম্পিয়ন বাস।
সানজিদারা নেপাল থেকে ফেরার আগেই তাদের জন্য তৈরি হওয়া ছাদখোলা বাসের খবর পেয়ে গেছে। তারাও অপেক্ষায় ছিলো কখন দেশে ফিরে কখন চ্যাম্পিয়ন ট্রফি নিয়ে সেই ছাদখোলা বাসে চ্যাম্পিয়ন যাত্রা করবে। পূরণ হয়েছে তাদের সেই স্বপ্নও।
এর আগে দেশে ফিরেই পেয়েছেন উষ্ণ অভ্যর্থনা পান বাংলার বাঘিনীরা। দুপুর ১ টা ৪৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে সাফজয়ী দলকে বহন করা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি। দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে কাঠমুন্ডু থেকে দেশের উদ্দেশ্যে উড়াল দেয় সানজিদাদের বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের বিজি ৩৭২ ফ্লাইটটি।
বিমানবন্দরে নেমেই অধিনায়ক সাবিনা খাতুনকে দিয়ে কেক কেটে সোনার মেয়েদের বরণ করে নেন বাংলাদেশ সরকারের যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। মিষ্টি আর ফুলের শুভেচ্ছার সঙ্গে বরণ করা হয় সানজিদাদের।
দলের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন আর বাফুফের নারী উইংইয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণকেও শুভেচ্ছা জানানো হয় এসময়।
বিমানবন্দর থেকে কাকলী-জাহাঙ্গীর গেট- পিএম অফিস-বিজয় সরণি- ফকিরাপুল হয়ে বাফুফে ভবন পৌঁছাবে সানজিদাদের চ্যাম্পিয়ন বাস।
চ্যাম্পিয়ন যাত্রা শেষে মতিঝিলে বাফুফে কার্যালয়ে পৌঁছালে সেখানে এই সোনার মেয়েদের অভ্যর্থনা জানাবেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।