টরন্টো: ৩রা জুলাই – টরন্টোর আকাশে ঝকঝকে রোদ আর বাতাসে গ্রীষ্মের মনোরম উষ্ণতা। শিশুদের চিত্রাঙ্কন, যেমন খুশি তেমন সাজো, এলামনাই সদস্যদের আমুদে খেলা, সেই সাথে সুস্বাদু চিকেন রোষ্ট, ঝালমুড়ি, চানাচুর আর রসনা লোলুপকারী রসগোল্লা- রকমারী এমন সব আয়োজনের মধ্য দিয়ে তিনশোরও বেশি অংশগ্রহণকারী প্রাণভরে উপভোগ করেছেন টরন্টোয় বুয়েট এলামনাই এসোসিয়েশন কানাডা আয়োজিত ‘পিকনিক ২০২২’। করোনার ধকল সামলে এই প্রথম প্রায় দু বছরেরও পর এসোসিয়েশন এর সদস্য ও পরিবারবর্গ এই প্রীতিসম্মিলনে মেতে উঠে। উপলক্ষ আর কিছুই নয় অনেকদিন পর একটু ‘ফান, ফুড এন্ড ফেলোশিপ’। স্কারবোরোর প্রাণকেন্দ্রের থমসন মেমোরিয়াল পার্কে অনুষ্ঠিত এই পিকনিকে সকাল দশটা থেকে অতিথিরা জড়ো হতে শুরু করেন। সকাল গড়িয়ে দুপুর হতেই এলামনাই সদস্য, তাদের পরিবারবর্গ, আত্মীয়স্বজন ও অতিথিদের পদচারণায় পিকনিক স্থল সরগরম হয়ে ওঠে। সকালের হালকা খাবারের পর উপস্থিত শিশুকিশোরদের অংশগ্রহণে শুরু হয় বহুল প্রতীক্ষিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। নাজনীন সুলতানা ডেইজি, শুভ্র চক্রবর্তী এবং আমিনুল হক এর পরিচালনায় এই প্রতিযোগিতায় বাবা মাসহ শিশুদের আগ্রহ এবং উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। চিত্রাঙ্কন পর্ব শেষ হলে শুরু হয় বিভিন্ন বয়েসী ছেলে মেয়েদের জন্য ‘যেমন খুশি তেমন সাজো’। এ পর্বে যেমন খুশি তেমন সাজো প্রতিযোগিতায় ক্ষুদে প্রতিযোগীরা রকমারি সাজে উপস্থিত হয়ে সবাইকে দারুন মুগ্ধ করে। এ নিয়ে শিশু কিশোরদের প্রথম পর্ব শেষ হলে দুপুরে পিকনিকের মূল আয়োজন মধ্যাহ্নভোজ পরিবেশন করা হয়। জামাল আহমেদ, আব্দুস সালাম লায়ন, সহিদউদ্দিন হিরণ, মনীষ পাল, তানজিল রহমান, রাফি আলম, জাহাঙ্গীর চৌধুরী, খালেদ মামুন, ইউসুফ তালুকদার, হাসাব উল আলম, মনির আকন, পল্লব ঘোষ, এনামুল কবির উজ্জ্বল প্রমুখের তত্ত¡াবধানে এ পর্বের পরিবেশনা ছিল চমৎকার। জি এম ফাইন ফুডস এর সুস্বাদু পোলাও, চিকেন রোষ্ট, মাটন্ কারী, সালাদ এবং পানীয়সহ খাবারের আয়োজন ও পরিবেশনা ছিল অত্যন্ত চমৎকার।

অনুষ্ঠানস্থলে অভ্যর্থনা ও রেজিষ্ট্রেশন বুথে দায়িত্ব পালন করেন এসোসিয়েশন এর ডিরেক্টর অ্যাডমিন আতিক রহমান, অন্যতম পরিচালক আমিনুল হক, সিনিয়র উপদেষ্টা নুরুজ্জামান এবং কামরুল ইসলাম ও মধ্যাহ্নভোজ শেষ হলে খেলাধূলার দ্বিতীয় পর্বের সূচনা করা হয়। এবার পিকনিকের প্রাঙ্গণ মুখর হয়ে ওঠে সাত থেকে বার বছর ও তদুর্ধ ছেলেমেয়েদের অংশগ্রহণে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায়। এ পর্বে আগত কিশোর-কিশোরীরা বিপুল সংখ্যায় অংশগ্রহণ করে। তুমুল প্রতিযোগিতার মধ্যে কয়েক রাউন্ড বাছাই শেষে বিজয়ীদের নির্বাচন করা হয়। তাছাড়া খেলাধুলার পর্ব শেষ হলে খানিক বিরতির পর দ্বৈত ও একক কন্ঠের পরিবেশনায় মুখর হয়ে উঠে পিকনিক প্রাঙ্গন। শিল্পীরা কখনো একক, কখনো দ্বৈত কন্ঠে পরিবেশন করেন রবীন্দ্রসংগীত থেকে শুরু করে দেশাত্ব ও আধুনিক গান।

বুয়েট পরিবারের শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন গোলাম মহিউদ্দিন, ইয়াসমিন খায়ের, মোনা দেওয়ান, শুভ্রা সাহা এবং আরো অনেকে। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে ছিলেন অন্টারিওর প্রাদেশিক পার্লামেন্ট সদস্য ডলি বেগম, বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল অফিসের কনসাল জেনারেল লুৎফর রহমান, কনসাল এন্ড হেড অফ চ্যান্সেরি মানসুরিন খান চৌধুরী, কনসাল ফাহমিদা সুলতানা। উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানের প্রধান পৃষ্ঠপোষক মহি রহমতুল্লাহ এবং বিশেষ পৃষ্ঠপোষক এ এস আর ইঞ্জিনিয়ার্স এর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়।
সবশেষে অংশ নেয়া সদস্যদের মধ্যে তুমুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে রাফল ড্র এর পুরস্কার বিতরণ করা হয়। পুরস্কার বিতরণ করেন সংগঠনের সভাপতি ড: দেলোয়ার হোসাইন, আরো ছিলেন ড: নাসের উদ্দিন, হাবিবুর রহমান, মঞ্জুর আলম, আলী তারেক। সূর্যাস্তের সাথে অতিথিরা যখন একে একে পার্ক ছেড়ে পার্কিং লটে উঠে আসেন, তখন ও হয়ত কারো মনের মধ্যে গুনগুনিয়ে উঠেছিল একটু আগে শিল্পীদের কন্ঠে শোনা গানের কলি আর বন্ধুত্বের সদ্য আলাপচারিতা।
ছবি : কামরুল ইসলাম। প্রেস বিজ্ঞপ্তি