মূল: কার্ল হফ্ম্যান – ভাষান্তরে: সেলিম হিমাদ্রি
sheemadri@gmail.com
গৌরচন্দ্রিকা
সবে তো মাত্র শুরু
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
সাধাসিধা পাইলট হাউজ – সারেং বসেছেন জোড়াসনে, সামনে কাঠের হুইল, পিতলের থ্রটল। আগে কয়লায় চলতো, বয়লারের তাপ সামলাতে দু’টা ষ্টেইনলেস ষ্টিল লিভার ছিল। তার জায়গায় এখন শোভা পাচ্ছে – জিপিএস এবং কম্পাস। ১৯৯৫ সনে অষ্ট্রিচে কয়লার বদলে ডিজেল পোড়ানো শুরু হয়। রাডারের কোনো ব্যবস্থা দেখলাম না। অষ্ট্রিচ জাহাজটা ভালো কিনা লুতফাসকে জিজ্ঞেস করলাম।
“না!,” লুতফাস ফস্ করে বলে ফেলল, “অনেক পুরান জাহাজ! পেডাল-হুইলের যুগ নেই, একদম কাজের না। পৃথিবীর কোথাও কি আর চলে নাকি এই পদের জাহাজ? কোথাও না। একমাত্র বাংলাদেশে!” বেশ উত্তেজিত হয়ে গেছে। প্রতিটা শব্দ গুলির মতো ছুড়ে মারছে। নিরাশায় মাথা ঝাকাচ্ছে। অষ্ট্রিচের মালিকানা সরকারের, যার হাতে কোনো টাকা নেই। তারপরও, লুতফাসের মতে, মোটামুটি নিরাপদ বা নিরাপত্তা দে’য়া যায়। তার মানে ব্যক্তি মালিকানাধীন লঞ্জ-জাহাজগুলি বেশি ডুবে যায়।
“আমি একটা নতুন, আধুনিক জাহাজ চালাতে চাই। প্যাডেল-ফ্যাডেলের বদলে থাকবে স্ক্র, বোতাম,” লুতফাসের খায়েস। অনেকদিন থেকে পানির উপর ভাসছে। সেই ১৯৭৬ সালে সামান্য খালাসি হিসেবে শুরু করেছিল। বউ-বাচ্চা থাকে ঢাকায়। প্রতি সপ্তাহে রোববার বিকাল থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত সবার সাথে থাকতে পারে। সপ্তাহের শুরুতে খুলনায় চলে আসতে হয়। চাকরী মন্দ না, কিন্তু, বেতন একদমই কম।
“দুবাইতে একই কাজ করলে আমি মাসে দেড় লাখ (প্রায় দুই হাজার ডলার, ২০০৩ সনের হিসাব) কামাতে পারতাম। আর এখানে, সরকার মাসে মাত্র বিশ হাজার টাকা (দু’ শ’ নব্বুই ডলার) দেয়। অত্যন্ত দরকারি জিনিষপত্রও নেই যে যা’ দিয়ে জাহাজটা ঠিকমতো চালাবো। শ্রেফ অভিজ্ঞতার উপর ভরসা করে চালাই। নদীর গতি মতি বোঝা বড় দায়, মুহুর্তের মধ্যে বদলে যায়। জীবনে অনেক কালবৈশাখি, সাইক্লোন দেখেছি। মানুষ-গরু-ছাগল-ঘোড়া ভাসতে ভাসতে সমুদ্রে মিশে যেতে দেখেছি। শুধু দেখেছি আর চিন্তা করেছি। আমার কিছুই করার নেই, সামান্য সাহায্য পর্যন্ত করতে পারি না। শুধু কাইন্দা বুক ভাসাইতে পারি।”
…
পাইলট হাউস থেকে বেড়িয়ে অষ্ট্রিচের ছাদের উপর পা ঝুলিয়ে বসেছি। নদী বয়ে যায়। পরন্ত বিকাল, উপরে এক নৈস্বর্গীক নিরবতা। নদীর পানি আকাশের রং মেখে রূপালী-নীল, তটরেখায় সবুজ, সতেজ বনানী। সূর্যের তেজ এখনও প্রখর, কিরণের ঝাঁঝ তীব্র। কপালে, পিঠে ঘাম গড়িয়ে পড়ছে। ছাদের উপর আমি একদম একা না। সিঁড়ি ভেঙ্গে একটা ছেলে উপরে উঠতে আমাকে দেখে এগিয়ে এসেছে। জিন্সের প্যান্ট, টি-শার্ট; কাঁধে স্কুলব্যাগ। আর একটা ফট্্কার পাল্লায় পড়ার জন্য তৈরি হয়ে গেছি। তবে, রকিবুল ইসলাম একদম অন্যরকম। বয়স মাত্র উনিশ। বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকেছে। খুব স্মার্ট, উজ্জল, চকচকে চোখজোড়া। একটা করুণ কাহিনী শোনালো – বাংলাদেশের মতো দেশে এই ধরনের কাহিনীর অভাব নেই, নতুন না।
রকিবুলের বাবা ছিলেন স্থানীয় এক হাইস্কুলের হেড মাষ্টার।
“খুব নীতিবান, অতিরিক্ত রকমের সৎ ছিলেন। সব সময় সত্যবাদীতায় বিশ্বাস করতেন। আমাদের বলতেন, টাকা-পয়সাই জীবনের সবকিছু না, কখনো লোভী হবে না।”
তার বাবাকে সততার পরীক্ষা দিতে হয়েছে প্রতি পদে পদে।
“বাবা তাঁর পদোন্নতি পাশ করাতে গেলে লোকজন ঘুষ চাইত। কিন্তু, উঁনি ঘুষ দিতে নারাজ। মন্ত্রণালয়ের কর্মচারিরা তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার ক্ষমতা না রাখলেও ইচ্ছেমত বিভিন্ন জায়গায় বদলী করতে পারে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে বাবার জান বের করে দিয়েছে। ইচ্ছেমত ঘন ঘন বদলীর আদেশ চাপিয়ে দিয়েছে। চাকরী টিকিয়ে রাখতে বাধ্য হয়ে বাবা সাইকেলে করে দূর দূরান্তের স্কুলে হাজিরা দিতেন। একবার বন বিভাগে সুপারিন্টেন্ডের পদে যোগ দে’য়ার প্রস্তাব দেয়া হলো। পদটা লোভনীয় হলেও দুর্নীতির আখড়া। বাবা সেই কারণে সবিনয়ে ফিরিয়ে দিয়ে তাঁর এক বন্ধুকে চাকরিটাতে ঢুকিয়ে দেন। বাবার সেই বন্ধু ঘুষ-দুর্নীতি করে এখন লালে লাল। ঢাকায় চার চারটা বাড়ির মালিক।”
গড্ডালিকায় গা না ভাসানোর খেসারত দিয়েছেন চরমভাবে। রকিবুলের চৌদ্দ বছর বয়সে বাবা ক্যান্সারের কাছে আত্মসমর্পন করে মারা যান।
“আমরা খুবই গরীব,” রকিবুলের জীবন কাহিনীর খন্ডাংশ, “প্রাইভেট মাষ্টারের বেতন জোগানো তো দূরের কথা, স্কুলের খরচই দে’য়ার সামর্থ্য ছিল না।”
বাড়িতে বসে নিজে নিজেই পড়াশুনা চালিয়ে গেছে। পয়সার অভাবে এক বছর স্কুলে যাওয়া হয় নি। কোনোকিছুই রকিবুলকে দমাতে পারেনি। অদম্য জিদ, স্প্রিহা, মনোবল দিয়ে সব প্রতিক‚লতা মোকাবেলা করে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ক্লাসের মধ্যে তৃতীয় হয়। এখন ইউনিভার্সিটিতে স্নাতক পড়ছে, ভবিষ্যতে স্নাতকোত্তর শেষ করতে চায়।
একটু আতঙ্কিত হয়ে গেছি – রকিবুলের জীবন-কাহিনী শুনে। এই বুঝি দারিদ্র্যতার দোহাই দিয়ে টাকা-পয়সা চাওয়া শুরু করবে। একটা ভিসা জোগার করে দিতে আব্দার করবে। তার মতো অনেকেই এ’রকম আব্দার, কাকুঁতি-মিনতি করছে – আমি কিছুই করতে পারি নি। তাদের অনুরোধ আমার ভিতর অপরাধবোধের জন্ম দেয়। কিছুই করতে না পারার ব্যর্থতাবোধে নিজের উপর বিরক্ত। ভাগ্যিস, সাহায্য চেয়ে আমাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ঢেলে দেয় নি।
দিনের শেষে গোধূলির ঘনঘটা, জল-স্থলের পার্থক্য কয়েক মুহুর্তের মধ্যে বিলীন। আলো-আঁধারের চক্রে ছায়া-কায়ার প্রতিচ্ছবি নদীর পানিতে তলিয়ে যায়। রকিবুল আবার তার ছোট্ট জীবনে আশা-আকাঙ্খার বেসাতি খুলে ধরেছে। ভালো লাগা, প্রেম-পছন্দ, স্বপ্ন, সংগ্রাম – জীবন যাপনের নূন্যতম প্রেরণা সম্বল করে এই বিশাল পৃথিবীতে নিজের জন্য একটু জায়গা করে নিতে চায়। এক মেয়ের সাথে তার পরিচয় হয়েছিল। সামান্য বন্ধুত্বের ছোঁয়া মাত্র পেখম মেলতে শুরু করেছিল। বান্ধবী বা প্রেমিকা বলা যায় না। মোবাইলে দু’জনের রোমান্টিক টুক্্টাক কথা-বার্তা চলতো। তাও যৎ সামান্য। ব্যাস্, ওটুকুই। কালেক্রমে তার মা’র পছন্দের কোনো মেয়েকেই বিয়ে করতে হবে।
পাশ্চাত্য কৃষ্টিতে বড় হবার কারণে নিজের পছন্দমতো মেয়েকে বিয়ে না করে কেন মা’য়ের পছন্দের মেয়েকে বিয়ে করতে হবে – ব্যাপারটা খোলাসা করতে বললাম।
“অবশ্যই মা’য়ের পছন্দের মেয়েকেই বিয়ে করতে হবে,” খুব ভক্তিভরে উত্তর দিল। গুরুত্ব বোঝাতে ভ্রু কুঁচকে রেখেছে, “এছাড়া আর কোনো রাস্তা খোলা নেই।”
প্রায় মাঝ রাতে জাহাজ খুলনায় ভিড়েছে। অষ্ট্রিচ থেকে নামতে আবার সেই ধাক্কাধাক্কি, নড়বড়ে গ্যাংপ্ল্যাঙ্কে সাবধানে পা ফেলতে হয়। ঘাটের বাইরে অন্ধকার, ময়লা, ভাঙ্গাচোড়া রাস্তায় দাঁড়িয়েছি। খুলনায় তিন দিন কেটে গেছে, মনে হল, আমি পৃথিবীর শেষ প্রান্তে চলে এসেছি। আজ কী বার, সপ্তাহের কোন্্ দিন – সবকিছুর খেই হারিয়ে ফেলেছি। আমার আকাঙ্খার সেই দুর্গম, প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্বাদ একটু একটু করে পেতে শুরু করেছি – নাম না জানা, পৃথিবীর কোনো এক কোণে আবার একাকিত্বের যাতনা জাগিয়ে তুলছে।
খুলনায় বিদেশি কেউ ঘুরতে আসে না, আসলেও তা হয়তঃ কালেভদ্রে। ভেবেছিলাম, রকেটে করে খুলনা পর্যন্ত আসব, তারপর এখান থেকে কোনো লঞ্চে করে আরও দক্ষিণের দিকে, একদম সাগরের কাছে। হোটেলের এক কর্মচারির কাছ থেকে লঞ্চঘাটের ঠিকানা জেনে নিয়ে রিক্সায় উঠে বসলাম। রাস্তায় গাড়ি অনেক কম হওয়াতে কোলাহলও কম। শীত-শীত ভাব, হালকা কুয়াশা, ধূলা মিশে আছে বাতাসে। নদীর কাছাকাছি যতই আসছি ততই রিক্সার গতি কমে আসছে। রিক্সাওয়ালার হাঁপ ধরে গেছে। দরদর করে ঘাম ঝরছে, পেডাল মারায় তেমন জোর নেই। হেঁটে এর চেয়ে দ্রুত যাওয়া যায়। বেচারীর দোষ নেই – পুরো রাস্তা খানা-খন্দে ভরা। দু’পাশে লাল,নীল, হলুদ রংয়ের ট্রাক লাইন করে রাখা। ঠেলাগাড়ির উপর বিশ ফুট উঁচু ব্যারেল, পিভিসি পাইপের পাহাড়। ছাড়া গরু-ছাগল মনের আনন্দে আনারস খোঁসা, আখের ছিব্্ড়া, আবর্জনার হাবিজাবি খায়, জাবর কাটে। শিটমেটাল, ষ্টিলের ক্যাবিনেট, বেডফ্রেমের খোলা দোকান, সামনে দেদারছে ওয়েল্ডিং কাজ চলছে। পাশ দিয়ে চলছে পাজামা-পাঞ্জাবী, লুঙ্গি পড়া পুরুষ, বোরকায় আপাদমস্তক ঢাকা মহিলা। যেখানে-সেখানে ইট-বালি-সুড়কির স্তুপ। খোলা ড্রেনের উৎকট গন্ধ। মানুষ আর মানুষ – সব সময়, সব জায়গায়।
রিক্সা থেকে নেমে গেছি। ঘাটের কোথাও টিকেটের অফিস খুঁজে পাচ্ছি না। টুকটাক ইংরেজি জানা লোকজনকে জিজ্ঞেস করেও কোনো লাভ হলো না – কেউই বলতে পারে না টিকেট কোথায় পাওয়া যায়। গন্ডায় গন্ডায় লঞ্চ ঠিকই ভিড়ে আছে কিন্তু কেউ কিছু জানে না, কোন্্ লঞ্চ কোথায় যায়, কোথায় টিকেট কিনতে পাওয়া যাবে, কার কাছে গেলে সঠিক খবর পাওয়া যাবে। কাউকে কিছু জিজ্ঞেস করলে হা করে তাকিয়ে থাকে। লোলচর্ম এক বৃদ্ধ, মুখে কয়েকটা মাত্র দাঁত আস্ত আছে, পান-চুনের অত্যাচারে কালশিটে লাল। আমার পন্ডশ্রমে সহানুভূতি দেখাতে মাথা দোলাচ্ছেন। আমি যেন স্বপ্নের ভিতর দিয়ে হাঁটছি। স্বপ্ন না, দুঃস্বপ্ন দেখছি – কারো সাথে ঠিকমতো কথা বলতে পারি না, বুঝাতে পারি না, মানব সমপ্রদায়ের সাথে যোগাযোগ করার কায়দা ভুলে গেছি।
হাল ছেড়ে দিয়ে সোজা হোটেলে। মিল্টন নামের এক কর্মচারিকে সাথে নিয়ে আবার রিক্সায় উঠলাম। মিল্টনের পড়নে হোটেলের ফর্মাল ড্রেস – কালো প্যান্ট, সাদা শার্ট, টাই। গায়ে গা ঠেকিয়ে রিক্সায় বসতে হয়। আমাদের দু’জনের ওজন কম করেও ৩০০ পাউন্ডের মতো হবে – রিক্সাওয়ালার শরীর ঘামে ভিজে গেছে।
হেঁটে রওনা হলে কেমন হয় – মিল্টনকে বুদ্ধি দিতে মাথা ঝাঁকিয়ে এক কথায় নাকচ করে দিল – নো!
আবার সেই লঞ্চ-ঘাটে। মিল্টন ঠিকই খুঁজে খুঁজে আস্তানাটা বের করে ফেলেছে। ছাউনির নিচে ছেঁড়াখোড়া মলিন একটা খাতা নিয়ে তিনজন লোক বসে আছে। বাংলায় কথা চালাচালির সাথে সমানে মাথা ঝাকাচ্ছেন।
“আপনার উদ্দেশ্যটাই বেচারীরা বুঝে উঠতে পারছে না,” মিল্টন আমাকে বোঝাতে চেষ্টা করছে,“ওঁনারা সবাই অল্প-শিক্ষিত, অজ্ঞই বলতে পারেন। তাঁদের মাথায় ঢুকছে না কেন আপনি এই বিদেশ-বিভ‚ঁইয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এখানেই বা কোন্ কারণে এসেছেন।”
অবশেষে, সবকিছু খোলাসা হতে শুরু করেছে। আরও দক্ষিণের দিকে যাওয়ার মতো কোনো লঞ্চ-ইষ্টিমার বা জাহাজ নেই; এমনকি, এত দূরে কোনো লঞ্চই যায় না। যে ক’টা লঞ্চ আছে তার সবগুলির দৌঁড় উত্তরের দিকে – ঢাকার দিকে, ছোটখাট রুট ধরে চলে। একটাও সরাসরি ঢাকায় যায় না। আশেপাশের সব এলাকার ঘাটে ঘাটে থামবে, আবার খুলনায় ফিরে আসবে। ঢাকায় ফিরতে হলে সবেধন নীলমনি ‘অষ্ট্রিচ’ ছাড়া উপায় নেই। তার মানে, রকেটের জন্য আরও তিন দিন ভেড়েন্ডা ভাজতে হবে। খুলনা থেকে ছাড়বে ভোর তিনটায়। বেশ, বেশ!
“ট্রেনে করে যেতে চান নাকি?” মিল্টনের উপদেশ।
ঘাটের পাশেই ট্রেন ষ্টেশন। যেই কথা সেই কাজ। ষ্টেশনে বিশাল বপুঁর এক লোককে খুঁজে পেলাম। সামনে তিন ফুট লম্বা বাঁধাই করা একটা লেজার বই। রুমটায় আদ্যিকালের সাজসরঞ্জাম, যন্ত্রপাতিতে ভর্তি। প্রতি রাত ৮ টায় ট্রেন ছাড়ে।
খুলনায় আরও দু’দিন কাটিয়ে দিলাম। এ’কয়দিনে আমি মোটামুটি বিখ্যাত হয়ে গেছি, কেউকেটা গোছের। রাস্তায় হাঁটতে গেলে বেশিদূর যেতে পারি না। একটু পর পরই কেউ না কেউ পথ আগলে আলাপ জুড়ে দেয়।
কোন্্ দেশ থেকে এসেছি? কেন খুলনায় এসেছি? বারাক ওবামা কি আসলেই মুসলমান? আমি কী কাজ করি? (চলবে)