অনলাইন ডেস্ক : দু’দিন আগের রক্তক্ষয়ী এক সংঘর্ষের পর জেরুজালেমের পবিত্র আল-আকসা মসজিদে আবারও ইসরায়েলি বাহিনী প্রবেশ করেছে। রোববার ফজরের নামাজের সময় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সঙ্গে আল-আকসা চত্বরে ফিলিস্তিনিদের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত ১০ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন বলে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ বলছে, পবিত্র ওই স্থাপনায় ইহুদিদের নিয়মিত পরিদর্শনের অংশ হিসেবে রোববার আল-আকসা ভবনে প্রবেশ করে ইসরায়েলি বাহিনী। ফিলিস্তিনিরা সেখানে পাথর মজুত করেছিল এবং তারা ইসরায়েলি সৈন্যদের প্রবেশে বাধা দেয়।

মসজিদের বাইরের এলাকা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে দিয়েছে ইসরায়েলের পুলিশ। তবে মসজিদের ভেতরে আরও কয়েক ডজন ফিলিস্তিনি অবস্থান নিয়েছেন। ফিলিস্তিনের মেডিক্যাল কর্মীরা বলেছেন, ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ১৭ জন আহত হয়েছেন।

ফিলিস্তিন রেড ক্রস বলছে, রাবার বুলেট এবং লাঠিপেটায় আহত অন্তত তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, মসজিদ চত্বরে রেড ক্রসের সদস্যদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। তবে চত্বর থেকে একটু দূরে বাব আল-আসবাত এলাকার কাছে আহতদের চিকিৎসা দিয়েছে রেড ক্রস।

পুলিশ বলছে, ওই এলাকা পরিদর্শনে যাওয়া ইহুদিদের বহনকারী দু’টি বাসের জানালা ভাঙচুর করেছে ফিলিস্তিনিরা। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। ভাঙচুরের এই ঘটনায় ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

কট্টর-ডানপন্থি ইহুদি গোষ্ঠী রিটার্ন টু টেম্পল মাউন্ট সম্প্রতি ইহুদি ধর্মীয় রীতি মেনে কেউ আল-আকসা মসিজদের ভেতরে ছাগল কোরবানি দিতে পারলে তাকে নগদ অর্থ পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেয়। কট্টরপন্থি এই গোষ্ঠীর এমন ঘোষণার পর মসজিদ চত্বরে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে ইহুদিদের উত্তেজনা দেখা দেয়।

আলজাজিরার প্রতিনিধি ঘোনিম বলেছেন, রিটার্ন টু টেম্পল মাউন্টের ঘোষণা অনুযায়ী ছাগল কোরবানির ঘটনা না ঘটলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এটি ভাইরাল হয়ে যায়। আর এই ঘোষণাই সাম্প্রতিক উত্তেজনায় ঘি ঢেলেছে।

আল-আকসা মসজিদে উত্তেজনার দায় ইসরায়েলের ওপর চাপিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। ফিলিস্তিনি মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেইনাহ এক বিবৃতিতে বলেছেন, আমরা মার্কিন প্রশাসনকে তাদের নীরবতা ভাঙার এবং এই আগ্রাসন বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি। এটি পুরো অঞ্চলকে উত্তেজিত করবে।

এর আগে, গত শুক্রবার জুমআর নামাজের সময় আল-আকসা মসজিদে ঢুকে গ্রেফতার অভিযান পরিচালনা করে ইসরায়েলি বাহিনী। গত ২০ বছরের বেশি সময় পর এই মসজিদ চত্বরে মাত্র এক ঘণ্টার অভিযানে ৩ শতাধিক মানুষকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ১৫৮ ফিলিস্তিনি আহত হন।

শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, মসজিদ এলাকায় ইসরায়েলি পুলিশ টিয়ার গ্যাস এবং স্টান গ্রেনেড নিক্ষেপ করছে। অন্যদিকে, ফিলিস্তিনিরা পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়ে মারছে।