অনলাইন ডেস্ক : মন্ট্রিলে গাড়ি চোরদের দৌরাত্ম বাড়ছে। অপরাধিরা নিত্যনতুন কৌশলে গাড়ি চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। ফলে সেখানে গাড়ি চুরির ঘটনা বেড়েই চলেছে। চুরি হওয়া গাড়ির মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় রয়েছে জাপানি এস ইউ ভি ও জনপ্রিয় হোন্ডা সি আর ভি মডেলের গাড়ি। মন্ট্রিল পুলিশের হিসাব অনুযায়ী ২০২১ সালে শহরে মোট ৬ হাজার ৫৭২টি গাড়ি চুরির ঘটনা ঘটেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৩৭ শতাংশ বেশি।
মন্ট্রিলের বাসিন্দা হুগো বোর গোইন বলেন, গত জানুয়ারির শেষ দিকে তার হোন্ডা সি আর-ভি গাড়িটি চুরি হয়ে যায়। তিনি স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে গাড়িতে করে বাসার কাছে একটি পার্কে বেড়াতে গিয়েছিলেন। নির্দিষ্ট স্থানে গাড়ি রেখে তারা পার্কে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে ফিরে দেখেন একজন তাদের গাড়িটি নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, আমাদের চোখের সামনে প্রিয় গাড়িটি ধীরে ধীরে দূরে চলে গেল। শুধু তাকিয়ে থাকা ছাড়া আমাদের কিছু করার ছিল না।
হোন্ডা সি আর ভি মডেলটি হল কুইবেকে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া গাড়িগুলোর একটি। বেশ কয়েকটি মডেলের গাড়ির ডিলারশিপের মালিক জিন-ক্লদ গ্রাভেলের মতে জনপ্রিয়তার কারণেই এটি চোরদের কাছে এত আকর্ষণীয়। কারণ এটি যত বেশি বিক্রি হয় তত এর উৎপাদন বাড়াতে হয় এবং যন্ত্রাংশের চাহিদা বাড়ে। ফলে চোরেরা গাড়িটি চুরির পর এর যন্ত্রাংশ সহজেই বিক্রি করতে পারে। গাড়ির বীমা পরিশোধ ও অর্থ আদায়ে সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠান ইকুইট অ্যাসোসিয়েশনের হিসাব অনুযায়ী পর পর ২য় বছর মন্ট্রিলে গাড়ি চুরির ঘটনা বেড়েছে। ফলে কোম্পানির বীমা প্রিমিয়ামও আকাশচুম্বী হয়েছে। এক হিসাবে দেখা গেছে এস ইউ ভি মডেলের গাড়ির প্রিমিয়াম প্রায় ৩ গুণ বেড়েছে।
একজন সাবেক পুলিশ অফিসার চার্লস রবাট যিনি বর্তমানে নিরাপত্তা সংস্থা ইন্টেলি ফোর্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট তিনি বলেন, মহামারির পর জীবন স্বাভাবিক হওয়ার সাথে সাথে গাড়ি চুরি বেড়েছে। আমাদের কাছে আগের চাইতে এখন অনেক বেশি অভিযোগ আসছে। আমরা কিছু গাড়ি হয়তো পরিত্যাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে দিতে পারছি। কিন্তু বেশির ভাগেরই কোন হদিস পাওয়া যায় না। চোরেরা সম্ভবত গাড়িগুলো ভেঙ্গে যন্ত্রাংশ হিসেবে বিক্রি করে দেয়। এসব যন্ত্রাংশের চাহিদা বিদেশেও প্রচুর।
কানাডায় চুরি হওয়া গাড়ির যন্ত্রাংশ বিদেশে পাচার করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা রাশিয়া, বৈরুত, লেবানন ও নাইজেরিয়াসহ বিভিন্ন দেশে কুইবেক লাইসেন্সের প্লোটযুক্ত গাড়ির যন্ত্রাংশ পেয়েছি।’ রবাট বলেন, মহামারির কারণে বিশ্বব্যাপি গাড়ির যন্ত্রাংশের সংকট দেখা দিয়েছে। চোরেরা এই সুযোগটাকে কাজে লাগাচ্ছে। সূত্র : রেডিও কানাডা