কামাল কাদের : রবি-উল-হক পুরানো ঢাকার লালবাগের ছেলে। ঢাকার জগন্নাথ কলেজের বি,এ, ক্লাসের ছাত্র। সময়টা যখন, তখন জগন্নাথ কলেজটি একটি বেসরকারী কলেজ ছিল। কলেজটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তিত হবার কথা তখন কল্পনার বাইরে। কবে থেকে যে সে বি,এ, ক্লাসে পড়ছে তা কলেজের কোনো ছাত্রই জানে না, কারণ রবির আর বি,এ, পাশ করা হচ্ছে না।
রবি ছাত্র হিসাবে খারাপ নয়। আসল কথা লেখাপড়ার প্রতি তার বিশেষ কোনো মনোযোগ নেই। কখনো মন চাইলে পরীক্ষা দেয়, আবার মন না চাইলে পরীক্ষা দেয় না। অর্থাত তার মন মেজাজের উপরই সব কিছু নির্ভর করে। এই মনের জের ধরে সে বছর পর বছর বি,এ, ক্লাসে পড়ে রয়েছে।
তাদের আদি নিবাস ঢাকা শহরের একটু বাইরে জয়দেবপুরে। তবে বাপ্-দাদারা সেই পাকিস্তান আমল থেকেই ঢাকার বসতি। সেই জন্য সে নিজেকে “ঢাকাইয়া” পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দবোধ করে। তাছাড়া ঢাকাইয়া পরিচয়ে তার কেন যেন একটা অহংকারও আছে, ঢাকা তো বাংলাদেশের ক্যাপিটাল। অবসর সময়ে গল্প-কবিতা লেখে আর কলেজে ছাত্র রাজনীতি করে। ছাত্র রাজনীতিতে সে লীডার এবং এ কাজেই তার অধিকাংশ সময় কাটিয়ে দেয়। কলেজ প্রাঙ্গনে অন্যান্য ছাত্রদের সাথে কষে আড্ডা মারে আর তার সাথে, মন্ত্রী- এম,পিদের চোদ্দ গোষ্ঠী উদ্ধার করে। সময়ে অসময়ে কাপের পর কাপ চা খায় এবং ফাঁকে ফাঁকে সস্তা দরের সিগারেট ফোঁকে।
কেউ যদি স্বাস্থ সমন্ধে উপদেশ দিতে চায়, তাহলে তাকে এক গাল কথা শুনিয়ে দেয়। ভয়ে আর এ বিষয়ে কেই অগ্রসর হয় না।
ইতিমধ্যে ঢাকার সাহিত্য সমাজে এবং পাঠকদের মাঝে তার কিছুটা পরিচিতি হয়েছে, নানা পত্র প্রত্রিকায় লেখাও ছাপা হচ্ছে।
ফলে বাংলাদেশের সাহিত্যের গুণীজনদের নিকট তার জনপ্রীয়তা দিন দিন বাড়ছে।
রবির রাজনীতির মধ্যে একটা মস্তবড় গুণ হলো, সে কলেজের যে কোনো ছাত্রের যে কোনো অসুবিধায় যথাসাধ্য সহায়তার চেষ্টা করে। এই যেমন কারো কলেজের বেতন বকেয়া পড়েছে, প্রিন্সিপাল সাহেবকে ধরে কিছুটা বেতন মওকুফ করে দেয়া, অথবা আর্থিক অসুবিধার জন্য কোনো ছাত্র পরীক্ষার ফি দিতে পারছে না তার জন্য সুপারিশ করা, মফস্বল থেকে শহরে আসা ছেলেদেরকে কলেজ ভর্তি অথবা থাকার ব্যাপারে সহায়তা করা ইত্যাদি, ইত্যাদি। কারো কলেজের ব্যাপারে কোনো অসুবিধা হলেই, চলে যাও রবি ভাইয়ের কাছে, সব “মুশকিল আসান” হয়ে যাবে।
কলেজের সবাই রবিকে সমীহ করে চলে। তার চোখের সামনে কত ছাত্র ভর্তি হলো, আবার পাশ করে বেরিয়ে গেলো। কেউ কেউ রবির শিক্ষক হয়ে কলেজে যোগদান করলো। অনেক শিক্ষকরা রবিকে, “রবি ভাই” বলে ডাকে। রবি ভাই তো, সবার প্রিয় ভাই।
একদিন কলেজ প্রাঙ্গনে ছাত্রদের মাঝে একটা জরুরি বিষয়ে বক্তৃতা দেবার সময় হঠাত করে রবির পেটের মধ্যে ভীষণ ব্যথা শুরু হলো। ব্যথার তীব্রতায় প্রায় অজ্ঞান হবার অবস্থা। ছাত্ররা তরিঘড়ি করে ঢাকা সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (পুরানো মিটফোর্ড হাসপাতাল) নিয়ে গেলো। হাসপাতালে ইমার্জেন্সি ডিপার্টমেন্টে ভর্তি করার পর, হাউস ফিজিসিয়ান ডাক্তার অনামিকা মহসিনের তত্বাবধানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হলো। ইনভেস্টিগেশন এবং বিভিন্ন পরীক্ষার পর রবির লিভারে গন্ডগোল ধরা পড়লো। অর্থাত লিভার থেকেই পেটের ব্যথাটার উত্পত্তি। ডাক্তার অনামিকা মহসিন রবিকে জানালো যে, খালি পেটে সময়ে অসময়ে চা আর সিগারেট খাওয়ার ফলেই লিভারের এই খারাপ উপসর্গ দেখা দিয়েছে। ডাক্তার মহসিন আরো জানালো যে, ওষুধ পত্র তো খেতেই হবে, তার সাথে চা এবং সিগারেট খাওয়া ছাড়তে হবে। তা না হলে অদূর ভবিষ্যতে রোগটা কঠিন ব্যাধি হয়ে উঠবে এবং রবির জীবনে মহা বিপদ ডেকে আনবে।
ইতিমধ্যে রবির অসুস্থতার খবর শুনে সাংবাদিকরা হাসপাতালে ভীড় জমিয়েছে। সাহিত্য সমাজের কলাকুশলীরা এই উঠতি তারকার সুস্থতা কামনা করে হাসপাতালে ছুটাছুটি করছে। এই ছুটাছুটি দেখে ডাক্তার অনামিকা মহসিন তো রীতিমতো অবাক। ব্যাপারখানা কি? ডাক্তার মহসিনের আর বেশিক্ষণ ধাঁধায় থাকতে হলো না। সাংবাদিকদের মারফত তিনি জানতে পারলেন, তার রোগী আর কেউ নন, ঢাকার ট্যালেন্টেড সাহিত্যিক “উদয়ন চৌধুরী” (রবি-উল-হকের সাহিত্যিক নাম)। ব্যাপারটা ডাক্তার মহসিনের কাছে অবিশ্বাস মনে হচ্ছিলো। কারণ তিনি নিজেও কথা সাহিত্যিক উদয়ন চৌধুরীর (রবি-উল-হক) একজন ভক্ত।
তিনি কখনো উদয়ন চৌধুরীকে চাক্ষুষ দেখেননি। আর উদয়ন চৌধুরীর কোনো ছবি বাজারে বা সংবাদপত্রে প্রকাশ হয়নি। রবির সাথে সংবাদপত্র এবং মিডিয়ার সাথে সমঝোতা ছিল যে, তার ছবি কোথায়ও ছাপানো হবে না অথবা দেখানো যাবে না। অর্থাত সে এ সমস্ত পাবলিসিটির আড়ালে থাকতে চায়। তার অভিমত হলো, সাহিত্য কর্ম দিয়ে পাঠক সমাজ তাকে চিনবে, তার ছবি দিয়ে নয়। ডাক্তার মহসিনের কাছে মনে হলো এ যেন রীতিমতো একটা নাটক। তার প্রিয় কথাসাহিত্যিক এ মুহূর্তে তার রোগী। ভাবতেই অসম্ভম ভালো লাগছে। এতো সুন্দর চেহারা, তার সাথে এতো সুন্দর লেখা-লেখি, এ যেন মানিক জোড়। প্রথম দেখাতেই প্রেমে পড়ার মতো অবস্থা। একান্ত ভাবে মনের কথা মনেই রয়ে গেলো, লজ্জায় কিছু বলা হলো না। শুধু রবির মুখের দিকে চেয়ে হাসি মুখে বললেন, “আপনি দেখছি অনেক জনপ্রিয়। এই জনপ্রীয়তায় আপনাকে অসুখ থেকে তাড়াতাড়ি সরিয়ে তুলবে। আপনাকে বেঁচে থাকার সাহস যোগাবে। স্বাস্থ্যের প্রতি বিশেষ নজর দেবেন। আপনার প্রতিভা বিকশিত করার জন্য আপনাকে বেঁচে থাকতে হবে, সুস্থ থাকতে হবে।”
ডাক্তার মহসিনের কথাগুলি শুনে রবির অনেক ভালো লাগলো। রবির ও সুন্দরভাবে হেসে ডাক্তার মহসিনের কথায় সায় দিলো। ডাক্তার মহসিনকে কি রবির ভালো লাগলো? কি আবোল-তাবোল ভাবছে, কোথায় ডাক্তার মহসিন একজন চিকিত্সক, আর কোথায় সে বি, এ, ফেল করা ছাত্র।
যথারীতি রবি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলো এবং ডাক্তার মহসিনের পরামর্শমতো নিজের শরীরের উপর যত্ন নেয়া শুরু করলো। ইতিমধ্যে রবির শারীরিক খবরা-খবরের সূত্র ধরে রবির এবং ডাক্তার অনামিকা মহসিনের মাঝে ঘনিষ্ঠতা বেড়ে উঠলো। একজন আরেকজনের মনের কাছা কাছিতে এসে পড়লো।
কিন্তু দুজনের সে একই সমস্যা। কেউ কাউকে বলতে পারছে না, “আমি তোমাকে ভালোবাসি”।
রবি বলতে পারছে না, কারণ সে বি, এ, ফেল। ভদ্র ভাষায় বলা যায়, সে বি, এ, ক্লাসের ছাত্র।
অনামিকা বলতে পারছে না পরিবারের লোকজন ব্যাপারটা কি ভাবে নেবে? কোন দুশ্চিন্তায় তাদেরকে ফেলে দেবে। একজন মেধাবী উচ্চ শিক্ষিত ডাক্তার হয়ে সে বাড়ির আপনজনদেরকে কি ভাবে জানাবে যে, সে একজন বি, এ ফেল করা ছাত্রকে ভালোবাসে। তাই ভাবাই সার।
সময় তো কারো জন্য বসে থাকে না। ওদের দুজনের বেলায়ও তাই হলো।
অনামিকা একটা সরকারি বৃত্তি নিয়ে উচ্চ শিক্ষার জন্য বিলাতে চলে গেলো, আর রবি মন ক্ষুন্ন করে লেখাপড়া ছেড়ে দিলো। রবির ভাগ্য ভালোই বলতে হবে। সে ঢাকার বাইরে একটা উচ্চ বিদ্যালয়ে বাংলা শিক্ষকের চাকরি পেয়ে সেখানে চলে গেলো। তারপর দুজনের সাথে দুজনের কোনো যোগাযোগ রইলো না।
মফস্সল শহরে মাস্টারি করে, বাকি সময়গুলিতে সে তার সাহিত্য চর্চা বাড়িয়ে দিলো। অচিরেই সে দেশের সাহিত্য অঙ্গনে নিজের প্রতিভার বদৌলতে একজন নামি এবং দামি লেখক হয়ে উঠলো। টাকা-পয়সা, মান-সম্মান প্রচুর হলো, কিন্তু বিয়েটা করার আর সময় হয়ে উঠলো না। হয়তো ইচ্ছে করেই সে ঐ দিকে পা মাড়ায়নি।
এমনি করেই প্রায় তিরিশটি বছর পার হয়ে গেলো। স্কুলের শিক্ষকতা থেকে অবসরও নেয়া হয়েছে। তবে লেখালেখি সে সমানে চালিয়ে যাচ্ছে। তার জীবনের সব আশা-আকাঙ্খা, দুঃখ-বেদনা সবকছুই ঐ সাহিত্য সাধনায়। সে আজ সমাজে প্রথিষ্ঠিত। উদয়ন চৌধুরীকে সমগ্র বাংলাদেশে পাঠক এক নামে চেনে। সে এক অনন্য ব্যক্তিত্ব। একদিন সে ঢাকা বিশ্ববিদালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে তার প্রকাশকের মারফত একটা চিঠি পেলো। চিঠিতে তাকে বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদানের জন্য সম্মানসূচক “ডক্টর অফ লিটারেচার” ডিগ্রী দেবার প্রস্তাব করা হয়েছে এবং সেটা তাকে গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। উদয়ন চৌধুরী ওরফে রবি-উল-হক সেই প্রস্তাবে বিনীতভাবে রাজি হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের কাছে তার সম্মতির কথা জানালো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে সমাবর্তনের দিন রবিকে নিয়ে বিরাট আয়োজন করা হলো। ডি, লিট্, সার্টিফিকেট নেবার সময় জীবনে এই প্রথম তার চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়লো। কেই জানলো না তার মনের কথা। যে ছেলে জীবনে বি, এ, পাশই করতে পারেনি, তাকে আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রি দেয়া হলো। জীবনটা এমনিই হয়।
সমাবর্তন শেষে প্রশ্ন আর উত্তরের পালা শুরু হলো। ছাত্ররা রবিকে একের পর এক প্রশ্ন করছে, আর রবি তার উত্তর দিয়ে যাচ্ছে।
এক ছাত্রী রবিকে চমকে দিলো প্রশ্নটি করে। মেয়েটি রবিকে জিজ্ঞাসা করলো, “স্যার, আপনি একজন গুণী লেখক। একটা মানুষের জীবনে যা কিছু পাবার, সবই আপনি পেয়েছেন। দেশের এমন কোনো লোক নেই, বিশেষ করে শিক্ষিত সমাজে যে আপনার নাম শুনে নাই। জীবনে টাকা-পয়সাও কামিয়েছেন প্রচুর। প্রেসিডেন্ট, মন্ত্রী, শিল্পপতী সবার কাছে আপনি প্রিয় এবং শ্রদ্ধেয়। কিন্তু স্যার, আপনার জীবনে এমন কোনো দুঃখ বা ক্ষোভ রয়েছে যার জন্য আজ ও আপনার মন কাঁদে অথবা ব্যথিত হয়।”
“হাঁ, আছে”, রবির স্বীকারোক্তি। হলের সবাই অবাক, সেটা কি হতে পারে?
রবি আস্তে আস্তে বলা শুরু করলো। “আমার জীবনে দুটো ঘটনা, আজও আমায় ব্যথিত করে, পীড়া দেয়।
এক, তোমরা আজ আমাকে যে সম্মানে ভূষিত করেছো তার জন্য আমি গর্বিত এবং কৃতজ্ঞ। বিশ্ববিদালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রী দিয়েছ আমাকে, কিন্তু রীতিমতো খেটে পরীক্ষা দিয়ে পাশ করে ডিগ্রী পাওয়ার যে আনন্দ আর তৃপ্তি সেটা থেকে আজও আমি বঞ্চিত। কারণ তোমার হয়তো জানোনা আমি বি, এ, পাশই করিনি। সে বেদনা আজ ও আমাকে তারা করে আর ভাবিয়ে তুলে, এ কি করেছি আমি, কলেজে লেখাপড়ার সময়ে কেন আমি মনোযোগী হয়নি।
দ্বিতীয় দুঃখ হলো, এ জীবনে গল্প, উপন্যাস তো অনেক লিখলাম এবং আজ লিখে চলেছি। তবে সংসার জীবন না করলে সম্ভবত জীবনের পরিপূর্ণতা আসে না। সুখ -দুঃখ নিয়েই তো জীবন। যদি সুখ-দুঃখের মুখোমুখি হতে না পারলাম তবে জীবনের মূল্য কোথায়? আমি আজ এই বিরাট বাস্তবতাকে হারিয়ে ফেলেছি। তাই, তোমাদের কাছে আমার অনুরোধ, সময়কে কখনো অবহেলা করো না। সময় অনেক মূল্যবান। এতো জনসমুদ্রর মাঝে আজ ও আমি একা।” এই বলে রবি তার কথা থামালো।
বিরাট হল ঘরটি একেবারে থম থমে ভাব। মেয়েটি আবার দাঁড়িয়ে বললো, “স্যার, আমাকে ক্ষমা করবেন এই অযাচিত প্রশ্ন করার জন্য”। “না, না তোমাকে ক্ষমা চাইতে হবে না। তুমি একটা সুন্দর প্রশ্ন করেছো। সবার মনে একই ভাবনা, এই পৃথিবীতে কেউই পুরোপুরি সুখী নয়। দুঃখ সবার জীবনেই আসে, আর তার মধ্যে দিয়ে সুখ খুঁজে বের করে নিতে হয়।”
সমাবর্তন শেষে হল থেকে সবাই একে একে বের হতে লাগলো। হঠাত করে একটা শূন্যতায় যেন রবিকে ঘিড়ে ধরল। মনে হলো সে বড়ো একা, নিতান্ত একা। মনের মাঝে কি যেন খুঁজে বেড়াচ্ছে। সামনের দিকে তাকিয়ে সে লক্ষ্য করলো পুরু লেন্সের চশমা পরা এক ভদ্র মহিলা তার পানে চেয়ে আছে। সে ভাবলো হয়তো বা তার কোনো ভক্ত। ভদ্র মহিলা তার সামনে এসে জিজ্ঞাসা করলো, “উদয়ন চৌধুরী ওরফে ডক্টর রবি-উল-হক, কেমন আছো? আমাকে চিনতে পেরোছো?”
“কি যে বলো চিনতে পারবোনা!, তুমিতো একেবারেই বদলাওনি, ডাক্তার অনামিকা মোহসিন না?” রবি বললো।
অনামিকা উত্তর দিলো, “হাঁ, ঠিকই ধরেছো। তুমি তো ভালো করে জানো, আমি তোমার লেখার একজন ভীষণ ভক্ত। যখন জানতে পারলাম তোমাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমান সূচক ডক্টরেট ডিগ্রী দিয়ে হচ্ছে, তখন আর নিজেকে সামলাতে পারলাম না, তাই চলে এলাম। আর হ্যাঁ, আমি এখন এই বিশ্ববিদালয়ের “ছাত্র-শিক্ষকদের”চীফ মেডিকেল অফিসার।
“খুব ভালো” রবি অনামিকার সুখবরের উষ্ণ জানাল দিলো।
অনামিকা বললো, “সভা কক্ষে তোমার জীবনের সুখ-দুঃখ তো শুনলাম। কই, আজও কি আমাদের মধ্যে এই সাহসটুকু আনা যায়না যা দিয়ে তোমার এই সদ্য লেকচারের দ্বিতীয় দুঃখ টুকু ঘুচিয়ে দেয়া যায়, যার জন্য এখনো আমরা দুজনে অনুশোচনা করে যাচ্ছি। তুমি তো এখন বি,এ, ফেল করা রবি-উল-হক নও, তুমি এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরা ডিগ্?ীধারী!”
“অনামিকা, আমি কি স্বপ্ন দেখছি?”, রবি প্রশ্ন করে।
অনামিকা, রবির হাতে চিমটি কেটে বললো, “না ডক্টর, এটা বাস্তব এবং সত্যি। আজ আমাদের দুজনের স্বপ্ন বাস্তব হলো, মন দেয়া নেয়া তো সেই তিরিশ বছর আগেই হয়েছিল”।
“তবুও পিছনের দিনগুলিতে সাহস করে বলা হয়ে উঠেনি, তাই তো!” দুজনেই বাচ্চাদের মতো প্রায় চিত্কার করে বলে উঠলো। শেষ
কামাল কাদের: ইলফোর্ড ,ইংল্যান্ড
ই-মেইল: quadersheikh@gmail,com