শামীম আহসান মহাবুল্লাহ : কামাররা সবাই একজনের পর একজন পানির মধ্যে লাফিয়ে পড়তে লাগলো। ওরা পানির মধ্যে বড় মাছ ধরার মতো করে হাতড়ে হাতড়ে ইয়েন লাঙ-কে খুঁজে বের করলো, জাপটে ধরে ওকে উঠিয়ে বসালো কাপড় ধোয়ার একটা কাঠের গামলার উপর, তারপর ঐ গামলাটা নীরবে ঠেলে তীরে নিয়ে আসলো।

ইয়েন লাঙ-এর কামার পিতা পানিতে ডুবে যাওয়া পুত্রকে বুকে জড়িয়ে কোলে উঠিয়ে নিলেন। তার বয়সের ছাপে নীল হয়ে যাওয়া চেহারা এবং বুক, দুঃখে ডুবে আছে পরিপূর্ণভাবে! “হতভাগা ছেলে, সবই তো হয়েছে আমার করা পাপের কারণে, তাই নয় কি?”, প্রবীণ কামার নিজে নিজে বিড়বিড় করে বলতে থাকেন। তিনি ইয়েন লাঙ-কে উল্টিয়ে ধরে কাঁধে তুলে নিলেন। সামনে উঁকি দিয়ে দেখতে আসা দর্শকদের ঠেলে সরিয়ে দিয়ে তিনি এগিয়ে গেলেন কামার শালের দিকে। তিনি বললেন, “কি দেখছো তোমারা? তোমরা কি ওর দেহ থেকে অপসারণ করা শুক্রাশয়ের জায়গাটা দেখতে চাও? তাহলে ওর পায়জামাটা টেনে খুলে ফেলো, তারপর ভালো করে দেখো। দেখার মতো কিছু নাই!”, প্রবীণ কামার হেঁটে আগাতে আগাতে ইয়েন লাঙ-এর পিঠে হালকা করে বাড়ি দিচ্ছিলেন। ইয়েন লাঙ-এর মুখ দিয়ে খানিকটা পানি বেরিয়ে আসছিলো, পথের উপর পড়ছিলো টপ টপ করে। পাশে দাঁড়ানো মানুষেরা বললো, “এ যাত্রায় খোজা ছেলেটি বোধ হয় বেঁচে যাবে!”, প্রবীণ কামার তার নিজের মতো করেই ছেলের পিঠে হাতের তালু দিয়ে বাড়ি দিতে দিতে বাড়ির দিকে চলতে থাকলেন। চলতে চলতে আমার পাশে আসার পর তিনি থমকে দাঁড়ালেন। তিনি এক ধরনের শত্রæতামূলক নজরে খুব কাছ থেকে আমার মুখের দিকে তাকালেন! “তুমি আসলে কে, বলো তো?”, প্রবীণ কামার বললেন, “আমার ছেলেটা কি তোমার মেয়ে মানুষ নাকি? তোমাদের ব্যাপার স্যাপার দেখে আমি খুবই বিরক্ত, আমার ঘেন্না হয়!”

আমি জানি না, ইয়েন লাঙ-এর এই ধরনের মেয়ে মানুষের মতো আত্মহত্যার প্রবণতাকে কি ভাবে দেখা উচিত! কখনও কখনও আমার মনে হয়েছে, আমাদের মধ্যাকার এই সম্পর্কটা কোন কোন মানুষের দৃষ্টিতে ঘৃণ্য বলে গণ্য হতে পারে! আর এমনটা সিয়ে দেশের বিশাল সিয়ে রাজ প্রাসাদের নীতি শাস্ত্রীয় যুক্তির সাথে হয়তো সংগতিপূর্ণ, কিন্তু পাথর খনি জেলা-র শ্বেত লৌহ নগর-এর জন্য সময় উপযোগী নয়, বরং কোন কোন মানুষের বিবেচনায় এটা রীতিমতো নির্লজ্জ বিষয়! এখানে ইয়েন লাঙ ছাড়া আর কেউ আমার পরিচয় সম্পর্কে অবগত নয়, তাই উপস্থিত কামারবৃন্দকে, ঘটনার আদি কারণের সাথে পরবর্তী ফলাফলের সম্পৃক্ততাকে কি ভাবে ব্যাখ্যা করবো, তা আমি বুঝতে পারছিলাম না। আমার শুধু একটাই চাওয়া, ইয়েন লাঙ যেন এ যাত্রায় মরে না যায়। পরে ইয়েন লাঙ-কে ঘাসের মাদুরের উপর শুইয়ে রাখা হয়েছিলো, একটানা লম্বা সময় ধরে। ওর মা ওর লজ্জা স্থানে একটা বাচ্চাদের লাল কাঁথা জড়িয়ে রেখেছিলেন। আমি দেখতে পাচ্ছিলাম পেটে জমে থাকা পানি বের করার জন্য ইয়েন লাঙ-কে বমি করানোর চেষ্টা করা হচ্ছিলো, ধীরে ধীরে ওর জ্ঞান ফিরে আসছিলো। জ্ঞান ফিরে আসার পর, ইয়েন লাঙ-এর বলা প্রথম কথাটা ছিলো, “আমি কতো হতভাগা! কতো সস্তা আর নগন্ন আমি! আসলে আমি কি জিনিস?”

কামার শালের বিশৃঙ্খল অবস্থার সুযোগ নিয়ে আমি গোপনে গোপনে পিছনের জানালা টপকিয়ে বেরিয়ে গেলাম বাইরে। জানালার বাইরের শ্বেত লৌহ নগর-এর যে রাস্তাটা আছে, সেটার এক মাথা বন্ধ! সেখানে স্তুপ করে রাখা আছে জ্বালানি কাঠ আর নানা ধরনের মরিচা ধরা লোহার তৈরী কৃষি কাজের যন্ত্রপাতি! কৃষি যন্ত্রপাতির স্তুপের মধ্যে আমি দেখতে পেলাম একটা তীক্ষ্ণ ফলা যুক্ত ধারালো ছোট ছুরি। জানি না কে এটা এখানে লুকিয়ে রেখেছে, অথবা ওটা কামার শালের হারিয়ে যাওয়া কোন জিনিস হবে হয়তো! নানা জিনিসের মধ্য থেকে আমি ঐ তীক্ষ্ণ ফলার ছুরিটা টেনে বের করে কোমরের কাছে পায়জামায় গুঁজে রাখলাম। তারপর হেঁটে এগিয়ে গেলাম শহরের বড় রাস্তার দিকে। ইয়েন লাঙ-এর গলার আওয়াজ কানে আসছিলো, ওর কথার মধ্যে ছিলো অভিযোগ —— উপরওয়ালা আর পৃথিবীর সব মানুষের প্রতি! “আমি আসলে কি, আমি কি মানুষ, না কোন জিনিস!”, ইয়েন লাঙ-এর হীনতা আর দুর্ভাগ্য এসেছে জম্ম সূত্র থেকে, কারণ ওর জম্ম হয়েছে দরিদ্র পরিবারে! আর অন্যদিকে আমি? আমি যদি নিজেকে ইয়েন লাঙ-এর সাথে তুলনা করি, আমি নিজেকেই প্রশ্ন করছি, আমি আসলে কোন্ জিনিস? হান লিন বিহার-এর সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রাপ্ত পন্ডিতরা হয়তো এ ব্যাপারে একটা পরিষ্কার ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ দাঁড় করাতে পারবেন!
আমি পাথর খনি জেলা-র রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতে ঘুরতে একটা বন্ধকী দোকান খুঁজছিলাম যেখানে কোন মূল্যবান জিনিস বন্ধক রেখে টাকা নেয়া যায়। রাস্তার মাথায় আছে ভাগ্য গণনা জ্যোতিষীর দোকান। এই জ্যোতিষী বাবুটি মানুষের নামের অক্ষর বিশ্লেষণ করেন, ভবিষ্যৎ বাণী করেন! আমি ওনার দোকানে ঢুকলাম, তার কাছে বন্ধক রাখার দোকানের খোঁজ জানতে চাইলাম। তিনি আমাকে জানালেন যে তাদের জেলায় এমন দোকান নাই! তিনি জানতে চাইলেন যে, আমি কোন্ মূল্যবান জিনিস বন্ধক রাখতে চাচ্ছি! আমার পোশাকে নীচে লুকিয়ে রাখা গলার সাথে ঝুলানো চিতা বাঘের অবয়ব খোচিত জেড পাথরের ছোট খন্ডটা আমি বের করে তাকে দেখালাম। গণক বাবুর একটা চোখ নষ্ট, তাই এক চোখ দিয়ে পাথরটা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখলেন। মুহূর্তের মধ্যেই তার চোখটা জ্বল জ্বল করে উঠলো! তিনি আমার হাতটা চেপে ধরলেন। তারপর প্রশ্ন করলেন, “বাবাজী, এই মূল্যবান রতœ আপনি কোথায় পেয়েছেন?”

“পরিবার থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া। আমার দাদা এটা দিয়েছিলেন আমার বাবাকে, আমার বাবা দিয়েছেন আমাকে।”, আমি কোন রকম চঞ্চলতা প্রকাশ না করে অস্বাভাবিক শান্ত কন্ঠে তাকে পাল্টা প্রশ্ন করলাম, “আপনি কি এই মহা মূল্যবান পাথরটা কিনতে চান?”
“এমন চমৎকার চিতা অবয়ব খোচিত জেড পাথরের সবই রাজধানীর রাজ প্রাসাদ থেকে আসে। আমার ভয় হচ্ছে, বাবাজী আপনি এটা প্রাসাদ থেকে চুরি করে আনেননি তো?”, গণক বাবু তখনও আমার হাতটা বেশ জোর দিয়েই ধরে রেখেছেন! আর এক চোখ দিয়ে তাকিয়ে তিনি আমার প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করছেন!

“চুরি করে এনেছি?”, আমি নৈরাশ্যের হাসি হাসলাম। “ধরে নেন চুরি করেই এনেছি। চোরাই মালের জন্য আপনার কাছে সস্তা দামেই বিক্রি করবো, এই জেড পাথরের রতœটা আপনি কতো টাকায় কিনবেন বলে ভাবছেন?”
“বৎস, তুমি কতো টাকায় বেচবে আমার কাছে?”
“বেশি না, রাস্তায় যাতায়াত ও ঘুরা ফেরার খরচটা পেলেই আমার চলবে।”
“বৎস, তুমি কোথায় যেতে চাচ্ছো?”
“আমি জানি না, আমি এগিয়ে যাবো আর দেখবো। আমি খুঁজছি দক্ষিণ অঞ্চল থেকে আসা একটা দড়াবাজী খেলার কৌশলী খেলোয়াড় দলকে। আপনি কি দেখেছেন ওদেরকে, ওরা কি এই এলাকা অতিক্রম করে গেছে?”

“দড়াবাজী খেলোয়াড়দের দল? বৎস, তুমি কি বাজিগর শিল্পী?” গণক বাবু আমার হাতটা ছেড়ে দিলেন। আমার চার পাশে এক পাক হাঁটলেন। খানিকটা সন্দেহের ছোঁয়া যুক্ত কন্ঠস্বরে বললেন, তুমি তো রঙ্গজীবক বা সোজা কথায় রাস্তার পাশে বসে খেলার কলা কৌশল দেখিয়ে জীবিকা নির্বাহ করার মানুষ নও! আমি যে তোমার দেহে সম্রাটের শরীরের ঘ্রাণ অনুভব করতে পারছি, তাই নয় কি?”

“ওটা হয়তো আমার আগের জম্মের ঘটনা! আপনি কি দেখেছেন না, কেমন তাড়াহুড়া করে শুধুমাত্র পথের খরচ জোগাড় করার তাড়নায় আমি এমন অমূল্য রতœটার বদলে টাকা চাচ্ছি?”, আমি মাথা নীচু করে গণক বাবুর টাকার বাক্সটার দিকে লক্ষ্য করলাম। বাক্সের মধ্যে টাকা খুব বেশি নাই। কিন্তু আমার অনুমান আগামী কয়েক দিন আমার পথের খরচের জন্য সেই টাকা যথেষ্ট! তাই রাজকীয় প্রতীক সম্বলিত আমার শৈশব কাল থেকে এখন পর্যন্ত ধারণ করে থাকা অমূল্য পাথরটা সুতা থেকে আমি ছিঁড়ে ফেললাম। রাখলাম গণক বাবুর নানা ধরনের স্বর্গীয় প্রতীক সম্বলিত পাথর ও ধাতব পিন্ডগুলোর পাশে। “আপনার কাছে বিক্রি করে দিচ্ছি”, আমি গণক বাবুকে উদ্দেশ্য করে বললাম,
“আমার শুধু এ টাকাগুলো হলেই চলবে!”

গণক বাবু আমাকে সাহায্য করলেন, তিনি তার বাক্স থেকে রূপার খন্ডগুলো ঢেলে দিলেন আমার বিধ্বস্ত আর শূন্য টাকার থলেটার মধ্যে। আমি তাড়াহুড়া করেই গণক বাবুর দোকান থেকে বের হওয়ার সময় শুনতে পেলাম, গণক বাবুর মুখ থেকে আসা কথা, যা কিনা মানুষকে করতে পারে শঙ্কিত! “আমি জানি তুমি কে!”, তিনি বললেন, “তুমি হচ্ছো সিংহাসনচ্যুত সিয়ে সম্রাট!”

আমি চমকে উঠলাম, গণক বাবুর মানুষ চেনার অলৌকিক ক্ষমতা আমাকে চরমভাবে বিস্মিত করছে! “পাথর খনিতে সেই আদিকাল থেকেই আছে অনেক অদ্ভুত মানুষ”! গ্রামীণ পালা গানে হুবহু এমন একটা কথাই শুনেছিলাম আমি! এখন আমি বিশ্বাস করতে বাধ্য হচ্ছি, যে পাথর খনি নামের এই স্থানটি কোন সাধারণ এলাকা নয়। পাথর খনি জেলার মানুষের মধ্যে যেমন আছেন, সিংহাসনের পিছনে লাল বেদীর উপর এক টানা ঠায় বসে থাকা সরকারি দপ্তরের অপব্যবহারকারী এক কালের ক্ষমতাধর মর্যাদাবান রানী, সম্রাট জননী মঙ ফুরেন-এর মতো মানুষ, এ ছাড়াও তেমনি এই এলাকায় আছেন সু² আর নিখুঁত ভবিষ্যৎ বাণী করার কাজে অত্যন্ত পারদর্শী এই গণক বাবুটির মতো মানুষও! আমি উপলব্ধি করতে পারছি, এই স্থানটি আমার জন্য কোন শুভ বার্তা আগমণের জায়গা নয়, আমাকে অবশ্যই যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব দোযখের মতো বিপজ্জনক এই স্থানটি ত্যাগ করতেই হবে!
ঐ দিন পাথর খনি জেলার বড় রাস্তার উপরে শোনা যাচ্ছিলো অস্বাভাবিক বকের ডাকের শব্দ! রাস্তায় চলা মানুষজন হয়ে পড়েছিল আতঙ্কিত! গাড়ি ঘোড়াগুলো পূব-পশ্চিম সব দিকেই ছুটাছুটি করা শুরু করেছিলো। এক দল বেগুনি রঙের পোশাক পরা সৈনিক এবং সেনা কর্মকর্তা জেলা সরকারের সদর দপ্তর থেকে ঠিক যেন বানের পানির মতো বেরিয়ে আসছিলো। ওরা সরাসরি ছুটে যাচ্ছিলো জেলা শহরের উত্তর পূর্ব কোণের চৌ রাস্তার দিকে। শুরুতে অবচেতন মনের নির্দেশে আমি রাস্তার পাশে লুকালাম। আমার মনে হচ্ছিলো, সৈনিকদের আতঙ্কিত ছুটাছুটি যেন আমাকে উদ্দেশ্য করেই! আরও মনে হচ্ছিলো, আতঙ্কিত গণক বাবু যেন আমার জন্য ডেকে এনেছেন এক ভয়াবহ সমস্যাকে! সৈনিকদের দল সামনে থেকে চলে যাওয়ার পর আমি শুনতে পেলাম কারা যেন আনন্দে আত্মহারা হয়ে উচ্চ স্বরে বলছেন, “ওরা গেছে মঙ কুয়ো চিউ-এর বাড়িতে, খুব শীঘ্রই মঙ বাড়ি-তে হবে ব্যাপক আর পরিপূর্ণ তল্লাশী!”

সবশেষে আমার দুঃচিন্তা কেটে গেলো, আমি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম। আমার মনে হচ্ছে একজন দরিদ্র পীড়িত পথে পথে ঘুরা, নিজের অমূল্য রতœ পাথর বিক্রি করে চলা, এমনই জীবন ধারী এক ভূতপূর্ব সম্রাটের কোন ভয় বা শঙ্কা থাকার কথা নয়! দুপুর বেলার তীব্র রোদের মধ্যে একটা বাঁশের চোখা কৃষকদের ব্যবহার করা মাথাল টুপি মাথায় দিয়ে আমি হেঁটে পথ চলছি। হঠাৎ করেই আমার মনে হলো, আসন্ন বিপর্যয়ের আঘাতে নিমজ্জমান মঙ কুয়ো চিউ নামের মানুষটি তো আমার নিকট আত্মীয়, ওর সাথে তো আছে আমার রক্তের সম্পর্ক! আমি জানি কোন একটা সময় পাথর খনি জেলার মঙ ভবনটি ছিলো মঙ ফুরেন-এর দেয়া নিরাপত্তার চাদরের মধ্যে রক্ষিত! মঙ বাড়িতে সুমার করা আছে সিয়ে রাজ প্রাসাদের বহু মহা মূল্যবান রতœাদি ও সম্পদ! আর ঐগুলো মঙ ফুরেন রাজ বাড়ি থেকে চুরি করে তিনটা বড় জাহাজে করে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন এখানে! একে বারে শুরুতেই পাথর খনি এলাকায় পৌঁছাবার পর আমি আমার মামা মঙ কুয়ো চিউ-এর সাথে দেখা করতে চাচ্ছিলাম না, বিব্রত বোধ করছিলাম। আর এখন একটা বিচিত্র অদ্ভুত অন্ধকারাচ্ছন্ন মানসিকতা যেন আমাকে জোর করছে ঐ বেগুনি রঙের পোশাক পরিহিত সেনাদলের পিছনে পিছনে যেতে। আমার দেখতে ইচ্ছা করছে তুয়ান ওয়েন এবং পশ্চিম অঞ্চলের সুবাদার চাও ইয়াং-এর সরকার, আগের সম্রাটের শাসন আমলের কোন অভিজাত ব্যক্তিকে সৈন্য পাঠিয়ে ধরে এনে কি ভাবে জন সম্মুখে নিন্দা আর অপদস্ত করার ব্যবস্থা করে!

মঙ ভবন এর সদর দরজার সামনের উঁচু করে তৈরী করা হয়েছে ইটের ঢিবির বেষ্টনী, সংরক্ষিত করা হয়েছে প্রবেশাধিকার। সৈন্যরা গলির মুখের দু’টো নির্গমন পথ বন্ধ করে দিয়েছে। আমি দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছি চৌ রাস্তার গলির মুখে থাকা একটা চায়ের দোকানের সামনে। আমার সাথে চায়ের দোকানে চা খেতে আসা এক দল মানুষ দোকানের দরজার সামনে এসে ভীড় করে দাঁড়িয়েছে, তাকিয়ে আছে মঙ ভবনের দিকে। অনেক দূর থেকেই শুনা যাচ্ছে, ঐ উঁচু দেয়াল ঘেরা বাড়িটির ভিতর থেকে আসা মহিলাদের দুঃখ ভারাক্রান্ত উচ্চ স্বরের বিলাপের ধ্বনি! (চলবে)