স্পোর্টস ডেস্ক : বেশ কয়েকদিন ধরেই শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের তরুণ লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের বাবা আব্দুল কুদ্দুস। তিন দিন আগে অবস্থা খারাপ হলে বাবাকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে বের হন বিপ্লব। কিন্তু কোনো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই তার বাবাকে ভর্তি করছিলো না।

ভর্তি তো পরের কথা, কি কারণে এমন হচ্ছে সেটাই কেউ পরীক্ষা করতে চাচ্ছিলো না। শেষ পর্যন্ত শ্যামলীর সেন্ট্রাল ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে পরীক্ষা শেষে জানা যায় মূলত হার্টের সমস্যা থেকেই এই শ্বাসকষ্টের সমস্যা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিপ্লবের বাবাকে হার্ট ফাউন্ডেশনে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

হার্ট ফাউন্ডেশনে গিয়ে আরেক বিপদে পড়েন বিপ্লব। তার বাবাকে ভর্তি নিতে চাচ্ছিল না হার্ট ফাউন্ডেশন। পরে উপায় না পেয়ে বিপ্লব ফোন দেন বাংলাদেশ দলের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও বিসিবি’র ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের ম্যানেজার সাব্বির খানকে। পরে তামিম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিপ্লবের বাবাকে ভর্তির ব্যবস্থা করে দেন।

বৃহস্পতিবার (১১ জুন) এই পুরো বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন বিপ্লব নিজেই।

বিপ্লব বলেন, ‘আব্বুর শরীরটা বেশ খারাপ। শ্বাসকষ্ট থেকেই সমস্যাটা হয়েছে। এই অসুসখটা পুরোনো। কিন্তু গত কয়েকদিন বেশি সমস্যা করছিল। খারাপ অবস্থা হয়ে গিয়েছিল। আমরা অনেকগুলো হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছি। কিন্তু কেউ ভর্তি নিচ্ছিল না। পরে শ্যামলীতে সেন্ট্রাল ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ নামে একটা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কিছু টেস্ট করতে দেয়। রিপোর্ট দেখে ওনারা বলেন হার্টের সমস্যা থেকে এটা হচ্ছে, তাই ওনারা পরামর্শ দিল হার্ট ফাউন্ডেশনে নিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু ওখানে গিয়ে জটিলতার মধ্যে পড়ে যাই। এটা করতে বলে, ওটা করতে বলে। কি করব বুঝতে না পেরে তামিম ভাই (তামিম ইকবাল) ও অপারেশন্স ম্যানেজার সাব্বির ভাইকে ফোন দিই। পরে তামিম ভাই ওনাদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর আব্বুকে তারা ভর্তি করায়। গতকাল রাতে ভর্তি নিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এখানে ভর্তির পরে রিপোর্ট দেখে চিকিৎসা দিচ্ছে। এখানে আব্বুকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। কেননা এখানে করোনা পজিটিভ ও নেগেটিভ রোগী আছে। এখনও আব্বুর কোভিড-১৯ টেস্ট করানো হয়নি। টেস্ট শেষে রেজাল্ট পেলে বেড বা ক্যাবিনে দেবে।’

এই কঠিন সময়ে আরও একবার মহান মনের পরিচয় দিলেন টাইগারদের ওয়ানডে অধিনায়ক। এর আগে করোনায় ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য ২৭ ক্রিকেটার তাদের বেতনের অর্ধেক দান করেন যার মূল উদ্যোক্তা ছিলেন তামিম। এছাড়া নিজ দায়িত্বে ক্রিকেটের বাইরে ৯১ জন অ্যাথলেটকে সহযোগিতা করে মহানুভবতার পরিচয় দেন তামিম। এছাড়া মোহাম্মদপুরে নাফিসা খান নামের এক নারীর মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা করেছেন এই বাঁহাতি ওপেনার। কিছুদিন আগে আম্পানে ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে এসে দাঁড়িছেন তিনি। পাশাপাশি চট্টগ্রামে ৫০ জন অসহায় ক্রিকেট কোচকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন তামিম ইকবাল।