৬ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে কানাডার রাজধানী অটোয়ায় যথাযোগ্য মর্যাদায় বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী দিবস (Friendship Day) উদযাপন করা হয়। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বাংলাদেশ ও ভারতের কুটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরকে স্মরণীয় করে রাখতে কানাডার রাজধানী অটোয়ার আর্ট গ্যালারিতে প্রথম বারের মতো বাংলাদেশ ও ভারতের হাইকমিশন যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কানাডা, বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সংগীত বাজানো হয়।

অনুষ্ঠানে কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার ড. খলিলুর রহমান, ভারতের হাইকমিশনার জনাব অজয় বিশারিয়া এবং কানাডিয়ান গ্লোবাল এ্যাফেয়ার্সের সহকারী উপমন্ত্রী, Assistant Deputy Minister (ADM) জনাব পল থপিল বক্তৃতা করেন। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, শিক্ষাবিদ, মুক্তিযোদ্ধা, প্রবাসি বাংলাদেশি ও ভারতীয়সহ শতাধিক ব্যক্তিবর্গ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশের হাইকমিশনার ড. খলিলুর রহমান ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের ভূমিকা, স্বাধীন বাংলাদেশের যুদ্ধবিধ্বস্ত অবস্থার প্রেক্ষাপটে ভারতীয় সহায়তা এবং প্রধানমন্ত্রী মুজিব ও ইন্দিরা কর্তৃক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সুদৃঢ় ভিত্তি স্থাপনের বিষয়বলীকে স্মরণ করেন। তিনি বাংলাদেশ-ভারতের জনগণের মধ্যে নিবিড় যোগাযোগ এবং দু’দেশের সকল ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন, যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির গতিশীল নেতৃত্বে বেগবান হয়েছে।

কানাডায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বলেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের পাশে থাকতে পেরে ভারতের জনগণ গর্বিত। বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এবং বাংলাদেশ ভারতের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদার। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার ভূঁয়সী প্রশংসা করেন।

এ পর্যায়ে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের উপর কবি আসাদ চৌধুরীর বক্তব্য এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী একজন ভারতীয় সৈন্যের রেকর্ডকৃত ভিডিও প্রদর্শনী করা হয়।

কানাডিয়ান গ্লোবাল এ্যাফেয়ার্সের সহকারী উপমন্ত্রী, Assistant Deputy Minister (ADM) জনাব পল থপিল তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের মানবিক সহায়তার প্রশংসা করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় এবং পরবর্তীতে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনর্গঠনে কানাডার অবদানের কথা স্মরণ করেন। শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে কানাডা বাংলাদেশ ও ভারতের সাথে একযোগে কাজ করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু কর্তৃক বাংলাদেশের উন্নয়নের সূচনা, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার উন্নয়নের অগ্রযাত্রা এবং বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়ে একটি ডকুমেন্টরি প্রদর্শন করা হয়। এছাড়াও বাংলাদেশি ও ভারতীয় শিল্পীদের দ্বারা পৃথকভাবে ধারণকৃত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। এ উপলক্ষে আয়োজিত আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাঙালির মুক্তির সংগ্রাম, ১৯৭১ সালে সংঘটিত গণহত্যা, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও এতে ভারতীয় সহায়তা, বঙ্গবন্ধু কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণা, বিশ্ব মিডিয়ায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে প্রচারণা, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনে তৎকালীন ভারত সরকারের ভূমিকা এবং স্বাধীনতা পরবর্তী দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও উন্নয়ন সহযোগিতা তুলে ধরা হয়। সবশেষে আমন্ত্রিত অতিথিরা নৈশভোজে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানের কিছু স্থিরচিত্র এতদসঙ্গে সংযুক্ত করা হলো। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি