অনলাইন ডেস্ক : কুইবেকের প্রায় অর্ধেক করদাতার বার্ষিক আয় ৩০ হাজার ডলারের নিচে নেমে গেছে। করোনা মহামারির সময় সঞ্চয় ভেঙে তারা জীবন নির্বাহ করেছে। এখন মূল্যস্ফীতির প্রথম শিকার হয়েছে এই সব স্বল্প আয়ের মানুষ। করোনাকালে আয় ও সঞ্চয় হারিয়ে এখন মূল্যস্ফীতির চাপে কঠিন অবস্থায় পড়েছে স্বল্প আয়ের মানুষ। নিত্য পণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে তারা এখন দিশেহারা। কানাডার মোট জন ংখ্যার প্রায় ২০% ‘ফুড ব্যাংক’ ব্যবহার করেন। কুইবেকে এ বছর খাদ্য ঝুড়ির ব্যবহার ২০১৯ সালের তুলনায় ৩৭ শতাংশ বেড়েছে। ফুড ব্যাংকে কর্মীর সংখ্যা বেড়েছে ৪০%। প্রতি মাসে ৬ লাখের বেশি কুইবেকের এখন ফুড ব্যাংকের সেবা নিচ্ছেন। কিন্তু মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষ এখন পণ্যের ব্যবহার কমিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে। প্রতি দিনই চাহিদা কমছে। ফলে উৎপাদিত পন্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
পরিসংখ্যান কানাডার মতে ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে ২০২১ সালের অক্টোবর পর্যন্ত কয়েকটি উল্লেযোগ্য পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির হার হচ্ছে -শুকরের গোশতের চপ- ৬.৭%, মুরগি ৭.২%, গরুর গোশত ৪.১%, গাজর ৮.৪%, কেচাপ ৮.৬%, সিগারেট ৯.৩%, সাদা চিনি ১০.৩%, কফি ১০.৬, টিনজাত টমেটো ১২.২%, বেকন ১৯.১% এবং গ্যাসোলিন ৪২.৩%।
খাদ্য, বাসস্থান এবং পরিবহন সেবাখাতকে প্রভাবিত করা এই মূল্যবৃদ্ধি সারা দেশে লাখ লাখ মানুষের জীবনে বিরূপ প্রভাব ফেলে। অর্থনীতিবিদদের আশঙ্কা এই মূল্যস্ফীতির ধারা কমপক্ষে ২০২২ সালের শেষ পর্যন্ত চলতে পারে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তারা কয়েক মাস আগে থেকেই বলে আসছেন যে, এই মূল্যবৃদ্ধি ক্ষণস্থায়ী হবে না। তাদের কথাই এখন সত্য হতে চলেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তা জেরোম পাওয়েল গত সপ্তাহে বলেছেন, বর্তমান মূল্যস্ফীতিকে ঠেকানো বা পাশকাটানোর আর কোনো উপায় নেই। করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের ছোবলে আবার লকডাউন আর সীমান্ত বন্ধ করতে হলে মূল্যস্ফীতি আরো তীব্র হবে। কাজেই আমাদেরকে এ বিষয়ে দীর্ঘ মেয়াদী প্রস্তুতিই নিতে হবে। ফেডারেল রিজার্ভ চেয়ারম্যানের মতে, সামনের দিনগুলো আরো কঠিন হতে পারে। কেননা নিত্য পন্যের মূল্য বৃদ্ধির হার আমাদের ধারণার চাইতে বেশি হওয়ার সাথে সাথে এই মূল্যস্ফীতির স্থায়িত্বও আমরা যা ভাবছি তার চাইতে বেশি হতে পারে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের প্রধান উপায় হচ্ছে বিশ্বকে দ্রæত করোনামুক্ত করা। সূত্র : রেডিও কানাডা