অনলাইন ডেস্ক : অবশেষে দুই বছর তিন মাস পর বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এই আদেশে খুশি আবরারের পরিবার। তবে দ্রুত রায় কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন আবরারের মা-বাবা।
একই সঙ্গে আসামি অমিতের ফাঁসির রায় না হওয়ায় আবরারের মা অসন্তোষ প্রকাশ করে তাকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
আবরারের মা বলেন, প্রথমে আমি প্রশাসন, মিডিয়া, ছাত্র,-অভিভাবকসহ জঘন্য অপরাধের প্রতিবাদকারী সর্বস্তরের জনতাকে কৃতজ্ঞতা জানাই। রায়ে ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বাকি পাঁচজনকে যাবজ্জীন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে আদালতের প্রতি সম্মান রেখে বলছি, আমরা আশা করেছিলাম সবার মৃত্যুদণ্ড হবে। বিশেষ করে হত্যায় সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিল অমিত সাহা। তার মৃত্যুদণ্ডাদেশ সবাই আশা করেছিল।
তিনি আরো জানান, অমিত সাহার মৃত্যুদণ্ডও যেন অন্যদের সঙ্গে বাস্তবায়ন করা হয়। আমরা তার মৃত্যুদণ্ডাদেশের আশা করেছিলাম। এর জন্য আবারও আদালতের দ্বারস্থ হব। এই রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানাচ্ছি। দ্রুততর সময়ে রায় কার্যকর করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হোক। রায় পুরোপুরি কার্যকর হলে আমরা পুরিপুরি সন্তুষ্ট হব।
আবরার ফাহাদের ছোট ভাই ফাইয়াজ বলেন, ভাইয়ের হত্যাকারীদের সবার ফাঁসি চেয়েছিলাম। বিচার বিভাগের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। আদালতের রায়ে আমি খুশি। ভাই ছিল আমার সাহস ও ভরসা। ভাইকে হারিয়ে আজ আমরা নিঃস্ব। ভাই ছিল কলিজার টুকরা। সেই ভাইকে হত্যাকারী পলাতক আসামিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে এবং তাদের শাস্তি দ্রুত কার্যকর করতে হবে।
বুধবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানের আদালত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচজনের যাবজ্জীবন দিয়েছেন। দুই বছর আগে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হলের আবাসিক ছাত্র ও তড়িৎকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে বুয়েট ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী।
আবরার ফাহাদ ১৩ মে ১৯৯৮ সালে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। প্রথমে কুষ্টিয়া মিশন স্কুল ও পরে জিলা স্কুলে লেখাপড়া শেষ করে ২০১৮ সালের ৩১ মার্চ তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ভর্তি হন। আবরার বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন।