অনলাইন ডেস্ক : ‘বৈশ্বিক এই করোনা মহামারিতে এখন পর্যন্ত গত পাঁচ দিনে আমি কোনো নাটকের চরিত্রে ঢুকতে পারিনি। এটা সজ্ঞানেই। সে ক্ষেত্রে আমার অভিনয় খারাপ হলেও কিছু করার নেই। আগে বেঁচে থেকে কাজ করতে হবে। প্রথম আমার জীবন রক্ষা করা। এই অবস্থায় বাংলাদেশের কোনো অভিনেতাই শতভাগ চরিত্রে ঢুকতে পারবেন না। শুধু বাংলাদেশই নয়, পৃথিবীর কোনো অভিনেতা যদি বলেন তিনি শতভাগ চরিত্রে ঢুকছেন, তাহলে তিনি মিথ্যা বলবেন। কেননা, প্রতি মুহূর্তে আমাদের মাথায় করোনা ঘুরছে। এমন অবস্থায় বিশ্বের কোনো অভিনেতার পক্ষে মন খুলে অভিনয় করা সম্ভব নয়।’—কথাগুলো বলেন ছোট পর্দার অভিনেতা ফারুক আহমেদ।
চলতি জুন মাসের ২ তারিখ থেকে অভিনয় শুরু করেছেন এই অভিনেতা। প্রথমে মানিকগঞ্জে শুটিং করে এখন ঢাকার উত্তরায় একটি শুটিং বাড়িতে ‘প্রিয় প্রতিবেশী’ নামের ধারাবাহিক নাটকের শুটিংয়ে তিনি ব্যস্ত। যতক্ষণ শুটিংয়ে থাকছেন, দূর থেকেই রিহার্সালের চেষ্টা করছেন। শুটিংয়ে বেশির ভাগ সময় একা থাকছেন তিনি। সুস্থ থেকেও অন্যকে সহযোগিতা করার জন্য নিজেকে করোনা পজিটিভ ধরে কারও সঙ্গে মিশছেন না এই তারকা। শুটিংয়ে সহশিল্পীদের সঙ্গে দেখা হলে ছয় ফুট দূর থেকেই হাই হ্যালো ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। মেকআপ রুমের সঙ্গে তাঁর কোনো যোগাযোগই নেই বলে জানান তিনি।
এই অভিনেতা বলেন, ‘আমি নিজেই মেকআপ করছি। এখনো সুস্থ আছি। শুটিংয়ে সচেতন থাকতে ধরে নিয়েছি আমিসহ সবার করোনা পজিটিভ। এ জন্য দৃশ্য শেষ হলে একা একা থাকি। শুটিংয়ে তিন ফুটের জায়গায় ছয় ফুট দূরত্ব মানার ব্যবস্থা থাকলে ভালো হতো। অনেক সময় গল্পের প্রয়োজনে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হয় না। আমার কাছাকাছি আসার মতো রোম্যান্টিক তো দৃশ্য থাকে না। তারপরও কাছে আসার যে দৃশ্য আছে, সেগুলো বিকল্পভাবে করছি।’
ফারুক আহমেদ আরও বলেন, ‘শুটিংয়ের সময় কেউ চিৎকার করে কথা বললে মুখ ঘুরিয়ে রাখছি। আমি নিজেও দৃশ্যে জোরে কথা বলার সময় টেকনিক্যালি মুখ ঘুরিয়ে অন্যদিকে নিই। আমি চাই না আমার মুখ থেকে কোনো ড্রপলেট অন্য অভিনেতার দিকে যাক। একটি দৃশ্যে তিনজনের বেশি অভিনয় করছি না।’
শুটিং সেটে করোনার ভয়াবহতা নিয়ে কলাকুশলীদের মধ্যে বেশির ভাগ খুব বেশি সচেতন না বলে জানালেন এই অভিনেতা। তিনি বলেন, ‘আর্টিস্টদের মধ্যে অনেকের সঙ্গে অনেকেরই দেখা হচ্ছে আড়াই মাস তিন মাস পর। আবেগে তাঁরা কিছুটা খুশিতে মাতছেন। পরক্ষণেই সব শিল্পী সচেতন হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু শুটিং সেটের লাইটম্যান সহকারী, প্রোডাকশন বয়, ক্যামেরা সহকারী তাঁরা খুব বেশি সচেতন নন। এই মহামারি সম্পর্কে তাঁদের ধারণা না থাকায় তাঁরা শুটিং সেটে মাস্ক খুলেই আড্ডা দিচ্ছেন। তাঁরা এতটাই অসচেতন, মাস্ক মুখে রাখতে চাইছেন না। কিছু বললে তাৎক্ষণিক শোনেন, কিন্তু পরে আবার ভুলে যান। এখন তাঁদের জন্য শুটিং করতে ভয় লাগছে। কারণ, তাঁরা এখানে এতটা সতর্কতায় যেহেতু অসচেতন, তাহলে বাইরে কীভাবে চলেন। তাঁদের বোঝালেও এক কান দিয়ে শোনেন অন্য কান দিয়ে বের করে করে দেন। শুটিং সেটের অনেকেই বুঝিয়েছেন, কিন্তু কাজ হয়নি। যেই লাউ সেই কদুই হয়ে থাকতে চান।’