শামীম আহসান মহাবুল্লাহ : তিনি ভয় পাচ্ছিলেন! তাঁর ধারণা, লি ই চ্রি কর্তৃক আয়োজিত ফসল পূজার সমাবেশ ডেকে আনবে বিপর্যয়! এমন কি, যা কিনা এসে ঢুকে পরতে পারে তাঁর নিজস্ব আবাস গুলজার কক্ষ দালানে! হাজির হতে পারে, তাঁর অন্তিম শয্যা পর্যন্ত!
তাই পরবর্তীতে নান ফা এলাকায় সামরিক অভিযান পরিচালনা করার জন্য হুয়াং ফু ফুরেন নিজেই সম্রাটের পক্ষ থেকে সেনা অধিনায়ক বেছে নিলেন!

দেশের উত্তর পশ্চিম অঞ্চলে গত কয়েক বছর যাবত নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত থেকে ইতিমধ্যেই পর্যন্ত কর্ম অভিজ্ঞতা সঞ্চয়কারী অশ্বারোহী বাহিনীর সেনাপতি তুয়ান ওয়েন-কে জরুরি ভিত্তিতে রাজ প্রাসাদে ফিরে আসার জন্য তলব করা হলো।
আমি তো হুয়াং ফু ফুরেনের কর্তৃক নেয়া কোন সিদ্ধান্ত বাতিল কিংবা পরিবর্তন করতে পারি না। আবার অন্য দিকে তুয়ান ওয়েন-এর চেয়ে বেশি উপযুক্ত কাউকে আমি খুঁজে বার করতেও পারিনি।

আমারা একই পিতার ঔরস আর ভিন্ন মাতার গর্ভ জাত ভাই, আমাদের শিকড় একই স্থানে প্রথিত। আমরা একই বংশধারার মানুষ। কিন্তু আমরা হচ্ছি ভিন্ন জগতের ভিন্ন আবেগের মানুষ। আমার সাথে ওর আছে শত্রুতার সম্পর্ক! বেশ কয়েক বছর নির্বাসনে থাকার পর সে ফিরে আসবে সিয়ে রাজ প্রাসাদে, কেমন হতে পারে ওর মন মেজাজ এখন?
তুয়ান ওয়েনের প্রাসাদে ফিরে আসার দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, আমার মন মেজাজ হয়ে উঠছে ততোই অবসন্ন অসাড়, অবসাদ গ্রস্থ! যতবারই স্মরণে আসে সেই গম্ভীর প্রাণ চঞ্চলতাহীন আবেগ শূন্য অবয়ব, মনের মধ্যে সঞ্চার হয় এক অদ্ভুত অনুভূতি! আমি যেন হয়ে গেছি পতনশীল একটা ভারী বস্তু, দ্রæত পতিত হচ্ছি অতল গহ্বরে!

ঐ সময় বাচাল, চঞ্চল আর অতিরিক্ত কথা বলা মেয়ে হান ছোট রানী পেয়েছিলো আমার সাহচর্য! কারুকাজ খোচিত বালিশ মাথার নীচে দিয়ে, গরম লেপের নীচে শুয়ে সে খানিকটা আঁচ করতে পেরেছিলো আমার উদ্বিগ্ন মনের অবস্থা। বার বার প্রশ্ন করে জানতে চাচ্ছিলো আমার মন মড়া হয়ে থাকার কারণ। আমি হান ছোট রানীকে মনের কথা খুলে বলতে চাচ্ছিলাম না একেবারেই। খানিকটা রসিকতামূলক কথা বলে নিতান্তই অনিচ্ছায় ওর সাথে মিলিত হওয়ার কাজ শেষ করতে চাইলাম!

আমি বললাম, “একটা নেকড়ে বাঘ শীঘ্রই ফিরে আসছে মানুষকে কামড়াবার জন্য!”
“বলিষ্ঠ সাহসী সুপুরুষ সিয়ে সম্রাটও কি নেকড়েকে ভয় পাচ্ছেন?”, হান ছোট রানী মুখ ঢেকে রেখে হাসলো! সে তীর্যকভাবে আমার দিকে তাকালো। তার চোখের দৃষ্টিতে আছে একটা মোহনীয় আকর্ষণ যা পরিপূর্ণ হয়ে আছে গভীর উচ্ছ্বাস আর কাম আকাক্সক্ষায়! সে বললো, “আমি মঙ ফুরেন-এর কাছ থেকে শুনেছি যে সম্রাটের ভাই তুয়ান ওয়েন খুব শীঘ্রই রাজ প্রাসাদে ফিরে আসবে! মনে করি তুয়ান ওয়েন হচ্ছে একটা নেকড়ে, যদি তাকে পাঠানো হয় সমবেত হওয়া বিদ্রোহী ঐ গ্রাম্য ডাকাতদের দমন করার কাজে, ওখানে সে যদি না ও মরে, শুধু যদি আহত হয়, তা হলে কি সম্রাটের জন্য এক ঢিলে দুই পাখী মারার কাজ হয়ে যায় না?”

“কি যা তা কথা বলছো! তোমারা, মেয়ে মানুষেরা, যারা সব সময় নিজেদেরকে বেশি বুদ্ধিমান ভাবো, আমি তাদের দেখতে পারি না, একেবারেই!”, আমি খুব বিরক্তির সাথে হান ছোট রানীকে থামিয়ে দিলাম। আমি বললাম, “ঈশ্বরই জানেন, সামনের দিনগুলোতে কি ঘটতে যাচ্ছে! মানুষ চায় এক রকম, ঈশ্বরের ইচ্ছা থাকে অন্য রকম। তুয়ান ওয়েন তো হচ্ছে একটা ইঁদুর, তবে সে কোন সাধারণ ইঁদুর নয়! নান ফা-র বিদ্রোহমূলক ফসল পূজার সমাবেশ হবে, এটা প্রায় নিশ্চিত ব্যাপার। আমি চাই না, সে মারা যাক, যদি সে মারাও যায়, সেটা যেন অবশ্যই হয় যুদ্ধে জিতে ফিরে প্রাসাদে আসার পরে!”

কোন কিছু না বলতে চেয়েও, বাস্তবে আমি এরই মধ্যে আমার মনের মধ্যে জমে থাকা কথাগুলো হান ছোট রানীর কাছে প্রকাশ করে ফেলেছি! আমি খুব ভেবে চিন্তে নেকড়ে বাঘকে খতম করার একটা পদ্ধতি খুঁজে পেয়েছি! কৈশর কালে সিংহাসনে বসা এক জন সম্রাট হিসেবে, রাষ্ট্রীয় বিষয় ও রাজনীতির অনেক ব্যপারেই আমার ধারণা ও জ্ঞান অস্পষ্ট, অনেক কিছুই আমি জানি না ও বুঝি না। তবে আমি একটা ব্যাপার বেশ উপলব্ধি ও সনাক্ত করতে পারি, সেটা হচ্ছে আমার মধ্যে আছে একটা বন্য আকাক্সক্ষা এবং ষড়যন্ত্র করার বুদ্ধি! আমার রাজকীয় কর্ম জীবনের মধ্যে স্পর্শ কাতর ও দুঃশ্চিতার উদ্রেক করে এমন কিছুকে আমি রাখবো না! আমি তুয়ান ওয়েন-কে বিবেচনা করছি একটা নেকড়ে হিসাবে, আর আঘাত পাওয়া একটা নেকড়ে যে স্বাভাবিকের চেয়েও অনেক বেশি হিংস্র হয়ে উঠে তা আমি জানি!

আনন্দ সুবাস দলান-এর ভেতর আনন্দের ক্ষণ আর অপরূপ পরিবেশ রাতের গভীরে হয়ে পরেছে শূন্যতায় পরিপূর্ণ, সব কিছুই যেন পরিণত হয়েছে কাগজের উপর আঁকা মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক দৃশ্যে! আমি শুনতে পাচ্ছি বাতাস বয়ে যাওয়ার শব্দ, আমি আরও শুনতে পাচ্ছি বাতাসের বাড়ি খেয়ে প্রাসাদ দেয়ালের উপর গজিয়ে উঠা সবুজ ঘাসের কাঁপন আর দুলানির আওয়াজ! হঠাৎ করেই মনে পড়ছে অনেক বছর আগে সন্ন্যাসী চুয়ে খোং-এর বলা কথা, তিনি এক বার বলেছিলেন, তুমি কখনোই ভেবো না, বিশাল সিয়ে রাজপ্রাসাদটা হচ্ছে প্রবল শক্তি ধারী আর চিরস্থায়ী! অষ্ট দিক থেকে ধেয়ে আসা ঘূর্ণীবাত মুহূর্তের মধ্যেই এটাকে কুন্ডলী পাকিয়ে ছিন্নভিন্ন করে দিতে পারে! তিনি বলেছিলেন, মনে করো কোন এক দিন তুমি সিংহাসনে বসলে, হয়ে গেলে দেশের সম্রাট! কোন এক দিন তোমার অধিকারে আসলো প্রাসাদ ভরা সুন্দরী নারীগণ আর স্তুপ করা অঢেল ধনরতœ, নিশ্চিতভাবেই আসবে সেই রকমই একটা দিন, যে দিন তুমি উপলব্ধি করবে তুমি ডুবে গেছো পরিপূর্ণ শূন্যতায়, তখন তোমার মনে হবে যেন তুমি হয়ে গেছো একটা ঝরা পাতা, বাতাস যাকে উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে শূন্যতার মাঝে!

বিশেষ সুবিধা প্রাপ্ত সরকারি সেনাধ্যক্ষ তুয়ান ওয়েন রাজধানী শহরে পৌঁছাবার পর, শহরের ভিতরে ঢুকার সময় কিছু মানুষ শহরের বাসা বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে ঢোলের সাথে অন্যান্য বাদ্য যন্ত্র বাজিয়ে স্বাগত অভিবাদন জানালো গৃহে প্রত্যাবর্তনকারী দেশের বীর সন্তানকে! এর সব কিছুই যে শান্ত রাজ কুমার পদবি ধারী তুয়ান উ-এর আয়োজন করা কাজ, এতে কোনই সন্দেহ নেই!

তুয়ান উ রাজকীয় শকট থেকে লাফ দিয়ে নামলো, ওর এক পায়ে আছে রেশম কাপড়ের জুতা, অন্য পা টি খালি! আনন্দে চিৎকার করে সে দৌড়ে গেলো ওর সহোদর ভ্রাতার সামনে। তুয়ান ওয়েন নগর তোরণের নীচে পৌঁছানোর পর ওরা দুই আপন ভাই পরস্পরকে আলিঙ্গন করে কান্নায় ভেঙ্গে পরলো। অনেক মানুষই এ দৃশ্য অবলোকন করে দীর্ঘ সময়ের জন্য আবেগে আপ্লুত হয়ে পরেছিলো। যা ছিলো আমার জন্য বিমর্ষতা আর বেশ খানিকটা উদ্বেগের বিষয়!

তুয়ান ওয়েন আমার ভাই নয়! আমার কোন ভাই নাই, আমার আছে শুধুমাত্র মন্ত্রী পরিষদ আর আমলাবৃন্দ!
আমি হুয়াং ফু ফুরেন-এর হুকুম অনুযায়ী কাজ করলাম না। তুয়ান ওয়েনের কাছে সামরিক কর্তৃত্বের স্মারক সীলমোহর বুঝিয়ে দিলাম না! আমি শুনলাম খোজা দাসদের দলপতি ইয়েন লাঙে-এর কথা, কাজ করলাম ওর পরামর্শ আর পরিকল্পনা মোতাবেক!
একটা আনুষ্ঠানিকতার আয়োজন করলাম, যেখানে তুয়ান ওয়েন-কে অংশগ্রহণ করতে হবে একটা তরবারী চালানোর প্রতিযোগিতায়, নিতে হবে বিজয়ী সনদ! আমার বিশ্বাস ইয়েন লাঙের কৌশলী পরিকল্পনা, আমার মধ্যে সঞ্চিত অদ্ভুত আর জটিল, ব্যক্ত করবার অযোগ্য ইচ্ছাগুলোর সাথে পুরোপুরি সংগতি পূর্ণই ছিলো। যা কিনা ছিলো তুয়ান ওয়েন-এর জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ বিপজ্জনক সামরিক দক্ষতার অনুশীলন, একই সাথে নিজের উপযুক্ততা প্রমাণ করার পরীক্ষা! দক্ষতা দেখানোর প্রতিযোগিতায় কে জিতলো, কে মরলো, আমার কাছে অবশ্য সেটা একেবারেই কোন গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার নয়, যেন এক টুকরা সেলাই বিহীন কাপড় ধরে টানাটানির যুদ্ধ যুদ্ধের মজার খেলা আর কি!

আগে থেকেই নির্ধারিত কার্যক্রম অনুযায়ী, ভোর বেলা পিছনের ফুল বাগানে তুয়ান ওয়েন আমার সাথে দেখা করতে এলো। উত্তর অঞ্চলের বালি ঝড়ের ঝাপটা ওর ফর্সা মুখের ত্বকের রঙ কালো করে ফেলেছে! ওর শীর্ণকায় দেহ আগের চেয়ে অনেক বেশি পেশীবহুল আর বলিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। রাজকীয় ফরমান অনুযায়ী তুয়ান ওয়েন ওর সাথে করে তলোয়ার বহন করে নিয়ে এসেছে।

জাঁকজমকপূর্ণ প্রশংসা করার মতো পোশাক পরিধান করে, খানিকটা হাবা গোবা মাথার বুদ্ধি ধারী সহোদর ভ্রাতা তুয়ান উ খুব কাছাকাছি থেকে ওকে অনুসরণ করে আসছে। এক দল সৈনিক ওদের ঘোড়াগুলোকে টেনে এনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে বাগানের এক পাশে সারি বদ্ধ গাছের বনের সামনে। আমার নজরে পড়লো, দীর্ঘ দিন পর দেখা হওয়া তুয়ান ওয়েন-এর চেহারার মধ্যে ফুটে উঠেছে একটা রহস্য ময় অপার্থিব ছায়া, একটা ছাঁপ! সে হাত উঠালো উপরে, আমি আরও স্পষ্ট দেখতে পেলাম ওর অবয়বে আমাদের পিতার ছায়া, ওর মুখটা যে হুবহু প্রয়াত সম্রাটের অনুরূপ!

“আমি ফিরে এসেছি। জাঁহাপনার ফরমানে লেখা সবগুলো আজ্ঞা, পূর্ণ মান্য করেছি!”, তুয়ান ওয়েন আমার কাছ থেকে প্রায় তিন হাত দূরে থেকে ঘাসের উপর নীচু হয়ে আমার প্রতি কুর্নিশ করলো। তারপর হাঁটু গেড়ে মেরুদণ্ড সোজা করে মাথা উঁচু করে আমার চোখের দিকে তাকালো। আমি খেয়াল করলাম ওর হাঁটুর নড়াচড়া, যা কিনা ওর কঠোর অনুশীলন করা দৃঢ়তাকে নির্দেশ করছিলো।
“তুমি কি জানো কেনো, তোমার প্রতি ফিরে আসার সমন জারি করা হয়েছে?”, আমি বললাম।

“জানি!”, তুয়ান ওয়েন আমার দিকে মুখটা উঁচু করে তাকিয়ে নিবিড়ভাবে আমার অবয়বের অভিব্যক্তি পর্যবেক্ষণ করলো কিছুক্ষণ। তারপর সে বললো, “শুধু জানি না, জাঁহাপনা কি চিন্তা করে পরস্পর বিরোধী একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন! যদি নান ফা এলাকায় সামরিক অভিযানের মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজের দায়িত্ব তুয়ান ওয়েন-এর স্কন্ধে অর্পণ করতে চান, তা হলে কেনই বা দক্ষ যোদ্ধার খ্যাতি অর্জনকারী সেনা কর্মকর্তা চাং ছাং চুন-এর সাথে বিপজ্জনক তলোয়ার চালানোর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সনদ অর্জনের বাধ্যবাধকতার শর্ত আরোপ করছেন?”

“কারণটা খুবই সহজ! তুমি খুবই সাধারণ একজন মানুষ! অবশ্যই তোমাকে তোমার দক্ষতা আর মেধার উপর্যুপরি প্রমাণ দিতেই হবে! অতিক্রম করতে হবে অনেকগুলো তল্লাশী আর পরীক্ষার সূক্ষ্ণ বিন্দু! দক্ষ যোদ্ধা চাং-এর সাথে সনদ অর্জনমূলক তলোয়ার যুদ্ধটা হচ্ছে ঐ রকম পরীক্ষারই একটা পদ্ধতি বৈ অন্য কিছু নয়!”, আমি খুব নীচু স্বরে অল্প সময়ের জন্য তুয়ান ওয়েনকে খানিকটা জেড়া করলাম। এরপর আমার পিছনে অবস্থানরত বিখ্যাত যোদ্ধা, অশি চালানোর কৌশলে অতি পারদর্শী চাং ছাং চুন, যার আসল নাম চাং চ্রি, তাকে তলব করলাম।

আমি বললাম, “তলোয়ারের ধারালো বুকের মোকাবিলা নির্ধারণ করবে জয় পরাজয়, জীবন ও মৃত্যু! এই প্রতিযোগিতার বিজয়ী নেতৃত্ব দিবে নান ফা সামরিক অভিযানের সকল সেনাদলের, তাকেই মনোনীত করা হবে সর্বাধিনায়ক হিসেবে!
আর যে পরাজিত হবে, তাকে আলিঙ্গন করবে মৃত্যু, তার দেহটা প্রবেশ করবে কবরে, তার আত্মার হবে চির প্রস্থান!”
আমি আরও বললাম, “যদি কেউ না চায় এমনটা, এক্ষুনি সে পিছিয়ে যাক, নিজে প্রত্যাহার করুক অবিলম্বে!”

“আমি পিছপা হবো না, জীবন মরণের শপথ আমি গ্রহণ করলাম!”, বললো সুনিপুণ যোদ্ধা চাং চ্রি।
“আমিও জোর দিয়ে বলছি, আমিও পিছপা হচ্ছি না!”
তুয়ান ওয়েন-এর সরু আর লম্বাটে অক্ষি যুগল যেন দৃষ্টি বুলালো সেই সুপরিচিত ঠান্ডা আলোর একটা রশ্মি ঢেলে দিয়ে, সে তাকালো ফুল বাগানের চার দিকে এক পাক। তার চেহারায় ফুটে উঠলো এক ধরনের অবজ্ঞায় ভরা মৃদু হাসি!
“রাজকীয় ফরমানকে সম্মান দেখিয়ে আমি বহু দূরের পথ অতিক্রম করে প্রত্যন্ত এলাকা থেকে রাজ প্রাসাদে ফিরে এসেছি, শুধুই কি জীবন মরণের খেলায় অংশ নেয়ার নিমিত্তে!”, তুয়ান ওয়েন, এই কথাগুলো ওর ছোট ভাই তুয়ান উ-কে উদ্দেশ্য করে বললো। ওর মুখে দেখা দিলো মৃদু হাসি। সে আরও বললো, “যদি দক্ষ যোদ্ধা চাং ছান চুন-এর তলোয়ারের আঘাতে আমি মারা যাই, তাহলে তুয়ান উ আমার মর দেহ গ্রহণ করবে সৎকারের জন্য।
সব কিছুই ঠিক আছে, আমি প্রস্তুত!”
শান্ত রাজ কুমার পদবী ধারী তুয়ান উ বসেছে একটা পাথরের বেদীর উপর। সে সব সময়ই পরিধান করে নাট্য অভিনেতার পোশাক! বিশেষ নাটকের একটা চরিত্র, নাশপাতি বাগানের ফল সংগ্রাহক দলের দলনেতার এক অদ্ভুত পোশাক! (চলবে