শামীম আহসান মহাবুল্লাহ : সব শেষে সে বললো, “যেহেতু জাঁহাপনা বলছেন, তাই আমি অবশ্যই অনুষ্ঠানে যাবো, হয়তো ওরা আমার সাথে রূঢ় ব্যবহার করতে সহস করবে না!”
এক দল মহিলা যাঁরা সবাই পরিধান করেছেন জাঁকজমকপূর্ণ পোশাক পরিচ্ছদ, আর অবয়বে মেখেছেন অতি উন্নতমানের প্রসাধনী। ওঁরা সবাই যেন নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে এসেছেন শতদল ফুলের বাগানে। ক্যাঁচ ক্যাঁচ শব্দ করে স্বর্ণ খোচিত রাজকীয় ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে হুয়াং ফু ফুরেন এসেছেন, সবাই তাঁকে অনুসরণ করে ঢুকেছে বাগানের ভিতরে।
সত্যি বলতে কি, সদ্য প্রষ্ফুটিত অপূর্ব সুন্দর ফুলগুলোর সৌন্দর্য উপভোগ করার মতো মনের মানুষ একজনও নাই! সবাই দু’জন, তিনজন করে দলবদ্ধ হয়ে পরস্পরের কানে কানে কথা বলছেন! তাঁদের আলোচনার বিষয়বস্তু সবই ফুল এবং বাগান বহির্ভূত, নিতান্তই পরচর্চা বৈ অন্য কিছু নয়!
একমাত্র হুই ছোট রানীই ইচ্ছাকৃতভাবেই সবার পিছনে অবস্থান করছে একা একা! সে অবশ্য খুব মন দিয়ে অবলোকন করছে পুরো বাগান জুড়ে সদ্য ফোটা বর্ণীল তাজা ফুলগুলো! সে একটু একটু করে এগুচ্ছে ফুলগুলোর দিকে চেয়ে চেয়ে! সে হয়তো ভুলেই গেছে পারিপার্শ্বিক জগতটাকে, বিভোর হয়ে গেছে দেখতে দেখতে ফুলের মন কাড়া সৌন্দর্য! হঠাত অসতর্ক অবস্থায় সে পাড়া দিলো ঘাসের উপর দিয়ে হেঁচড়িয়ে যাওয়া লান ছোট রানীর প্রসারিত রাজকীয় পোশাকের কোণায়! যার কারণই অকস্মাত ওর উপর আপতিত হলো এক বিশাল দুর্ভাগ্য আর বিপর্যয়!
তীব্র রাগের সাথে ঘাড় ফিরিয়ে লান ছোট রানী বললো, “কানা মাদী কুকুর!”, একই সাথে সে হুই ছোট রানীর অবয়বের উপর থু করে ফেললো এক গাদা থুতু!
অন্যান্য রানীরা অল্প ক্ষণের জন্য ওদের হাঁটা ক্ষান্ত দিলো, ঘাড় ফিরিয়ে তাকালো আর সেই সাথে সবাই নীরবে সমর্থন করলো লান ছোট রানীর ঐ শিষ্ঠাচার বহির্ভূত আচরণ!
“মায়াবিনী শিয়াল!”, হান ছোট রানী বললো।
“ডাইনি মেয়ে মানুষ”, বললো চিন ছোট রানী।
“হায়া-লজ্জা হীনা সস্তা জিনিস!”, বললো ফং বড় রানী।
শুরুতেই হুই ছোট রানীর আনমনা মন ব্যাপারটা ঠিক মতো ধরতে পারেনি, তাই ওর অবয়বে ফুটে উঠলো একটা ঘনিষ্ঠতা, আন্তরিকতা আর সৌহার্দ্যের আভা। একটু পরেই তিরোহিত হলো ওর উজ্জ্বল মুখের আভা, মনে হলো ঐ আন্তরিক সৌহার্দ্যের উজ্জ্বলতা কিসে যেন কামড় দিয়ে হঠাত করেই গলাধঃকরণ করে ফেলেছে! চার পাশে দাঁড়ানো অন্যান্য রানীদের ঐক্য জোটের দিকে তীব্র আতঙ্কের দৃষ্টি নিয়ে তাকলো সে! সে, ওর নিজের কানে শুনা শব্দগুলোকে যেন বিশ্বাস করতে পারছিলো না। সে মাথা নীচু করে নিজের পায়ের দিকে তাকালো। পরিশেষে ওর বিশ্বাস হলো, কি পরিমাণ অপমানজনক দূষিত পরহিংসক ঘটনাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে নিয়ে এসেছে নিতান্তই অসাবধানতা বশত করা ওর ছোট্ট একটা কাজ!
“তোমরা কি আমাকে গালি-গালাজ করছো?”, হুই ছোট রানী টান দিয়ে লান ছোট রানীর হাতটা ধরলো, খানিকটা অন্যমনস্কভাবেই, অবশ্য খুব গুরুত্ব দিয়েই বললো, “আমি কিন্তু বেখেয়ালে তোমার পোশাকের কোণায় পাড়া দিয়ে ফেলেছি!”
“কি বেখেয়ালে? তুমি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার পোশাকে পাড়া দিয়েছ ওটাকে ময়লা করার জন্য!”, লান ছোট রানী একটা শীতল হাসি হেসে হুই ছোট রানীর কাছ থেকে ওর হাতটা ছুটিয়ে নিলো। তারপর ওর দিকে না তাকিয়েই বললো, “আমার হাত ধরেই বা কি হবে? এর চেয়ে বরং তুমি গিয়ে জাঁহাপনার হাতটাই চেপে ধরো না!”
“ওর আসলে মানুষের হাত ধরে টানাটানি করার অভ্যাস, হাত ধরে টানাটানি না করলে ও’ তো সুখ পায় না! ফিন চৌ এলাকার সব সস্তা মেয়ে লোকগুলো এ রকমই হয়!”, একটা ঝগড়াটে দৃষ্টিতে হুই ছোট রানীর দিকে তাকিয়ে ফং বড় রানী বললো এই অমার্জিত কথাগুলো!
হুই ছোট রানীর অবস্থা হলো যেন শরত কালের এক টুকরা ঘাসের মতো, দমকা বাতাস যাকে নিয়ে যাচ্ছে উড়িয়ে! তারপর ধীরে ধীরে যা কি না এসে পড়ছে মাটিতে! সে দেখতে পাচ্ছে শতদল ফুলের বাগানের সব মহিলারাই তাদের হাঁটা থামিয়ে ঘাড় ফিরিয়ে তাকাতে শুরু করেছে এ দিকে, ওর দিকেই! হুই ছোট রানীর পা জোড়া যেন কোন একটা কিছুর সাথে লেগে হোঁচট খেলো! ওর চোখ জোড়া যেন দেখছে একটা দিবা স্বপ্ন, অবলোকন করছে একটা উদ্ভট ঘটনা! শতদল ফুল বাগানের ফুলের বাহার আর চার পাশে রেশমের কাপড় দিয়ে তৈরী মনোমুগ্ধকর সাজসজ্জা থেকে যেন ছুটে বেরিয়ে আসছে এক গুচ্ছ শক্তিশালী লাল আলোর রশ্মি! এই বিচ্ছুরিত লাল আলোর মধ্যে হুই ছোট রানীর চেতনা লোপ পেতে শুরু করেছে, সে অনুভব করলো যে সে পরে যাচ্ছে মাটিতে!
পরে লোক মুখে আমি শুনেছি, পুরো একটা দিন প্রায় অচেতন অবস্থায় হুই ছোট রানীর মুখ থেকে বার বার শোনা গেছে একটাই কথা, “জাঁহাপনা, আমাকে ক্ষমা করেন, আমাকে ক্ষমা করেন!”
কিন্তু আমি তখন বিশেষ কোন প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়াই গোপনে গোপনে যাচ্ছি প্রাসাদের বাইরে, রাজধানীর কেন্দ্রীয় মাঠে ইয়েন লাঙ-কে সাথে নিয়ে দড়াবাজীর খেলা দেখতে! মন কাড়া বিশেষ নৈপুণ্যের কোন কলা কৌশল ঐ দিন আমি দেখি নাই, তাই আমার মধ্যে জাগে নাই কোন আগ্রহ। সন্ধ্যা বেলায় রাজ প্রাসাদে ফিরে এসেই শুনতে পেলাম, হুই ছোট রানীর চরম ভাবে অপমানিত হওয়ার খবরটা!
চন্দ্র বছরের তৃতীয় মাসের বসন্ত কালের একটা রোদ ঝলমলে দিনে পুরো বাগানটাই যখন ভরে আছে প্রস্ফুটিত ফুলে, তখন হুই ছোট রানী শুয়ে আছে ওর রোগ শয্যায় পক্ষী ক‚জন ঘর নামের প্রাসাদে। ওর চোখের মনি আর উদ্বিগ্নতার নির্দেশক, কুঁচকে যাওয়া ভ্রæ জোড়ার দিকে চেয়ে, ওর প্রতি ভালোবাসা আর সহানুভূতিতে আমার মনটা ভরে গেছে।
রাজ বৈদ্য-কে ডাকা হয়েছে ওকে দেখতে আসার জন্য। হঠাত করেই আমাকে দেয়া হলো একটা অপ্রত্যাশিত শুভ সংবাদ! রাজ প্রাসাদে রাজ বৈদ্যই হচ্ছেন সব চেয়ে নামি দামি চিকিত্সক, তিনি বললেন, “জাঁহাপনাকে অভিনন্দন! রানী মা, গর্ভবতী হয়েছেন, এখন তিনি তিন মাসের অন্তঃসত্ত¡া।
আমার জীবনে প্রথম বারের মতো, আমি পিতা হতে চলেছি, এই আনন্দ আমার হৃদয়টাকে আপ্লুত করে তুলেছে। এতক্ষণ যে বিষন্নতা মনটাকে আচ্ছন্ন করে রেখে ছিলো, সেটা পুরোপুরি কেটে গিয়েছে! আমি তত্ক্ষণাত রাজ বৈদ্যকে বেশ কয়েকটা স্বর্ণ মুূদ্রা বখশিশ হিসেবে দিলাম। আমি প্রথিতযশা এই চিকিত্সককে প্রশ্ন করলাম যে, রাজ রক্তের ধারকটি কবে নাগাদ ভূমিষ্ঠ হতে পারে! তিনি তাঁর হাতের তালু মেলে ধরে আঙ্গুলগুলোর অগ্রাভাগ নেড়ে ইশারা করে বললেন, “শরতের শেষ ভাগেই আসবে ফসল তোলার সময়!”
আমি আবার প্রশ্ন করলাম, “রাজ বৈদ্য কি পূর্বাভাস দিতে পারবেন, শিশুটি কি ছেলে না মেয়ে হবে?”
কপালের দু’পাশের কেশ শুভ্র হয়ে যাওয়া রাজ বৈদ্য খানিকক্ষণ নীরবে থেকে বললেন, “রানী মার গর্ভে থাকা ভ্রূণটির ক্ষুদে রাজ কুমার হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি! কিন্তু চিন্তার বিষয় হলো, রানী মার শরীরটা খুবই দুর্বল, রাজ রক্তের ধারক ভ্রূণটির গর্ভপাত হয়ে বেরিয়ে যাওয়ার ভয়ও আছে; যদি না গর্ভবতীকে নিবিড় যত্নের মধ্যে রাখা না হয়!”
আমি হুই ছোট রানীর রাজকীয় শয্যার পাশে এসে বসলাম, ওর দুর্বল হাত দু’টোকে জড়ো করে আমার বুকের সাথে চেপে ধরলাম, এ কাজটা আমি প্রায়শই করার কারণে আমার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে, যা কি না মেয়েদের প্রতি আমার ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশের নির্দেশক! আমি দেখতে পাচ্ছি রোগ শয্যায়ও হুই ছোট রানীর আছে পরিপাটি সাজ, কপালের এক পাশে চুলের বেণীতে গোঁজা আছে একটা লাল ফুল! ওর দু’টো গালই ঢাকা পরে আছে পুরু স্তরের প্রসাধনীর মধ্যে। ওর হাসি ভরা অবয়বও আমার চোখকে ফাঁকি দিতে পারলো না, ওর ভিতরে জমে থাকা কষ্টের স্তুপকে। মুহূর্তের মধ্যেই আমার মনে হলো, আমার সামনে থাকা হুই ছোট রানী যেন একটা অপূর্ব সুন্দর কাগজের তৈরী মানুষ, যার দেহের অর্ধেকটা আছে আমার বুকের সাথে, বাকি অর্ধেকটা ভেসে যাচ্ছে বাতাসে!
“তুমি যে তিন মাসের অন্তঃসত্ত¡া, এ কথা তুমি আমাকে জানাও নাই কেনো?”
“ভয় পাচ্ছিলাম যে!”
“কিসের ভয়?
তুমি কি জানো না, এটা হচ্ছে সিয়ে রাজ প্রাসাদের জন্য একটা বিশাল আনন্দ আর সৌভাগ্যের সংবাদ!”
“এই দাসী ভয় পাচ্ছিলো।
আমি চাইনি, পরিপক্বতা লাভ করে উঠে নাই এমন একটা তথ্য একে বারে প্রারম্ভিক পর্যায়েই বাইরে রটে যাক, যা কি না উস্কে দিতে পারে কিছু মানুষকে, ডেকে আনতে পারে বিপর্যয়!”
“তুমি কি ভাবছো ফং বড় রানীসহ অন্যান্যরা ঈর্ষান্বিত হবে, তুমি কি ভয় পাচ্ছো, ওরা সবাই এক জোট হয়ে তোমার কোন ক্ষতি করবে?”
“ভয়! এই দাসী তো ভয়ে আড়ষ্ট হয়েই আছে!
ওরা তো আগে থেকেই আমায় সহ্য করতে পারে না।
এখন সম্রাটের উত্তরাধিকারীকে আমিই প্রথম গর্ভে ধারণ করে যেন লুন্ঠন করেছি ওদের চেহারার উজ্জ্বল আভা, এমন সংবাদ ওরা সহ্য করবে কি ভাবে?
আমি জানি ওরা যে কোন কিছু করতে পারে!”
“তুমি ভয় পেয়ো না, যদি তুমি শুধুমাত্র রাজকুমারকে জম্ম দিতে পারো, দিন শেষে আমি থাকবো সুযোগের অপেক্ষায়, নেকড়ে বাঘের বিষ দাঁত ওয়ালা ফং দেশের ঐ মেয়েটার, বড় রানীর মর্যাদা আমি বিলুপ্ত করে তোমাকে অধিষ্ঠিত করতে পারবো ঐ মর্যাদায়!
আমার পূর্ব পুরুষদের মধ্যে, প্রয়াত সম্রাট এমনটা করেছেন, সে রকম নজির তো আছেই!”
“কিন্তু, এই দাসী তবুও ভয় পাচ্ছে!”, হুই ছোট রানী দুই হাতে মুখ ঢেকে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো।
নুয়ে পরা ঝাউ গাছের মতো গোটা গর্ভকালীন সময়টা সে যেন আমার ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যেই থাকতে চাইছে।
সে বললো, “এই দাসীর শুধু একটাই শঙ্কা, সে পারবে তো, সফল সুস্থভাবে শিশুটির জম্ম দিতে!
আমি গর্ভধারণ করেছি, এই ব্যপারটা এখনও আমার কাছে ঘুমের ঘোরে দেখা মধুর স্বপ্নের মতোই লাগে!
এই দাসীর প্রতি জাঁহাপনার আছে একটা উচ্চাকাঙ্খা, যেটা কোনভাবেই বাদ দেয়ার নয়!
জাঁহাপনা হয়তো জানেন না, প্রাসাদের মধ্যে গর্ভে ধারণ করা ভ্রূণ ষড়যন্ত্র করে মেরে ফেলা হয়েছে, নষ্ট করা হয়েছে, এমন ঘটনার নজির আছে অনেক!
এই দাসী ভয় পাচ্ছে, সে কি গর্ভে ধারণ করা ভ্রূণটি শেষ অবধি রক্ষা করতে পারবে!”
“এ রকম ভিত্তিহীন বাজে কথা তুমি কোত্থেকে শুনেছো?”
“কিছুটা শুনেছি, কিছুটা অনুমান করেছি।
এ জগতে সব চেয়ে বিষাক্ত জিনিস হচ্ছে মেয়ে মানুষের মন!
শুধু মেয়েরাই পরিষ্কার বুঝতে পারে, অন্য মেয়েদের মনের মধ্যে লুকিয়ে থাকতে পারে সাপ আর বিচ্ছুর বিষের মতো বিষ!
শুধুমাত্র জাঁহাপনাই দিতে পারেন একটা সিদ্ধান্ত, রাখতে পারেন আমার একটা অবদার!”
“কি সিদ্ধান্ত নিতে বলছো আমায়?
তুমি শুধু বলো, আমি সানন্দে আমার আদরের এই ছোট রানীর আব্দার রাখবো!”
“জাঁহাপনা, আপনি পক্ষী ক‚জন ঘরে থাকার জন্য চলে আসেন, অথবা এই দাসীর জন্য থাকার ব্যবস্থা করেন শুদ্ধাচার অনুশীলন গৃহে। শুধুমাত্র জাঁহাপনার পাশে দিন রাত থাকতে পারাটাই হবে আমার আত্মরক্ষার সবচেয়ে বলিষ্ঠ বর্ম! এটা হলেই, নিজ দেহের উপরে আগত দুর্ভাগ্যকে এড়িয়ে যেতে পারবে এই দাসী!”, অশ্রু ভরা চোখে বড় আশা নিয়ে আমার দিকে তাকালো হুই ছোট রানী! এরপর অপ্রত্যাশিতভাবেই খাটের কিনারায় এসে ষষ্টাঙ্গে প্রণাম করে অনুনয় করে বললো, “জাঁহাপনা, আমাকে কথা দিন, ভ্রূণ আর ভ্রূণর মায়ের জীবন বাঁচান!”
আমি নিঃশব্দের মন্তব্য করলাম, অর্থাত নীরব রইলাম, মুখ ঘুরিয়ে হুই ছোট রানীর দৃষ্টি থেকে মুখ লুকালাম। সিয়ে রাজ প্রাসাদের অধীশ্বর ‘সার্বভৌম’ সম্রাট হিসেবে, আমি ভালো করেই জানি হুই ছোট রানীর এই আবদার পূর্ণ হওয়ার নয়! সে শুধু শুধুই অলীক কল্পনায় বিভোর হয়ে ভাবছে যে ওর ইচ্ছাটা পূর্ণ হবে! আর সেটা পূরণ করতে গেলে ভাঙ্গতে হবে রাজ প্রাসাদের রীতি, ভাঙ্গতে হবে ভূতপূর্ব সব সম্রাটদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত সর্বজন স্বীকৃত ‘আদর্শ জীবন ধারা!’ যদি আমি রাজিও হই ওর করা আবদারটা রাখতে তবুও রাজি করানো সম্ভব নয় ‘ওনাদের’!
সিয়ে রাজ প্রাসাদের উপরে নীচে, কেউ ই মানবে না হুই ছোট রানীর করা এই আবদার! যদিও বা এখন আমি ওকে কথা দেই যে ওর অনুরোধ আমি রাখবো, কিন্তু আমি জানি না আমার দেয়া কথা আমি কতটুকু রাখতে পারবো! (চলবে)