সোনা কান্তি বড়ুয়া : কানাডায় ধর্ম বিশ্বাসের কারণে একটি মুসলিম পরিবারের চার জনকে ট্রাক-চাপা দিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে ২০ বছর বয়সের এক শেতাঙ্গ যুবক নাথালিয়ান ভেল্টম্যান, টরন্টোর নিকটবর্তী শহর লন্ডনে (8 June 2021)! সকল ধর্মের বিশ্বমৈত্রীতে বিদ্বেষটাই ধর্মান্ধদের অধর্ম! শেতাঙ্গ ধর্মান্ধদের ধর্ম এই বিষয়টার মধ্যে যে সা¤প্রদায়িক বিদ্বেষের মশলা আছে তা জনমানসের রন্ধ্রে রন্ধ্রে সংক্রমিত! খ্রিস্টান চরমপন্থিরা ধর্মের ধুঁয়ো তুলে কানাডার মুসলিম হত্যা মানবজাতির ধর্ম নয়! কানাডা আমেরিকায় খ্রিস্টান ধর্ম রাজনীতির হাতিয়ার নয় যেন! শোক ও সমবেদনা হতভাগ্য কানাডার মুসলিম পরিবারের প্রতি! জাগো মানুষ জাগো। মনুষ্যের জয়, মনুষত্বের জয়, ঘুমঘোরে আর আছন্ন থাক না! আমরা রামুর বৌদ্ধ বিহারে ধ্বংসযজ্ঞ ট্রাজেডি দেখেছি কিন্তু ধর্ম বিশ্বাসের কারণে ইসলাম ধর্ম অবমাননার অপবাদে রামুর মুসলমান ফেইসবুকে কোরআনের উপর পদচিহ্ন অপরাধীদের বিচার পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকার ভুলে গেছেন।
জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক! কী ভাবে, মানুষকে (আশরাফুল মাকলুকাত) মানুষ না ভাবে মুসলমান ভাবতে হয়? প্রাচীন বৌদ্ধদেশ ইসলামি রাজনীতির দখলে কেন? পলিটিক্যাল ইসলাম ধর্ম বিশ্বাসের কারণে বৌদ্ধ ধর্মকে নিশ্চিহ্ন করে ইসলাম ধর্মকে মহিমান্বিত করতে প্রাচীন বৌদ্ধদেশ আফগানিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, ভারত, পাকিস্তান (তক্ষশীলা), কাশ্মীর, মালয়েশিয়া এবং বাংলাদেশকে দখল করল! বাংলাদেশে পাঠক দ্বিমত আছেন নাকি? বাংলাদেশে বৈধভাবে চিহ্নিত শত্রু হিন্দু এবং বৌদ্ধদের জমি অধিগ্রহণ (ENEMY PROPERTY & Pahari Jumma lands) করে মুসলমানকে দেওয়া injustice আইনগতভাবেই বৈধ বাংলাদেশে! মানুন আর নাই মানুন। ভারতে সিন্ধু প্রদেশে ৭১১ সালে মিথ্যাবাদী’, ‘লোভী’, ‘পশুর অধম মোহাম্মদ বিন কাশিম ধর্ম বিশ্বাসের কারণে বিভিন্ন স্থানে লুট ও পৈশাচিক হত্যাকান্ড চালিয়ে বাদর নামক স্থানে সিন্ধুর রাজা দাহিরের উপর অর্তকিত আক্রমণ চালালেন!
বাংলাদেশে ধর্ম পরিবর্তনের হলফনামাগুলো এমন হয় জানা ছিলো না? ধর্ম বিশ্বাসের কারণে রীতিমতো রাষ্ট্রীয় স্ট্যাম্পে ডকুমেন্টেশন করে হিন্দু এবং বৌদ্ধধর্মকে খারাপ সাব্যস্ত করে ইসলাম ধর্মকে মহিমান্বিত করা, এই বিষয়টার মধ্যে যে সা¤প্রদায়িক বিদ্বেষের মশলা আছে তা জনমানসের রন্ধ্রে রন্ধ্রে সংক্রমিত? এই পদ্ধতি বদলানোর কি উপায় নাই? ইসলাম ধর্মের পাঠ্য বই অমুসলিম ধর্ম নিয়ে নিয়মিতই কটূক্তি করে যাচ্ছেন!
পাঠ্যবইতে বিশ্বমৈত্রী নিরবে কাঁদে! সর্বপ্রথম ‘বাঙালি শব্দ’ চর্যাপদের মহাকবি ভুসুকু কর্তৃক আবিস্কৃত হল। রাজনীতি ও ধর্ম মানবাধিকারকে ধ্বংস করা অমানবিক অপরাধ বলে কবি দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের ভাষায়, “গোত্র দেবতা গর্তে পুরিয়া, / এশিয়া মিলাল শাক্যমুনি (গৌতমবুদ্ধ)।” ইতিহাস আমাদের শিখিয়েছে ধর্ম বিশ্বাসের কারণে ইসলামি রাজনীতি বৌদ্ধ প্রধান দেশকে অজগরের মতো গিলে ফেলেছে! বৌদ্ধ ধর্মকে খারাপ সাব্যস্ত করে ইসলাম ধর্মকে মহিমান্বিত করা কেন?
The Buddhist Monk ভদন্ত শরণংকর থের বলেন, “বাংলাদেশে বৌদ্ধদের সংখ্যা মাত্র শতকরা ০.৫% জনসংখ্যা। সে ক্ষেত্রে যদি মুসলিমরা মহৎ এবং মানবিক না হত তাহলে এত অল্প সংখ্যক বৌদ্ধ জনগোষ্ঠী বাংলাদেশে ঠিকে থাকতে পারতো না। বাংলা ভাষা ও বাংলাদেশী হত্যাযজ্ঞই কি পাকিস্তানী ইসলাম? জামাত মৌলবাদীরা পাকিস্তানীদের বন্ধু হয়ে আত্মঘাতী ইসলামিক মৌলবাদী গোষ্ঠি ঘরের শত্রু বিভীষণ এবং মুক্তিযুদ্ধে পহেলা নম্বরের দুশমন। জামাত মৌলবাদীরা বাংলাদেশে ২০১৯ সালে মুসলমান রচিত ‘ইসলাম ধর্মের পঞ্চম শ্রেণির ইসলাম ধর্ম ও নৈতিকতা শিক্ষা’ বইয়ের ১৬ ও ১৭ নম্বর পৃষ্ঠায় পাঠ্য বইতে বলছে “অমুসলিমরা ‘মিথ্যাবাদী’, ‘লোভী’, ‘পশুর অধম!”
পবিত্র কুরআন শরীফের বিভিন্ন আয়াত (৬ : ১০৯ এবং ২২ : ৩৮) লঙ্ঘন করে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক বাহিনী ও তার দোসর রাজাকার ‘মিথ্যাবাদী’, ‘লোভী’, ‘পশুর অধম’! আলবদর চক্র যেখানে সেখানে পুরুষদের বস্ত্র উন্মোচন করে মুসলমানিত্ব পরীক্ষা করা হতো, মুসলমান না হওয়ার একমাত্র শাস্তি ছিল তাৎক্ষণিক মৃত্যু। ইসলামের নামে আল্লাহের আমানত নর-নারীসহ শিশু (আশরাফুল মাকলুকাত) হত্যা করেছে দিনের পর দিন। মৌলবাদীরা ধর্মের মুখোশ পরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে তিলে তিলে ধ্বংস করবে।
ইতিহাস আমাদের শিখিয়েছে পলিটিক্যাল ইসলাম মুসলিমরা মিথ্যাবাদী’, ‘লোভী’, ‘পশুর অধম! কাজি নোমানি মাগরিবি বর্ণনা করেছেন, “নবী কন্যা ফাতেমা (রা:) বললেন : “শোক ও দুঃখ-ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে রাত কাটিয়েছি। শোক এই কারণে যে, প্রিয় নবীকে হারিয়েছি ও দুঃখ এই জন্য যে, তাঁর স্থলাভিষিক্তের উপর আরোপিত জুলুম। আল্লাহর কসম করে বলছি: এতে নবীর উত্তরসূরীর প্রতি অবমাননা হয়েছে (মানাকিবু অলে আবি তালিব, (2/205 FACEBOOK টীম নাস্তিক বাংলা July 27, 2019)! হযরত ফাতেমা তাঁর স্বামি ও আক্রমণকারী ব্যক্তিদের মাঝে দাঁড়িয়ে প্রতিরোধ করেছিলেন, তখন ‘কুনফুয’ ফাতেমার উরুতে এমন আঘাত হানল যে, তার দাগ বেন্ডেজের আকার ধারণ করল। আবুবকর কুনফুযকে ফাতেমাকে মারার জন্য পাঠিয়েছিল! তাই কুনফুয ফাতেমাকে ঘর থেকে আছার দিয়ে ফেলে দিল, তখন তাঁর উরুর হাড় ভেঙ্গে গেল ও পেটের সন্তানের গর্ভপাত ঘটল। অতঃপর দীর্ঘ শয্যাশায়ী হল এবং সে অবস্থাতেই শহীদি মৃত্যু বরণ করলেন (এহতেজাজ, ১/৮৩)।”
ফাতেমার আ. মৃত্যু ও নানাবিধ গোপণ রহস্য! (Written by Dr. samiul Haqu)! ফাতেমার আ. মৃত্যু ও নানাবিধ গোপণ রহস্য! প্রশ্ন: উৎসুক হৃদয়ে আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এমন হতে পারে যে, কী কারণে হযরত ফাতেমা সালামুল্লাহি আলাইহা নবী স. এর ওফাতের মাত্র তিন মাসের মধ্যে মারা যান? তবে কি তিনি কোন রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন, নাকি তাঁর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল। যদি স্বাভাবিক মৃত্যু না হয়ে থাকে, তবে কেন আমরা সুন্নি আলেম ওলামাদের মুখ থেকে তার কারণ সম্পর্কে কিছু শুনতে পাই না? উত্তর: এ প্রশ্নের উত্তর দেয়ার আগে একটি ভূমিকা দেয়া প্রয়োজন মনে করছি। আর ভূমিকাটি হল আমার বাস্তক একটি ঘটনা।”
ধর্ম বিশ্বাসের কারণে আফগানিস্তানের বামিয়ান বুদ্ধমূর্তিকে নিয়ে মুসলমান রাজনীতির ভয় কেন? ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করার উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ২০১৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্য বইতে বৌদ্ধধর্ম ও বৌদ্ধদেরকে যেভাবে তুলে ধরা হয়েছে, তা নিতান্তই (A father made her daughter prostitute) আপত্তিকর এবং বিব্রতকরও (Buddhist family life is not good) বটে। (১) Mr. Azizul Hoq Khan (২) Mr. Mahamudul Ala (৩) Mr. Bilas Mallik and (৪) Mr. Ujjal Chakraborty “লেখকগণ “Gender, Society and Development শীর্ষক বইটি লিখেছেন (For B.A (Honours) Fourth Year Social Science students in Bengali “গ্রন্থ লিখে প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন যে, ইসলাম ও হিন্দু ধর্ম বৌদ্ধ ধর্মের চেয়ে উন্নত, better! ধর্মের বিশ্বমৈত্রীতে বিদ্বেষটাই ধর্মান্ধদের অধর্ম! বাংলাদেশে ইসলাম ধর্মকে মহিমান্বিত করতে ২০১৯ সালে মুসলমান রচিত ইসলাম ধর্মের পাঠ্য বই অমুসলিম ধর্ম নিয়ে নিয়মিতই কটূক্তি করে যাচ্ছেন!
লেখক গোলাম মুস্তাফা ধর্ম বিশ্বাসের কারণে ১৯৪০ সালে “বিশ্বনবী” নামক একটি গ্রন্থ লিখে প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন যে, ইসলামি ধর্মান্ধগণের বৌদ্ধ হত্যাযজ্ঞের জন্যে বৌদ্ধগণ মুসলমান হয়েছিলেন কিন্তু সবকিছু শেষ হয়ে গেলো না। পলিটিক্যাল ইসলাম আফগানিস্তানের বামিয়ান বুদ্ধমূর্তিকে নিশ্চিহ্ন করে ধর্মান্ধ ইসলামি রাজনীতির আসক্তি ভুলিয়েছে মনুষ্যত্ব, কত অন্ধকারে লেখা হচ্ছে হিন্দু বৌদ্ধদের নির্যাতনের গাথা! সকল ধর্মের বিশ্বমৈত্রীতে বিদ্বেষটাই ধর্মান্ধদের অধর্ম! তুমি সন্ত্রাসী মুসলমান যে মানব, অখন্ড মানব জাতি সেই মানব! বৌদ্ধধর্মকে খারাপ সাব্যস্ত করে ইসলাম ধর্মকে মহিমান্বিত করতে লেখক গোলাম মুস্তাফা, লেখক হুমায়ুন আহমেদ এবং মুসলমান লেখকগণ বই লিখেছেন। এবং ধর্ম বিশ্বাসের কারণে ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করার উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে লেখক হুমায়ুন আহমেদ ‘রাবনের দেশে আমি ও আমরা’ বইটি লিখেছেন (in 2010)।
“ঘটনাটি এরূপ: ভূমিকা! (FACEBOOK টীম নাস্তিক বাংলা)! নবীর স. আহলে বাইতকে ভালোবাসার কারণে অনেক বাধার সম্মুখিন হতে হয়েছে। একদিন আমার বড় ভাই আমাকে জিজ্ঞেস করে বলল যে, তুই যে মাযহাবের অনুসরণ করিস, আলেম ওলামারা কেন তার বিরোধিতা করে? আমি বললাম : ভাইজান! যে আলেম ওলামারা আমার মাযহাবের বিরেধিতা করে, তাদেরকে প্রশ্ন করো যে, হযরত ফাতেমা জাহরা কত বছর বয়সে মারা গিয়েছেন? তাঁর মৃত্যুর কোন কারণ ছিল কি? নাকি তিনি স্বাভাবিক মৃত্যু বরণ করেছিলেন। যদি তুমি আমার এসব প্রশ্নের উত্তর এনে দিতে পার, তবে আমি তোমাকে বলব যে, এসব আলেমরা কেন আমাদের বিরোধিতা করে। আমার সেই ভাই ১৮ মাস হল মারা গেছেন, কিন্তু তিনি আমাকে সেই প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যেতে পারেননি; হয়তো আলেমদের কাছ থেকে গ্রহণ যোগ্য কোন উত্তর পাননি। তবে এ কথা সত্য যে, তারপর থেকে আমার ভাই কখনো আমার সাথে বিরোধিতা করেননি। আমি নিজেও যখন উপরোক্ত প্রশ্নাদির উত্তর জানতে পেরেছি, তখন থেকেই আমি আহলে বাইতকে ভালোবাসতে উদ্বুদ্ধ হয়েছি এবং আমি মনে করি: যেকোন বিবেকবান মুসলমানই এসব প্রশ্নের উত্তর জানলে নবীর আহলে বাইতকে আগের চেয়ে আরো বেশি ভালোবাসবে।
যেহেতু প্রশ্নের উত্তর দেয়ার আগে ভূমিকা টেনে পাঠকবর্গকে বিরক্ত করেছি, তাই এ পর্যায়ে উপরোক্ত প্রশ্নাদির জবাব সংক্ষেপে উল্লেখ করব তার পর সম্ভব হলে প্রতিটি প্রশ্নে জবাব বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করব ইনশা আল্লাহ। সংক্ষিপ্ত উত্তর! ঠিক যেভাবে প্রশ্নে উল্লেখ করেছি যে, নবী স. এর ওফাতের তিন মাসের মধ্যেই ফাতেমা জাহরা মুত্যু বরণ করেছিলেন, তার এ মৃত্যু স্বাভাবিক মৃত্যু ছিল না। রাসূল স. এর ওফাতের পর হযরত আলীকে জোর করে বাইয়াত করানোর জন্য তাকে যখন বাড়ি থেকে নিয়ে যেতে আসা হয়, তখন হযরত ফাতেমা সা. বাধা দেন এবং আগন্তক লোকদের সামনে তিনি যান। যাতে তারা আলীকে নিতে না পারে। কিন্তু এই বাধাই অবশেষে ফাতেমার মৃত্যুর কারণ হয়ে যায়। এ জন্য বলা যায় যে, নবী স. এর মৃত্যুর পর তাঁর রেখে যাওয়া বেলায়াতের রক্ষক হিসেবে প্রথম শহীদ হল হযরত ফাতেমা সালামুল্লাহি আলাইহা।
অথচ সুন্নি আলেম ওলামারা এ বিষয়ে কোন কথা বলেন না। হয়তো কেউ কেউ তার কারণ জানেন না, অথবা জেনে বুঝেও তা বলেন না। কারণ তখন হয়তো সুন্নি মতাদর্শ প্রশ্নের সম্মুখিন হবে!
ফাতেমার আ. মৃত্যুর মূল রহস্য! প্রশ্ন ৩ : ফাতেমা আ. এর মৃত্যুর মূল রহস্য কী?
উত্তর : এ পশ্নের উত্তর দেয়ার পূর্বে তার দৈহিক আঘাতের কারণাদি সম্পর্কে অবগত হওয়া প্রয়োজন।
ফাতেমা আ. এর দৈহিক আঘাত প্রাপ্তির মূল কারণসমূহ-
ফাতেমা আ. এর দৈহিক আঘাত প্রাপ্তির মূল কারণসমূহ নিম্নরূপ:
১- নবীর মৃত্যুতে গভীর শোক, সমবেদনা ও কান্না।
২- নবীর ওসি অর্থাৎ হযরত আলীর মজদুরিয়াত ও নিঃসঙ্গতার কারণে আত্মিক শোক ও প্রতিরক্ষা ছিল দৈহিক আঘাতের দ্বিতীয় কারণ।
ইবনে শাহর অশুব (মৃ: ৫৯৯ হি.) বর্ণনা করেছেন :
“উম্মে সালমা ফাতেমার ঘরে প্রবেশ করে বলল : ওহে নবী কন্যা! কিভাবে রাত কাটালেন।
ফাতেমা বললেন : শোক ও দুঃখ-ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে রাত কাটিয়েছি। শোক এই কারণে যে, প্রিয় নবীকে হারিয়েছি ও দুঃখ এই জন্য যে, তাঁর স্থলাভিষিক্তের উপর আরোপিত জুলুম। আল্লাহর কসম করে বলছি: এতে নবীর উত্তরসূরীর প্রতি অবমাননা হয়েছে (মানাকিবু অলে আবি তালিব, ২/২০৫।)।[১]
৩- ফাতেমা সা. এর পবিত্র পদ ও মর্যাদার অবমাননা ছিল তৃতীয় কারণ (নাহজুল বালাগার শারহ, ইবনে আবিল হাদিদ, ১৬/২১৪) ।
আল্লামা তাবারসি (মৃ: ষষ্ট হিজরি) বর্ণনা করেছিন:
[ফাদাকের খোৎবা সমাপ্তির পর ফাতেমা বলেছিলেন :
হায়, যদি এমন জুলুমের স্বীকার হবার পূর্বে মারা যেতাম! (এহতিজাজ, খন্ড ১, পৃ ১০৭)।
অতএব, বলা যায় যে, ফাতেমার শোকের কারণ শুধু পিতার মৃত্যুর মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। বরং তার সাথে আরে দু’টি ব্যাথা যোগ হয়েছিল।
অতএব, উপরোক্ত কারণাদি পর্যালোচনা করার পর প্রমাণিত হয় যে, ফাতেমা জাহরা সা. আমিরুল মুমিনিন হযরত আলীর পৃষ্ঠপোষকতা করার কারণে আত্মিক ও দৈহিক ভাবে মারাত্মক আঘাত প্রাপ্ত হন। আর তাই ছিল তাঁর মৃত্যু ও অসুস্থতার মূল কারণ। যে আঘাত খলিফার দরবারি লোকদের পক্ষ থেকে ফাতেমার ঘরে হানা হয়েছিল।
মুহাম্মদ ইবনে জারির ইবনে রুস্তম তাবারি (মৃ: চতূর্থ হিজরি) বর্ণনা করেন:
ইমাম আবু আব্দিল্লাহের কাছ থেকে আবু বাছির বর্ণনা করেছেন : ওমরের নির্দেশে তার ভৃত্য ‘কুনফুয’ তরবারির গিলাফ দিয়ে ফাতেমাকে আঘাত হেনেছিল, যে কারণে মুহসিনের গর্ভপাত ঘটে এবং সে কারণেই ফাতেমা আ. মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন (দালায়েল উল ইমামাহ/৪৫)।
কাফয়ামি (মৃ: ৯০৫ হি.) বর্ণনা করেছেন :
নিশ্চয় ফাতেমার মৃত্যুর কারণ হল: তিনি আঘাত প্রাপ্ত হলেন ও তাতে গর্ভপাত হল (মেসবাহ/৫২২)।
প্রিয় পাঠকবর্গ! উপরোক্ত বিষয়াদি থেকে সত্যই কি বলা যায় না যে, ফাতেমা জাহরার মৃত্যু ছিল শাহাদাতের মৃত্যু?
তাবারসি বর্ণনা করেন :
হযরত ফাতেমা তাঁর স্বামি ও আক্রমণকারী ব্যক্তিদের মাঝে দাঁড়িয়ে প্রতিরোধ করেছিলেন, তখন ‘কুনফুয’ ফাতেমার উরুতে এমন আঘাত হানল যে, তার দাগ বেন্ডেজের আকার ধারণ করল। আবুবকর কুনফুযকে ফাতেমাকে মারার জন্য পাঠিয়েছিল! তাই কুনফুয ফাতেমাকে ঘর থেকে আছার দিয়ে ফেলে দিল, তখন তাঁর উরুর হাড় ভেঙ্গে গেল ও পেটের সন্তানের গর্ভপাত ঘটল। অতঃপর দীর্ঘ শহ্যাশায়ী হল এবং সে অবস্থাতেই শহীদি মৃত্যু বরণ করলেন (এহতেজাজ, ১/৮৩)।”
কাজি নোমানি মাগরিবি বর্ণনা করেছেন : মুসলিমরা মিথ্যাবাদী’, ‘লোভী’, ‘পশুর অধম।
ইমাম জাফর সাদিক আ. তাঁর পিতার কাছ থেকে বর্ণনা করেছেন : রাসূল স. ফাতেমাকে চুপিসারে বললেন : তাঁর ওফাতের পর তার আহলে বাইতের মধ্য থেকে সর্ব প্রথম যে তাঁর সাথে গিয়ে মিলিত হবে, সে হল ফাতেমা আ.। অতঃপর যখন নবী স. মৃত্যু বরণ করলেন এবং তার ঘরে হামলা করে তাকে আহত করা হল, তখন তিনি শয্যাশায়ী হয়ে গেলেন, ক্রমশ দূর্বল হয়ে পড়লেন ও এমন ভাবে শুকিয়ে গেলেন যেন মনে হয়েছিল শুকনো কাঠি হয়ে গেছেন (দায়ায়িমুল ইসলাম, ১/২৩২)।
৪- ফাতেমার বাড়িতে হামলার সময় তাঁর দেহে মারাত্মক আঘাত হানা হয়েছিল। অন্য ভাষায় বলতে গেলে বলতে হয় : তার পিতার বিরহ বিচ্ছেদের সাথে সাথে তাকে এমন আঘাত করা হয়েছিল, যার ফলে তিনি ধরাশায়ি হয়ে গিয়েছিল। এ বিষয়টি ভুলে গেলে চলবে না।
শেখ তুসি বর্ণনা করেন :
শিয়াদের মধ্যে এ বিষয়ে প্রসিদ্ধি রয়েছে ও কোনরূপ মতপার্থক্য নেই যে, ফাতেমার পেটে ওমর এমন আঘাত হেনেছিল যে কারণে গর্ভের সন্তান পড়ে যায় (তালখিছুশ শাফি, ৩/১৫৬)।
মুহাম্মদ ইবনে জারির ইবনে রুস্তম তাবারি (মৃ: চতূর্থ হিজরি) বর্ণনা করেন:
নবী স. যখন মারা গেলেন, তারপর যেদিন ফাতেমার ঘরে হামলার ঘটনা ঘটল, আমিরুল মুমিনিনকে জোরপূর্বক বের করে আনা হল এবং ঐ পুরুষের দ্বারা যে বালা ফাতেমার উপর আসল, যে কারণে তাঁর গর্ভের পূর্ণ ছেলে-সন্তানের গর্ভপাত ঘটল। আর এটাই ছিল তাঁর অসুস্থতা ও মৃত্যুর মূল কারণ (দালায়েল উল ইমামাহ/২৭)।
আল্লামা হিল্লি (মৃ: ৭২৬ হি.) বর্ণনা করেন,
ফাতেমাকে আ. এমন আঘাত হানা হল, যে কারণে তার গর্ভের সন্তান ‘মোহসেন’ পড়ে গেল … (শারহুত তাজরিদ/৩৭৬)।
মুক্তিযুদ্ধে ২ লক্ষ মা-বোনকে ধর্ষণ জামায়াতে ইসলামী ও পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ছিল! অথচ এই ধর্ষণ অপরাধের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনতে ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের ব্যবস্থা করেছেন। বাংলাদেশে যুগ যুগ ধরে ধর্মান্ধদের চাষ করে আসা ঈর্ষা, ঘৃণা, বিদ্বেষ হিন্দু বৌদ্ধদের আলাদা রাখে। মানুষকে মানুষ না ভাবার, হিন্দু বৌদ্ধদেরকে ঘৃণা করার, তার কাছ থেকে তার মান কেড়ে নেওয়ার! ধর্মান্ধ মুসলমান রাজনীতির হিন্দু বৌদ্ধ নির্যাতন! বৌদ্ধ ধর্মের প্রতি ভয়ঙ্কর বিদ্বেষ নিয়ে মুসলমান লেখকগণ বই লিখেছেন।
বাংলা ভাষা ও বাংলাদেশী হত্যাযজ্ঞই কি পাকিস্তানী ইসলাম? মুসলমান ফেইসবুকে কোরআনের উপর পদচিহ্ন কি বাংলাদেশী ইসলাম? ইসলামি ধর্মান্ধগণ লালমনিরহাটের বুড়িমারীতে কোরআন অবনামনার ছুতোয় আবু ইউনুস শহীদুন্নবী জুয়েলকে পিটিয়ে আহত এবং পরে খুন করে আগুনে জ্বালিয়েছে! রামুর ইসলামি ধর্মীয় রসের হাঁড়িতে রাজনীতিকে মজাদার করতে মানুষের মনুষ্যত্ব কেড়ে নেওয়াটাই রামুর মুসলমান রাজনীতি! আমরা রামুর বৌদ্ধ বিহারে ধ্বংসযজ্ঞ ট্রাজেডি দেখেছি কিন্তু ধর্ম বিশ্বাসের কারণে ইসলাম ধর্ম অবমাননার অপবাদে রামুর মুসলমান ফেইসবুকে কোরআনের উপর পদচিহ্ন অপরাধীদের বিচার পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকার ভুলে গেছেন।
লেখক: সোনা কান্তি বড়ুয়া (Bachelor of Arts, University of Toronto), সাবেক সভাপতি, বাংলা সাহিত্য পরিষদ, টরন্টো, খ্যাতিমান ঐতিহাসিক, কথাশিল্পী, বিবিধগ্রন্থ প্রণেতা প্রবাসী কলামিষ্ট, লাইব্রেরীয়ান, বিশ্ববৌদ্ধ সৌভ্রতৃত্ব পত্রিকার সহ সম্পাদক এবং জাতিসংঘে বিশ্ববৌদ্ধ প্রতিনিধি!