শামীম আহসান মহাবুল্লাহ : আমি অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই শুনতে পেলাম রাজকুমারী ওয়েন তা-এর অবয়ব খুবই সাদামাটা, সে মোটেও রূপবতী নয়! সে ব্যক্তিত্ব আর স্বভাবের দিক থেকেও অদ্ভুত ধরনের মেয়ে মানুষ! আর বয়সে সে কাঁটায় কাঁটায় আমার চেয়ে তিন বছরের বড়!
কয়েক দিন পর লিউ ছিয়েন-ওর কাজ শেষ করে রাজ দরবারে ফিরে আসলো। সে সাথে করে নিয়ে এসেছে রাজ কুমারী ওয়েন তা-এর সোনার সুতায় কারুকাজ করা মুখ বন্ধ একটা ছোট থলে, যেটা থেকে ভেসে আসছিলো সুবাস! সিয়ে রাজ প্রাসাদের উপরে-নীচে সব জায়গায়ই বয়ে গেলো আনন্দের সুবাতাস! আমি বিলাস কেন্দ্র দালান থেকে দরবারের কাজ শেষ করে প্রাসাদে ফেরার পথে লক্ষ্য করলাম বেশ ক’জন প্রাসাদ ভৃত্য আর প্রাসাদ দাসী বারান্দার নীচে দাঁড়িয়ে হাসাহাসি করছে, পরস্পরের কানে কানে কি যেন বলাবলি করছে! আমার প্রচন্ড রাগ হলো, আমি আমার এই নামহীন রাগকে সংযত করতে পারলাম না। ইয়েন লাঙ-কে হুকুম দিলাম, দাস-দাসীদের এই হাসাহাসি আর কানাকানির জটলাকে এক মুহূর্তে দেরী না করে ভেঙ্গে দিতে!
ওদের কেউ-ই যেন না হাসে! আমি ইয়েন লাঙ-কে বললাম, যে-ই হাসবে, তার গালে-ই যেন মাড়া হয় সজোড়ে এক থাপ্পড়! তিন দিন পর্যন্ত যেন প্রাসাদে কেউ না হাসে!
ইয়েন লাঙ আমার হুকুম তমিল কারলো। পরে সে আমার কাছে ওর কাজের বিবরণী দাখিল করেছিলো। সত্তুর জন প্রাসাদ দাস ও দাসীকে হাসার অপরাধে সে শাস্তি দিয়েছিলো চড় মেরে! এক টানা এতগুলো চড় মারার কারণে ফুলে উঠেছিলো ওর হাতের মাংস পেশী, হাতের ব্যাথা ছিলো কয়েক দিন!
বিয়ের অনুষ্ঠানের আগের রাতে আমি একটানা কয়েকটা অদ্ভুত স্বপ্ন দেখলাম। ঘুমের ঘোরে দেখলাম, আমি যেন হয়ে গেছি একটা চড়ুই পাখী! উড়ে বেড়াচ্ছি প্রাসাদের ভেতরে! প্রাসাদের মোট আঠারোটা ফটক মুহূর্তের জন্য আমার সামনে দৃশ্য মান হচ্ছে, আবার মিলিয়ে যাচ্ছে!
স্বপ্নে আমার সামনে ভেসে উঠলো একটা গোলক ধাঁধা লাগানো সাদা আলোয় ভরা খালি জায়গা। ঐ খালি জায়গা জড়ো হয়েছে এক দল কালো মানুষ যাদের অবয়ব ঝাপসা আর অস্পষ্ট! দড়াবাজিকরদের খেলা দেখাবার দড়ি টানানো আছে আমার মাথার উপর দিয়ে! জড়ো হওয়া মানুষগুলোর মুখ থেকে উচ্চারিত কিছু শব্দের, কিছু কথার প্রতিধ্বনি স্বপ্নের ঘোরে আমি শুনতে পেলাম! ওরা বলছে : দড়িটা ধরো, উপরে ওঠো, দড়ির উপর দিয়ে হেঁটে এগিয়ে যাও!
আমি দড়িটা ধরলাম! স্বপ্নের ঘোরে আমি দেখলাম, আমি হয়ে গেছি একটা চড়ুই পাখী, আরাম করে ডানা মেলে উড়ছি আমি! একে বারে কাঁটায় কাঁটায় নির্ভুল নিখুঁতভাবে গিয়ে বসেছি টানানো দড়িটার উপর! এরপর দেখলাম, অনুভবও করলাম, আমার দেহটা, আর টান টান করে টানানো দড়িটা একই সাথে দুলছে, উপরে উঠছে, নীচে নামছে! দড়ির উপর দিয়ে আমি হাঁটছি, এগুচ্ছি তিন কদম, পিছিয়ে আসছি এক কদম! নিজেকে খুব হালকা মনে হচ্ছে আমার, অতুলনীয় হালকা! একটা আনন্দের অনুভূতি হচ্ছে! মনে হচ্ছে আমার আত্মাটা পরিণত হয়েছে একটা ধূয়ার কুন্ডলীতে, যা কি না পাক খেয়ে উঠছে উপরের দিকে!
রাজ প্রাসাদের বড় রানী হয়েছে ওয়েন তা। রানী হওয়ার পর ওকে ডাকা হচ্ছে সম্রাজ্ঞী ফং শ্রে নামে। আমি ফং শ্রে-কে পছন্দ করি না! আর ফং শ্রে পছন্দ করে না, আমার ভালোবাসার ছোট রানী হুই সিয়েনকে! আর হুই সিয়েন পছন্দ করে না আমার আরও তিন ছোট রানী হান ফেই, লান ফেই এবং চিন ফেই রানীকে! আমি জানি, সেই আদিকাল থেকে চলে আসা রীতি; সম্রাটগনের সঙ্গী হবে রূপবতী মেয়েরা! ছয় প্রাসাদের ভিতরে থাকা সুন্দরী মেয়েদের মধ্যাকার গোপন আর প্রকাশ্য দ্ব›দ্ব কোন একটা ধাবমান প্রাণবন্ত ঝর্ণার বহমান স্বচ্ছ পানির ধারা দিয়ে নিমিষেই থামানো যাবে কিংবা ধূয়ে মুছে পরিষ্কার করা যাবে, এমনটা কিছুতেই সম্ভব নয়! গত কয়েক বছর যাবৎ আমি আমার ছোট রানীদের মধ্যাকার দ্ব›দ্ব আর তীব্র মতবিরোধকে উপেক্ষা করে চলেছি! কিন্তু ওদের মধ্যাকার সচেতন কিংবা অচেতন, অজ্ঞান কিংবা সজ্ঞানে সৃষ্ট হওয়া তীব্র গন্ডগোলকে আমার পক্ষে এড়িয়ে যাওয়া একটা পর্যায়ে প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়লো। আমি খুব অনিচ্ছুকভাবেই গিয়ে পড়লাম প্রসাধনী আর সুগন্ধি দিয়ে গড়া এক বিরক্তিকর ঘূর্ণি বর্তের মধ্যে!
প্রাসাদের খোজা দাসদের দল নেতা ইয়েন লাঙ গভীর মনোযোগের সাথে পর্যবেক্ষণ করে মতামত দিলো যে, আমার রানীরা এই অল্প ক’দিনের মধ্যেই দল পাকিয়ে ফেলেছেন! বড় রানী ফং শ্রে আর ছোট রানী লান ফেই আছেন এক দলে। তারা পাচ্ছেন আমার দাদী হুয়াং ফু ফুরেন-এর বিশেষ স্নেহ! হান এবং চিন বংশ পদবী ধারি দু’জন ছোট রানী হচ্ছেন পরস্পরের খালাতো বোন। একই সাথে ওরা হচ্ছেন আমার মাতা মং ফুরেন-এর বোনের মেয়ে! নির্দ্বিধায় বলা যায় প্রাসাদে এই দুই খালাতো বোনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হচ্ছেন মং ফুরেন! হান এবং চিন নামের এই দুই ছোট রানী যে মং ফুরেনের আশীর্বাদ দ্বারা পরিপুষ্ট, তা প্রাসাদের কারোরই চোখ এড়ায় না!
“তা হলে, আমার হুই ফেই নামের ছোট রানীটির কপালে কি আছে?”, আমি প্রশ্ন করি ইয়েন লাঙ-কে।
“কোন রকম দলাদলিতে না জড়িয়ে হুই ফেই ছোট রানী নিজের আত্ম সম্মানকে সমুন্নত রাখতে বেশি পছন্দ করছেন! তিনি কিন্তু জাঁহাপনা’র কাছ থেকে যে ভালোবাসা পাচ্ছেন তা-ই তাঁর জন্য যথেষ্ট!”, হাসতে হাসতে জবাব দিলো ইয়েন লাঙ। সে আরও বললো, “এই গোলামের পর্যবেক্ষণ মোতাবেক বলা যায়, হুই ছোট রানীর ভাগ্যই সব চাইতে সুপ্রসন্ন!”
আমার শুধুমাত্র ভয় এক জায়গায়! অতি রূপবতী হুই সিয়েনের অবয়ব; অতি রূপই ওর জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে! শুধু মাত্র আমার প্রগাঢ় ভালোবাসা চার দিকে ঘাপটি মেরে লুকিয়ে বসে থাকা ঘাতকের নিক্ষেপ করা গুপ্ত তীর থেকে ওকে নিরাপত্তা দেয়ার জন্য যথেষ্ট নয়! আমি গভীরভাবে চিন্তা করে একটা লম্বা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম। কোলের উপর রাখা একটা জোরীর কারু কাজ করা ছোট থলে উঠিয়ে নিলাম আমি। যেটার মধ্যে ভরে রাখা আছে অল্প কিছু প্রসাধনী দ্রব্য, আর একটা কালো রঙের চুল! আমার মনে হচ্ছে, যা কি না বাতাস ছাড়াও যেন উড়তে পারে! আমি যেন দেখতে পাচ্ছি, শুদ্ধাচার অনুশীলন গৃহের উঁচু দালানের আধা অন্ধকার কক্ষে ওটা ভাসছে অস্থিরভাবে! সবশেষে ওটা মিলিয়ে গেলো আমার দৃষ্টি সীমার বাইরে, চলে গেলো গহীন অন্ধকারে! আসলে এই মেয়েটি যেন একটা ছোট পাখী, যে কি না ভুল করে উড়ে এসে বসেছে একটা গাছের উঁচু ডালে! আমি ইয়েন লাঙ-কে আমার মনের উদ্বিগ্নতার বিষয়ে বলছিলাম। আমার ভয় হয়, ডানা ভাঙ্গা পাখীর মতো ঐ মেয়েটি ভূপাতিত হবে নরম আর পুরু কাদার চোরা বালিতে, নিশ্চিতভাবেই সেই ঘটনাটা —- সেটা দু’দিন আগেই হোক আর পরেই হউক, ঘটবেই!
হুই ছোট রানীর প্রতি আমার গভীর ভালোবাসা আর প্রগাঢ় আকর্ষণের ব্যাপারটা আমার অন্যান্য রানীরা একে বারেই সহ্য করতে পারেন না। ‘তাঁরা’ কখনওই মনে করেন না যে, ‘তাঁদের’ চেহারার সৌন্দর্য হুই ছোট রানীর চেয়ে কোন অংশে কম বা ছোট! তাই ‘তাঁরা’ এক জোট হয়ে সব সময়েই রটনা করেছেন যে হুই রানী সম্রাটের মন জয় করার জন্য আশ্রয় নিয়েছেন বান টোনা আর কালো যাদুর! আমি শুনেছি বড় রানী ফং শ্রে-র নেতৃত্বে কোন এক বার লান, হান আর চিন; এই তিন ছোট রানীরা একত্রে ‘তাঁদের’ দাদী শ্বাশুড়ি হুয়াং ফু ফুরেন-এর কাছে কান্নাকাটি করে অভিযোগ করেছেন। ‘তাঁরা’ আবেদন করেছেন যে, হুই ছোট রানীর বান টোনা আর কালো যাদুর বিষয়টা যেন তদন্ত করে দেখা হয়! আর হুয়াং ফু ফুরেন এ ব্যাপারটা তদন্ত করারও আশ্বাস দিয়েছেন ‘ওঁদের’! আমি নিঃশব্দের হাসি হাসলাম! আমার রানীদের হাস্যকর কাজ কারবারের কারণ ব্যাখা করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়! খবরটা হুই ছোট রানীর কান পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছালো। হুই ছোট রানী রাগ আর দুঃখে কেঁদে বুক ভাসালো! সে চোখের পানি মুছে আমাকে জিজ্ঞেস করলো, “আমার কি হবে? আমি এখন কি করবো!”, আমি বললাম, “গুজব তো গুজবের মধ্যেই মিলিয়ে যায়! গুজবে কান দিও না তুমি! আসলে কিন্তু তোমার কাছে সত্যিই যাদু আছে! তোমার আছে সম্মোহনীর গুণ, তোমার রূপ আর গুণে মোহিত হতে রাজি আছি সব সময়ই!
সেই আদি কাল থেকেই বিবেচিত হয়ে আসছে, সম্রাটদের যৌন সুখের ব্যাপারটা, গুরুত্বের বিবেচনায় যা কি না সব সময় থেকেছে শীর্ষে!
তুমি আর আমি, আমরা আছি, আমরা থাকবো! কেউ আমাদের বিছানা আলাদা করতে পারবে না!”
হুই ছোট রানী ছিলো সন্দিহান! কিন্তু তবুও সব শেষে ওর অশ্রæ ভেজা মুখে হাসির রেখা ফুটে উঠলো!
পরে ঘটনা ঘটে ছিলো একটা! এমন কেলেঙ্কারীর ব্যাপার, সিয়ে রাজ প্রাসাদের জন্য যা ছিলো প্রথম বারের মতো ঘটা ঘটনা! আমি জানি না, কুই ‘আর নামের ঐ হতভাগ্য প্রাসাদ দাসীটি কি ভাবে রাজকীয় শয্যার পালঙ্কের নীচে গোপনে গোপনে এসে লুকিয়ে ছিলো! সে হয়তো খাটের নীচে এসে, লুকিয়ে ছিলো বহু ক্ষণ! হুই ছোট রানী খাট থেকে নেমে গরম পানি আনতে যাওয়ার সময় হঠাৎ করেই দেখতে পায়, কুই আর-এর পোশাকের একটা কোণা খাটের নীচ থেকে বাইরে বেড়িয়ে আছে! হুই সিয়েন মনে করে ছিলো, ওর নিজেরই কোন একটা জামা মাটিতে পরে গেছে! সে হাত দিয়ে ওটাকে টেনে তুলে যাওয়ার সময়ই ঘটলো অঘটন! টানের সাথে বেড়িয়ে আসে কুই আর এর একটা পা! আমার মনে আছে, হুই ছোট রানীর কন্ঠ থেকে বেড়িয়ে এসেছিলো আতঙ্কের অস্বাভাবিক তীক্ষ্ণ চিৎকার! মুহূর্তের মধ্যেই পক্ষী ক‚জন ঘর নামের প্রাসাদের পুরো এলাকাটা ইতস্তত-বিক্ষিপ্ত-বিশৃঙ্খল আর আতঙ্কিত পদচারণার শব্দে ভরে উঠেছিলো!
ধরা পরা প্রাসাদ দাসীটির নাম কুই আর, অল্প বয়সী মেয়ে। আতঙ্কে সে ঠক ঠক করে কাঁপছিলো! একটা কথাও বলতে পারছিলো না সে! শুধু আঙ্গুলের ইশারা করছিলো জানালার বাইরের দিকে, যার অর্থ কেউ না কেউ তাকে হুকুম দিয়েছে, আর তাই সে এমন কাজ করতে এসেছে!
“কে তোমাকে আসতে বলেছে?”, আমি কুই আরের চুল মুঠ করে ধরে টান দিয়ে ওর চরম ভয়ার্ত মুখটাকে আমার দিকে ফিরালাম!
“ফং বড় রানী!”, কাঁদতে কাঁদতে বললো, কুই আর! সে ফুঁপিয়ে ফুপিয়ে অনুযোগ করলো, “এই দাসী কিছু দেখেনি, সত্যিই কিছু দেখতে পায়নি।
জাঁহাপনা, প্রাণটা বাঁচান আমার, আমাকে ক্ষমা করে দেন!”
সব কিছু পরিষ্কারভাবে খুলে বলার জন্য, সব কিছু জানা সত্বেও ইচ্ছাকৃত ভাবে আমি ওকে প্রশ্ন করলাম, “ফং বড় রানী তোমাকে কি দেখতে বলেছে?”
“উনি আমাকে দেখতে বলেছেন, হুই ছোট রানী কি ভাবে কালো যাদু প্রয়োগ করে জাঁহাপনাকে সম্মোহন করে!
কিন্তু জাঁহাপনা, আমি কিছুই দেখি নাই! অভিযোগের পর অভিযোগ শুনতে শুনতে খুবই অনিচ্ছা সত্বেও এমন বিভ্রান্তিকর কাজটা করতে এসেছি আমি!
জাঁহাপনা, আমাকে মাফ করে দেন, অনুগ্রহ করে আমার প্রাণ বাঁচান!”
“কাজটা করলে ফং বড় রানী তোমাকে কোন মূল্যবান জিনিস দিবে বলে কথা দিয়েছে কি?”, পাশে দাঁড়িয়ে হুই ছোট রানী এই প্রশ্নটা করলো।
“স্বর্ণের বালা একটা, রাজকীয় মুদ্রা এক কুড়ি, জেড পাথরের এক জোড়া চুড়ি——- এগুলোই শুধু!”
“আসলেও তুমি একটা সস্তা মেয়ে মানুষ!”, রাগে দাঁত কিড়মিড় করে হুই ছোট রানী বললো, “মাত্র এই অল্প কয়েকটা জিনিসের জন্যই কি তুমি গর্দান যাওয়ার শাস্তি পাওয়ার মতো অপরাধ করে বসেছো!
আমার তো মনে হচ্ছে ফং বড় রানী তোমাকে ঐ অলঙ্কারগুলো দিয়েছেন, তোমাকে জ্যান্ত কবর দেয়ার সময়ে প্রদান করা অর্ঘ্য হিসাবে!”
প্রাসাদের নিরাপত্তা রক্ষীরা ঘরে ঢুকে কুই আর-কে টেনে হেঁচড়ে নিয়ে গেলো। দেখে মনে হচ্ছে এই অল্প বয়সী হতভাগ্য মেয়েটা একটা খাসি, যাকে যবাই করার জন্যই ‘পক্ষী ক‚জন ঘর’ নামের দালানটার বাইরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে! পরে থাকছে একটা হালকা দাগ, একটা শব্দ, চাপা কান্নার শব্দ!
আমি এবং হুই রানী পরস্পরের দিকে তাকিয়ে আছি, আমাদের মুখে কোন কথা নেই! কানে আসলো তামার ঘন্টা ঘড়িতে তিনটা বাড়ি দেয়ার আওয়াজ যা কিনা নির্দেশ করছে রাতের তিন প্রহর! গোটা সিয়ে রাজ প্রাসাদের ভেতর নিঃশব্দ নিস্তব্ধতা ফিরে এসেছে। হুই ছোট রানীর মুখটা সাদা তুষারের মতো ফ্যাকাশে হয়ে গেছে। কালো চোখ দু’টো ভর্তি হয়ে আছে অশ্রæ জলে!
“স্বর্গের মালিক কি চাচ্ছেন না, আমি সিয়ে রাজ প্রাসাদে থাকি?”, হুই ছোট রানী বললো।
“আমি জানি না!” (চলবে)