অনলাইন ডেস্ক : ‘আমরা ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু করেছি। দেশের প্রত্যেক মানুষ যাতে ভ্যাকসিন নিতে পারে। সেজন্য যত দরকার আমরা তা ক্রয় করব। কোনো মানুষ যেন ভ্যাকসিন নেওয়া থেকে বাদ না থাকে’- এমনটাই বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া করোনা পরিস্থিতিতে সবাই যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে, সেদিকেও দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

আজ রোববার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর ২০২১-২২ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) স্বাক্ষর এবং ‘এপিএ ও শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান-২০২১’-এ অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন।

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব। কারণ, যেভাবে কাজগুলো হচ্ছে, প্রত্যেকটা মন্ত্রণালয়ে নিজেদের ভেতরে একটা উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। সবচেয়ে ভালো লাগে যেটা, আগে যেমন “সরকারি মাল দরিয়া মে ঢাল” একটা ভাব ছিল, সেটা এখন নেই।’

এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘জাতির পিতার নির্দেশনাগুলো আপনারা যদি একবার দেখেন, তাহলে দেখবেন তিনি প্রত্যেকটা জিনিস বলে গেছেন। আপনাদের দায়িত্ব জনগণের সেবা করা। কারণ, আমার দেশের কৃষক মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফসল উৎপাদন করে। সেই ফসল খেয়েই তো আমাদের জীবন বাঁচে। আমার দেশের শ্রমিকরা শ্রম-ঘাম দিয়ে যে উৎপাদন করে সেটাই তো আমাদের আর্থিক সঙ্গতি। দেশের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের অবদানটা আমরা ছোট করে দেখতে পারি না, কোনো কাজই ছোট না।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সবাই কিন্তু আমাদের দেশের কাজগুলো, যেগুলো জাতির জন্য, যেটা মঙ্গলের জন্য, জনগণের জন্য, সে কাজগুলো ওউন করেছে অর্থাৎ আপন বলে গ্রহণ করেছে। সবার দায়িত্বগুলো গ্রহণ করে আপনারা তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। এগুলো বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন বলেই এত অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ সফলতা অর্জন করতে পেরেছে।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘জাতির পিতা স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে রেখে গিয়েছেন ১৯৭৫ সালে। আজ আমরা উন্নয়নশীল দেশ হতে পেরেছি। এই অল্প সময়ে যে উন্নতিটা অর্থাৎ ২০০৯ থেকে ২০২১ সাল; এর মধ্যে যে উন্নতিটা, এর মধ্যে আমাদের অর্জনগুলো হয়েছে। সারাবিশ্বে বাংলাদেশ আজ একটা সম্মানজনক অবস্থানে এসেছে। আগে আমরা বাইরে গেলে শুনতাম, বাংলাদেশ দুর্ভিক্ষের দেশ, ঘূর্ণিঝড়ের দেশ, জলোচ্ছ্বাস-প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ। এখন আর সেটা বলে না। এখন আমরা ভিক্ষা চাওয়ার দেশ না। কারণ জাতির পিতা বলেছেন, ভিক্ষুক জাতির ইজ্জত থাকে না। সেটাই আমাদের লক্ষ্য ছিল।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ যেন আমাদের অবহেলা করতে না পারে। যেটুকু সম্পদ আছে সেটা দিয়েই আমরা এগিয়ে যাব। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি এবং এই এগিয়ে যাওয়ার পথে আপনারাই হচ্ছেন সবচেয়ে বড় চালক। সেজন্য মন্ত্রণালয়ের সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ধন্যবাদ জানাই।’

ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সদস্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে পুরস্কার ও সম্মাননাপত্র তুলে দেন এবং এপিএ প্রতিবেদন গ্রহণ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবসহ অন্যান্যরা।