সোনা কান্তি বড়ুয়া : বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক গৌতম বুদ্ধকে নিয়ে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখা “আত্মশক্তি” শীর্ষক কবিতায় গৌতম বুদ্ধ বিদ্রোহী তরুণ তাপস (বিষের বাঁশি কাব্যগ্রন্থ)!
বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বাঙালি জাতিসত্তার যেমন সর্বশ্রেষ্ঠ রূপকার, তেমনি শ্রেণী বৈষম্য, নির্যাতিত, নিপীড়িত, মজলুমের আহাজারি, অসাম্য, দারিদ্র্যতার নির্মম কষাঘাত থেকেই গৌতম বুদ্ধকে নিয়ে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের শ্রদ্ধাঞ্জলী “আনো উলঙ্গ সত্য-কৃপাণ বিজলি-ঝলক ন্যায়-অসির” বিশ্বমানবতার বাণী সুধা বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের মাঝে গভীর ছিল। ‘সবার ওপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই’- মহাকবি বড়ু চণ্ডীদাস! হিন্দুধর্মের বর্ণ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে গৌতম বুদ্ধ বিদ্রোহী তরুণ তাপস (বিষের বাঁশি কাব্যগ্রন্থ) এবং বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায় : “এসো বিদ্রোহী তরুণ তাপস আত্মশক্তিবুদ্ধ বীর, / আনো উলঙ্গ সত্য-কৃপাণ বিজলি-ঝলক ন্যায়-অসির!”
গৌতম বুদ্ধকে নিয়ে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের শ্রদ্ধাঞ্জলী, “কে ভগবান আত্ম-জ্ঞান! গাহে উদ্গাতা ঋত্বিক গান অগ্নি-মন্ত্র শক্তিশ্রীর। না জাগিলে প্রাণে সত্য চেতনা, মানি না আদেশ কারও বাণীর!” কানাডার আবাসিক স্কুলগুলোতে আদিবাসী শিশুদের গণকবর উদ্ধারের ঘটনার মতো বাংলাদেশের রাজনীতি জুম্ম জনগণের জাতীয় পরিচিতি একেবারে বিলুপ্ত করার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম সামরিকায়ন জোরদার করেছে! বিগত ২৩ বছরেও পার্বত্য সমস্যার কাক্সিক্ষত সমাধান হওয়া তো দূরের কথা, সমস্যা আরও জটিল থেকে জটিলতর হয়ে উঠেছে। পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে পার্বত্য সমস্যার রাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ সমাধানের পরিবর্তে সরকার পূর্ববর্তী শাসকদের মতো দমন-পীড়নের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছে। ফলে বিগত ২৩ বছরেও পার্বত্য সমস্যার কাক্সিক্ষত সমাধান হওয়া তো দূরের কথা, সমস্যা আরও জটিল থেকে জটিলতর হয়ে উঠেছে। বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামের সার্বিক পরিস্থিতি অনেকটা চুক্তি-পূর্ব অবস্থায় পদার্পণ করেছে।
বাংলাদেশে রাজনীতির ইসলামীকরণ পার্বত্য চট্টগ্রামেকে গ্রাস করে ফেলেছে। নিজ বাসভূমেই পরবাসী করে দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামেকে। পার্বত্য চট্টগ্রামে বাংলাদেশের রাজনীতি জুম্ম জনগণের জাতীয় পরিচিতি একেবারে বিলুপ্ত করার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম সামরিকায়ন জোরদার করেছে! “টালত মোর ঘর নাঁহি পড়বেসী। হাড়ীতে ভাত নাঁহি নিতি আবেশী।” এর মানে, নিজ টিলার উপর আমার ঘর। প্রতিবেশী নেই। হাঁড়িতে ভাত নাই, অথচ নিত্য ক্ষুধিত।” বাংলাদেশে রাজনীতির ইসলামীকরণ মানে বাংলাদেশের রাজনীতি জুম্ম জনগণের জাতীয় পরিচিতি একেবারে বিলুপ্ত করার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম সামরিকায়ন জোরদার করেছে! তার তীব্র নিন্দা জানাই এবং প্রতিবাদ জানাই অবিলম্বে বিচার দাবি জানাচ্ছি, এই নেক্কারজনক ঘটনা বাংলা জমিনে যেন আর না ঘটে!
“সকল প্রাণী সুখী হউক! পৃথিবীর সকল মানুষ মুসলমান বা একটা ধর্মের মানুষ হলে কি সকল সমস্যার সমাধান হবে? জগৎ জুড়ে মানব সমাজে মানবাধিকারের অহিংসায় একমাত্র সমাধান। পার্বত্য চট্টগ্রামের সাধারণ প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা, উন্নয়নসহ সকল বিষয় স্থানীয় সেনা ও গোয়েন্দাবাহিনীর হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। পার্বত্য চুক্তির অব্যবহিত পরে প্রত্যাহৃত ক্যাম্পসমূহ পুনস্থাপনের জন্য সেনাবাহিনী ২০২০ সালে ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ২০২০ সালে ৭টি নতুন ক্যাম্পসহ বিগত কয়েক বছরে অনেক ক্যাম্প পুনস্থাপন করা হয়েছে। “বল বীর- বল উন্নত মম শির!” What পাকিস্তান taught to Bangladesh? চিটিংবাজ পূর্বের পাকিস্তান সরকারগুলোর মতো বাংলাদেশে বর্তমান সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রামে একদিকে ইসলামীকরণ নীতি বাস্তবায়ন করে চলেছে এবং বাংলাদেশের রাজনীতি জুম্ম জনগণের জাতীয় পরিচিতি একেবারে বিলুপ্ত করার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম সামরিকায়ন জোরদার করেছে! মৌলবাদী ও জুম্ম বিদ্বেষী কিছু ইসলামী গোষ্ঠী কর্তৃক সুপরিকল্পিতভাবে জুম্মদেরকে ইসলামে ধর্মান্তরিত করার কার্যক্রম জোরদার হয়েছে।
ফুটনোট: সংসদ সচিবালয় কোয়ার্টার থেকে নারীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, স্বামী পলাতক? খাগড়াছড়ির আদিবাসী নারী নিবেদিতা রোয়াজা ধর্মান্তরিত হয়ে মামুন মিল্লাত নামের একজনকে বিয়ে করেন? লাশ উদ্ধার করে গতকাল বিকালে ময়না এবং বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ব্যাপকভাবে সংকুচিত করা হয়েছে। বাংলাদেশের ধর্ম পরিবর্তনের হলফনামাগুলো এমন হয় জানা ছিলো না? রীতিমতো বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় স্ট্যাম্পে ডকুমেন্টেশন করে একটা ধর্মকে খারাপ সাব্যস্ত করে আরেকটি ধর্মকে মহিমান্বিত করা, এবং ভিন্নমতকে সাংঘাতিকভাবে রুদ্ধ করা হচ্ছে। প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেট কি জংগী শফীর থেকে দিক্ষা নিয়েছেন নাকি? এই বিষয়টার মধ্যে যে সা¤প্রদায়িক বিদ্বেষের মশলা আছে তা জনমানসের রন্ধ্রে রন্ধ্রে সংক্রমিত? চিটিংবাজ এই পদ্ধতি বদলানোর কি উপায় নাই? এবং একটা প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেট নোটারীর ভাষা এমন হয় কিভাবে? এই দেশে কিছু লোকের জানোয়ারের মতো হিংস্রতা রয়েছে তবে দুর্ভাগ্যক্রমে তাদের মানবিক গুণাবলীর কোনো কিছুই নেই।
কেন ভারতে পাড়ি দিয়েছিলেন পাহাড়ীগণ ও বৌদ্ চাকমারা? এখনকার বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে হাজার হাজার চাকমা বৌদ্ধ পাহাড়ীদের ভারতে এসেছেন মূলত দুটো কারণে। এক, ১৯৬২তে কমিশন করা কাপ্তাই লেকের জন্য ভিটেছাড়া হয়ে আর দুই, ১৯৭২-য়ে শান্তিবাহিনী গঠিত হওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে সেনা অভিযান থেকে পালিয়ে প্রাণে বাঁচতে। গবেষকরা বলেন, কাপ্তাই লেকের কারণে ৬৫৫ বর্গকিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হয়েছিল, যার মধ্যে ২২ হাজার হেক্টরই ছিল কৃষিজমি। বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন প্রায় ১ লক্ষ উপজাতীয়, যাদের মধ্যে ৭০ শতাংশই ছিলেন চাকমা।
% (Percentage) of Total Population
Year Muslim Hindu Buddhist Christian Others Total
1941 70.3 28.3 – 0.1 1.3 100
1951 75.7 22.0 0.7 0.3 1.3 100
1961 80.4 18.5 0.7 0.3 0.1 100
1974 85.4 13.5 0.6 0.3 0.2 100
1981 86.7 12.1 0.6 0.3 0.3 100
1991 87.4 11.5 – 1.1 0.3 100
2001 90.0 08.0 0.6 1.1 0.3 100
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর আত্মশক্তি কবিতায় লিখলেন-
“এসো বিদ্রোহী মিথ্যা-সূদন আত্মশক্তি বুদ্ধ বীর!
আনো উলঙ্গ সত্যকৃপাণ, বিজলি-ঝলক ন্যায়-অসির।
তূরীয়ানন্দে ঘোষো সে আজ
‘আমি আছি’- বাণী বিশ্ব-মাঝ,
পুরুষ-রাজ!
সেই স্বরাজ!
জাগ্রত করো নারায়ণ-নর নিদ্রিত বুকে মর-বাসীর;
আত্ম-ভীতু এ অচেতন-চিতে জাগো ‘আমি-স্বামী নাঙ্গা-শির’
এসো প্রবুদ্ধ, এসো মহান
শিশু-ভগবান জ্যোতিষ্মান।
আত্মজ্ঞান-
দৃপ্ত-প্রাণ!
জানাও জানাও, ক্ষুদ্রেরও মাঝে রাজিছে রুদ্র তেজ রবির!!
উদয়-তোরণে উড়ুক আত্ম-চেতন-কেতন ‘আমি-আছি’-র
করহ শক্তি-সুপ্ত-মন
রুদ্র বেদনে উদ্বোধন,
হীন রোদন-
খিন্ন-জন
দেখুক আত্মা-সবিতার তেজ বক্ষে বিপুলা ক্রন্দসীর!
বলো, নাস্তিক হউক আপন মহিমা নেহারি শুদ্ধ ধীর!
কে করে কাহারে নির্যাতন
আত্ম-চেতন স্থির যখন?
ঈর্ষা-রণ
ভীম-মাতন
পদাঘাত হানে পঞ্জরে শুধু আত্ম-বল-অবিশ্বাসীর,
মহাপাপী সেই, সত্য যাহার পর-পদানত আনত শির।
জাগাও আদিম স্বাধীন প্রাণ,
আত্মা জাগিলে বিধাতা চান।
কে ভগবান?-
আত্ম-জ্ঞান!
গাহে উদ্গাতা ঋত্বিক গান অগ্নি-মন্ত্র শক্তি-শ্রীর।
না জাগিলে প্রাণে সত্য চেতনা, মানি না আদেশ কারও বাণীর!
এসো বিদ্রোহী তরুণ তাপস আত্মশক্তিবুদ্ধ বীর,
আনো উলঙ্গ সত্য-কৃপাণ বিজলি-ঝলক ন্যায়-অসির\
বৌদ্ধদের বুদ্ধগয়ায় মুসলমানদের প্রতারণার রাজনীতি! মুসলমানদের প্রতারণার রাজনীতিতে রোহিঙ্গা জামাতুল মুজাহিদীনের জঙ্গিরা ভারতে বৌদ্ধদের সর্বশ্রেষ্ঠ তীর্থভূমি মহাবোধি বিহারে মর্মন্তিকভাবে নির্বিচারে বোমা হামলা চালিয়ে ছিল ২০১৩ সালের ৭ জুলাই ভোর সাড়ে পাঁচটা হতে ছয়টার সময়! ভারতে বৌদ্ধদের সর্বশ্রেষ্ঠ তীর্থভূমি বুদ্ধগয়ায় (Two blocks away from মহাবোধি মন্দির) মুসলমান রাজনীতি 2Ul মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেছে, 5 times নামাজের সময় 2 loud speakers made troubles for the Buddhist Meditation Practice!
নারীর উপর সহিংসতা: ২০২০ সালে একজন সেনা সদস্যসহ সেটেলার বাঙালি কর্তৃক ১৬ জন জুম্ম নারী ও শিশু সংহিংসতার শিকার হয়। তার মধ্যে আগস্ট মাসে লামায় বহিরাগত ৬ বাঙালি সেটেলার কর্তৃক এক বিধবা ত্রিপুরা নারীকে (২৫) গণধর্ষণ এবং সেপ্টেম্বর মাসে খাগড়াছড়ি সদর এলাকায় ব্যাপক নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলার বাহিনীর নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যেও ৯ জন বাঙালি সেটেলার কর্তৃক মানসিক প্রতিবন্ধী এক জুম্ম নারীকে গণধর্ষণ এবং বাড়ির মূল্যবান জিনিসপত্র লুটপাটের ঘটনা ছিল সবচেয়ে লোমহর্ষক ও পৈশাসিক।
এপ্রিল মাসে রনিকা চাকমা (২২) নামে এক গর্ভবর্তী জুম্ম নারীকে জুরাছড়ি উপজেলা থেকে রাঙ্গামাটি জেলা সদর হাসপাতালে নেয়ার পথে তল্লাসীর নামে সুবলং ক্যাম্পের সেনাবাহিনী কর্তৃক বিনা কারণে প্রায় একঘন্টা আটকে রাখার ফলে হাসপাতালে পৌঁছার আগেই অর্ধেক পথে উক্ত গর্ভবতী নারীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। জুলাই মাসে রোয়াংছড়ি উপজেলা সদরের অংগ্যপাড়া গ্রামে সেনাবাহিনী কর্তৃক সন্ত্রাসী ধরার নামে এলোপাতাড়ি গুলি বর্ষণের ফলে শান্তিলতা তঞ্চঙ্গ্যা (৩০) নামে এক জুম্ম নারী নিহত এবং তার ৫ বছরের সন্তান অর্জুন তঞ্চঙ্গ্যা সুকেন আহত হয়।
কোভিড-১৯ মহামারী সংকটে দমন-পীড়ন জোরদারকরণ:
২০২০ সালে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো পার্বত্য চট্টগ্রামেও ব্যাপক আঘাত হানে প্রাণঘাতি কোভিড-১৯ মহামারী। করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে লকডাউনের ফলে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো পার্বত্য চট্টগ্রামেও দেখা দেয় একদিকে কর্মহীন হয়ে পড়া খেটে-খাওয়া মানুষের খাদ্য সংকট, অন্যদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের আতঙ্ক। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কর্মজীবী জুম্ম যুবক-যুবতীরা এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান জেলার স্ব স্ব ঘরবাড়িতে ফেরার সময় যানবাহনের চরম ভোগান্তি ছাড়াও চট্টগ্রাম জেলার সাথে তিন পার্বত্য জেলা সীমানায় তাদের পড়তে হয়েছে সেনাবাহিনী ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অবর্ণনীয় হয়রানি ও নির্যাতনে। এধরনের চরম দুর্যোগ ও সংকটের মধ্যেও পার্বত্য চট্টগ্রামে থেমে নেই সেনাবাহিনী, বিজিবি ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান এবং রাষ্ট্রীয় ও অরাষ্ট্রীয় পক্ষ কর্তৃক জুম্মদের জায়গা-জমি বেধখল ও তাদেরকে স্বভূমি উচ্ছেদ।
আগস্ট মাসে বাঘাইছড়ির ১২ বীর বাঘাইহাট সেনা জোন, বাঘাইহাট ৫৪ বিজিবি জোন এবং মারিশ্যা ২৭ জোন করোনা মহামারীর জন্য বরাদ্দকৃত ইউএনডিপি’র উক্ত চাল বিতরণ কর্মসূচি বন্ধ করে দেয়। আগস্ট মাসে পানছড়ি উপজেলার পানছড়ি বিজিবি জোনের সদস্য চেঙ্গী ইউনিয়নের তারাবন গীর্জা এলাকায় করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে নির্মিত একটি অস্থায়ী বাজারে হানা দিয়ে জুম্ম সবজী বিক্রেতাদের ১৫-২০টি দোকান ভাঙচুর করে দেয়।
২০২০ সালে সংস্কারপন্থী ও ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) সশস্ত্র সদস্যদের রাঙ্গামাটি জেলার বরকলের সুবলং বাজার, লংগদু উপজেলার তিনটিলা, দীঘিনালার বাবুছড়া, কাপ্তাই ও রাজন্থলী উপজেলাসহ খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের সদর জেলার বিভিন্ন স্থানে সশস্ত্রভাবে মোতায়েন রেখে চুক্তি স্বাক্ষরকারী জনসংহতি সমিতির সদস্য ও চুক্তি সমর্থকদের উপর এসব সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে সেনাবাহিনী সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনীর নাকের ডগায় এসব সন্ত্রাসী গোষ্ঠী লক্ষ লক্ষ টাকার চাঁদাবাজি করে চলেছে। সেপ্টেম্বরে সেনাবাহিনীর ২১ বীর (দুর্ভেদ্য একুশ)-এর লংগদু সেনা জোনের পক্ষ থেকে সংস্কারপন্থী সশস্ত্র সন্ত্রাসীদেরকে ২৫ সেট সেনাবাহিনীর ইউনিফর্ম প্রদান করা হয়েছে বলে জানা গেছে। ডিসেম্বর মাসে সংস্কারপন্থীরা লংগদু থেকে জনসংহতি সমিতির সদস্য ও সমর্থকদের ২৮টি পরিবারকে উচ্ছেদের তৎপরতা চালায়।
সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সেনাবাহিনীর প্রকাশ্য মদদ ও প্রশ্রয় প্রদান: পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনকে নস্যাৎ করা, পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা, সর্বোপরি জুম্মকে দিয়ে জুম্মদেরকে জাতিগতভাবে নির্মূলীকরণের জন্য সংস্কারপন্থী খ্যাত জেএসএস (এমএন লারমা), ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) ও এএলপি থেকে দলচ্যুত মগ পার্টি নামে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে সেনাবাহিনী ও ক্ষমতাসীন দল আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে চলেছে। এসব সশস্ত্র গোষ্ঠী কর্তৃক ২০২০ সালে ১০০টি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা সংঘটিত করা হয়েছে। এসব ঘটনায় ২১ জনকে হত্যা করা হয়েছে, ৫০ জনকে অপহরণ করা হয়েছে, ১৭ জনকে মারধর ও হয়রানি করা হয়েছে, ৮ জনকে হত্যার হুমকি প্রদান হয়েছে, জনসংহতি সমিতির ৮২ জন সদস্য ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে সাজানো মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া মগ পার্টি কর্তৃক ১২টি বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে।
জুম্ম জনগণের জাতীয় পরিচিতি একেবারে বিলুপ্ত করার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম সামরিকায়ন জোরদার করেছে! বিগত ২৩ বছরেও পার্বত্য সমস্যার কাক্সিক্ষত সমাধান হওয়া তো দূরের কথা, সমস্যা আরও জটিল থেকে জটিলতর হয়ে উঠেছে। মৌলবাদী ও জুম্ম বিদ্বেষী কিছু ইসলামী গোষ্ঠী কর্তৃক সুপরিকল্পিতভাবে জুম্মদেরকে ইসলামে ধর্মান্তরিত করার কার্যক্রম জোরদার হয়েছে। পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে পার্বত্য সমস্যার রাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ সমাধানের পরিবর্তে সরকার পূর্ববর্তী শাসকদের মতো দমন-পীড়নের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছে। ফলে বিগত ২৩ বছরেও পার্বত্য সমস্যার কাক্সিক্ষত সমাধান হওয়া তো দূরের কথা, সমস্যা আরও জটিল থেকে জটিলতর হয়ে উঠেছে। বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামের সার্বিক পরিস্থিতি অনেকটা চুক্তি-পূর্ব অবস্থায় পদার্পণ করেছে। পূর্বের সরকারগুলোর মতো বর্তমান সরকারও একদিকে ইসলামীকরণ নীতি বাস্তবায়ন করে চলেছে এবং অপরদিকে জুম্ম জনগণের জাতীয় পরিচিতি একেবারে বিলুপ্ত করার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম সামরিকায়ন জোরদার করেছে।
২০২০ সালে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ কর্তৃক ১৩৯টি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা সংঘটিত করেছে। এসব ঘটনায় ৩ জনকে বিচার-বিহির্ভুত হত্যা, ৫০ জনকে অবৈধ গ্রেফতার ও ৪৯ জনকে সাময়িক আটক, ৫৪ জনকে মারধর ও হয়রানি এবং তার মধ্যে ৭ জনকে গুরুতর আহত, ১০৪টি বাড়ি তল্লাসী ও ২০টি অস্থায়ী দোকানসহ ২৫টি বাড়ি ভাঙচুর, ত্রাস সৃষ্টির লক্ষ্যে বিভিন্ন এলাকায় ৩ বার বøাঙ্ক ফায়ার করেছে। কোভিড-১৯ মহামারীর চরম দুর্যোগ ও সংকটের মধ্যেও পার্বত্য চট্টগ্রামে থেমে ছিল না সেনাবাহিনী, বিজিবি ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দমন-পীড়ন ও সামরিক অভিযান এবং রাষ্ট্রীয় ও অরাষ্ট্রীয় পক্ষ কর্তৃক জুম্মদের জায়গা-জমি বেধখল ও তাদেরকে স্বভূমি উচ্ছেদ। সেনাবাহিনী, প্রশাসন ও শাসকমহলের মদদে ২০২০ ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ’ নামে উগ্র সা¤প্রদায়িক ও উগ্র জাতীয়তবাদী সংগঠনের নেতৃত্বে মুসলিম সেটেলার কর্তৃক সা¤প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানো হয়েছে।
২০২০ সালে একজন সেনা সদস্যসহ সেটেলার বাঙালি কর্তৃক ১৬ জন জুম্ম নারী ও শিশু সংহিংসতার শিকার হয়। জুম্মদের মালিকানাধীন ভূমি জবরদখল ও ভূমি বিরোধকে কেন্দ্র করে ২০২০ সালে সেটেলার বাঙালি, ভূমিদস্যু, রোহিঙ্গা ও নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক ৪৭টি ঘটনা সংঘটিত করা হয়েছে। এসব ঘটনায় ১৭ জন জুম্ম আহত হয়েছে, ৩টি সা¤প্রদায়িক হামলা সংঘটিত হয়েছে, ভূমি জবরদখলের ফলে ৮৩৯ পরিবার ক্ষতির মুখে পড়েছে, ৩,০৩৬ একর জায়গা বেদখল করা হয়েছে।
২০২০ সালে সংস্কারপন্থী ও ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সেনাবাহিনী কর্তৃক তিন জেলার বিভিন্ন স্থানে সশস্ত্রভাবে মোতায়েন রেখে সন্ত্রাস চালানো হয়েছে। সেনা-সমর্থিত এসব সশস্ত্র গোষ্ঠী কর্তৃক ২০২০ সালে ১০০টি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা সংঘটিত করা হয়েছে। এসব ঘটনায় ২১ জনকে হত্যা করা হয়েছে, ৫০ জনকে অপহরণ করা হয়েছে, ১৭ জনকে মারধর ও হয়রানি করা হয়েছে, ৮ জনকে হত্যার হুমকি প্রদান হয়েছে, জনসংহতি সমিতির ৮২ জন সদস্য ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে সাজানো মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া মগ পার্টি কর্তৃক ১২টি বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে।
২০২০ সালে একদিকে ভাড়াটে হলুদ সাংবাদিকদের মাধ্যমে জনসংহতি সমিতি তথা জুম্ম জনগণ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পর্কে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, অন্যদিকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সভা-সমিতির স্বাধীনতা, মানবাধিকার লঙ্ঘনের সংবাদ প্রকাশের উপর বিধি-নিষেধ আরোপের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামকে কার্যত অবরুদ্ধ অঞ্চলে পরিণত করা হয়েছে। যেমন এপ্রিল মাসে হিল ভয়েস নামে পার্বত্য চট্টগ্রাম, আদিবাসী ও সংখ্যালঘু বিষয়ক একটি নিউজপোর্টাল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এ রকম অনেক নিউজপোর্টাল দেশে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ফলে ২০২০ সালে সামরিক ও আধা-সামরিক বাহিনীর নিপীড়ন-নির্যাতনের খবর সম্পূর্ণভাবে দেশের সংবাদ মাধ্যম ও দেশবাসীর অন্তরালে থেকে যায়।
২০২০ সালে সেনাবাহিনী হয়রানির উদ্দেশ্যে তিন পার্বত্য জেলায় গ্রামে গ্রামে জুম্ম গ্রামবাসীদের পারিবারিক তথ্য সংগ্রহ করেছে। যেমন কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে সৃষ্ট লকডাউনের ফলে জনজীবনে দুর্ভোগ ও অচলাবস্থার মধ্যেও মে মাসে রোয়াংছড়ির গ্রামে গ্রামে সেনাবাহিনী কর্তৃক জুম্মদের হয়রানি এবং তাদের কাছ থেকে অবান্তর তথ্যসংগ্রহ করেছে। নভেম্বর মাস থেকে আজ অবধি বিলাইছড়ি উপজেলার ফারুয়া ইউনিয়ন এলাকায় গ্রামে গ্রামে সেনাবাহিনী জুম্মদের পরিবার থেকে হয়রানিমূলক তথ্য সংগ্রহ অভিযান চালাচ্ছে।
পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন ও সরকারের চুুক্তি বিরোধী তৎপরতা:
২০২০ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির অবাস্তবায়িত বিষয়সমূহে বাস্তবায়নে সরকারের পক্ষ কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এমনকি পার্বত্য চুক্তির অধীনে গঠিত চুক্তি বাস্তবায়ন কমিটি, পার্বত্য ভূমি কমিশন, টাস্ক ফোর্স ইত্যাদি কোন কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়নি। গত ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ সালে বান্দরবানে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি কমিশনের সভা আহ্বান করা হলেও কোরাম সংকটের কারণে আনুষ্ঠানিক মিটিং অনুষ্ঠিত হতে পারেনি। তবে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের কার্যালয়ে ভূমি কমিশনের নতুন অফিস উদ্বোধন করা হয়েছে। এসময় প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর ইন্ধনে সেটেলার বাঙালি মুসলিমরা ভূমি কমিশনের চেয়ারম্যান-সদস্যদের ঘেরাও করে। বস্তুত ২০২০ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির অবাস্তবায়িত বিষয়সমূহ বাস্তবায়নে সরকারের কোন উদ্যোগ ছিল না বললেই চলে।
বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে দেশব্যাপী সাধারণ ছুটি ও লকডাউনের ফলে ২০২০ সালের সরকারের কার্যক্রমে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়টিও একেবারেই ধামাচাপা পড়েছিল। ফলে পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার রাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমাধানের লক্ষ্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরের পর বিগত ২৩ বছরে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির কিছু ধারা-উপধারা বাস্তবায়িত হলেও এখনো দুই-তৃতীয়াংশ ধারা অবাস্তবায়িত অবস্থায় রয়েছে। বিশেষ করে চুক্তির মৌলিক বিষয়সমূহ হয় সম্পূর্ণ অবাস্তবায়িত অবস্থায় রয়েছে নতুবা ত্রুটিপূর্ণভাবে আংশিক বাস্তবায়িত করা হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের পরিবর্তে সরকার চুক্তি বিরোধী ও জুম্ম স্বার্থ পরিপন্থী তৎপরতা বৃদ্ধি করেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম অধ্যুষিত অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য সংরক্ষণের পরিবর্তে পার্বত্য চট্টগ্রামকে মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলে পরিণত করার ষড়যন্ত্র জোরদার করা হয়েছে। জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত পূর্ণাঙ্গ পার্বত্য জেলা পরিষদ গঠনের পরিবর্তে ডিসেম্বরে দলীয় সদস্যদের দিয়ে অন্তর্র্বতী পার্বত্য জেলা পরিষদ গঠন করা হয়েছে। তার মাধ্যমে অগণতান্ত্রিক ও দলীয়করণের ধারা আরো জোরদার করা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াকে বানচাল করার উদ্দেশ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির বিরুদ্ধে ২০০০ সালে জনৈক বদিউজ্জামান ও ২০০৭ সালে এ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম কর্তৃক পৃথক দু’টি মামলায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপীল বিভাগে চলমান মামলা মোকাবেলার ক্ষেত্রে ২০২০ সালেও সরকার উদ্দেশ্য-প্রণোদিতভাবে নির্লজ্জ নিলিপ্ততা প্রদর্শন করেছে। মার্চ মাসে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও পার্বত্য জেলা পরিষদসমূহকে পাশ কাটিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার সীমান্ত সড়ক ও স্থলবন্দর নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করেছেন যা ছিল পার্বত্য চুক্তির সরাসরি লঙ্ঘন। চুক্তি মোতাবেক অবশিষ্ট চার শতাধিক অস্থায়ী ক্যাম্প প্রত্যাহারের পরিবর্তে ডিসেম্বর মাসে খাগড়াছড়ি সফরকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পার্বত্য চুক্তিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চুক্তির পর প্রত্যাহৃত ক্যাম্পগুলো পুনরায় স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছেন।
লামা উপজেলায় অবৈধভাবে ৩,০০০ একর জমি বেদখল করেছে মেরিডিয়ান কোম্পানী। এপ্রিল মাসে লামা উপজেলায় মেরিডিয়ান কোম্পানির দায়েরকৃত সাজানো মামলায় জড়িত করে পুলিশ উপজেলার সরই ইউনিয়নের ঢেঁকিছড়া নোয়াপাড়ার কার্বারী লাংকুম ম্রো (৪৮) ও অপর এক বাসিন্দা রিং রং ম্রো (৫০) নামে দুইজন ম্রো গ্রামবাসীকে গ্রেফতার করে, যাতে করে মেরিডিয়ান কোম্পানী নির্বিঘ্নে ভূমি দখল করতে পারে।
বিশ্ববৌদ্ধ পুরস্কার প্রাপ্ত প্রখ্যাত মানবতাবাদী লেখক সোনা কান্তি বড়ুয়া (Bachelor of Arts, University of Toronto), The Author of several books, সাবেক সভাপতি, বাংলা সাহিত্য পরিষদ, টরন্টো, খ্যাতিমান ঐতিহাসিক, কথাশিল্পী, বিবিধগ্রন্থ প্রনেতা প্রবাসী কলামিষ্ঠ, লাইব্রেরীয়ান, বিশ্ববৌদ্ধ সৌভ্রতৃত্ব পত্রিকার সহ সম্পাদক এবং জাতিসংঘে বিশ্ববৌদ্ধ প্রতিনিধি!