বিদ্যুত সরকার : সূর্যস্নান
আট.
অলস চাঁদের নিরলস রূপালি কিরণে ভেসে গেছে সবুজ বনভূমি। ‘আজ জ্যোৎস্না রাতে সবাই গেছে বনে…’ চন্দ্রমুখী তুমি কার অপেক্ষায় বসে আছো দরোজার চৌকাঠে অবিরাম দৃষ্টি মেলে দিয়ে দূর গ্রামের সেই স্রোতহীন, ঢেউহীন একটি নিস্তেজ প্রায় শুকিয়ে যাওয়া ক্ষীণ নদীর জল রেখায়।

প্রতিটি উইকএন্ডে তোমাকে নিয়ে যাবো উডবাইন বিচে সূর্যস্নানে। ইচ্ছে হলে লেকের সবুজ জলে পা ডুবিয়ে ঝিনুক কুড়োতে পারবে। স্বচ্ছ জলে দৃশ্যমান তোমার দু’পা, পায়ের নুপুরে সূর্যরস্মীর প্রতিফলন কী অদ্ভূত লাগবে তাই না? তোমার সাঁতার জানাটা বড্ড প্রয়োজন ছিল, দু’জনে ডুব সাঁতার দিয়ে অনেক দূর চলে যাওয়া যেতো। আবার কখনো চিৎ হয়ে ভেসে ভেসে দেখতে পেতাম নীল আকাশটাকে।

শীতের সমস্ত জড়তা, ক্লান্তি দূরে ঠেলে দিয়ে বৃক্ষগুলোও সবুজ পাতায় প্রাণঞ্জল, প্রাণবন্ত হয়ে উঠছে, সতেজ হয়েছে।

বাতাসে পাতার কলরব, অলস পাথরের বুকে আশ্রিত ঢেউসমূহ। ছিটকে পড়া জলবিন্দুর ফোয়ারায় শিশুর আনন্দ অবগাহন, শাখে শাখে পাখি ডাকে, পাতায় পাতায় সবুজ ক্লোরোফিল।

নিঃশ্বাসে-প্রশ্বাসে ভাল লাগার আস্বাদ, বুকের ভেতর ভালোবাসার নাগরদোলা, “চাইনা বাঁচতে আমি প্রেমহীন হাজার বছর…”।

আজ উইকএন্ড, আজ উডবাইন বীচ, আজ সূর্যস্নান, আজ হুল্লোর।
আজ কোলাহল, গানে গানে,
আজ ভালবাসা প্রাণে প্রাণে
এসো ছুটে যাই প্রাণের টানে
কাছের দূরের সূর্যস্নানে।।
বিদ্যুৎ সরকার : লেখক ও আলোকচিত্রী, টরন্টো, কানাডা