রবার্ট ইগার, অনুবাদ: কোরবান আলী : (দা ওয়াল্ট ডিজনী কোম্পানির প্রধান নির্বাহী হিসাবে রবার্ট ইগারের পনের বছরে অর্জিত শিক্ষামূলক অভিজ্ঞতা। ২০০৫ সালে রবার্ট ইগার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন যখন কোম্পানি এ যাবৎ কালে সর্বাধিক সঙ্কটময় পরিস্থিতি অতিবাহিত করছে। তিনটি মূলনীতির উপর ভর করে তিনি এগুলেন এক. গুণগত মানের শ্রেষ্ঠতা বজায় রাখা, দুই. নিত্য নতুন প্রযুক্তির সাথে প্রতিযোগিতা না করে প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিৎ করা এবং তিন. গন্ডির বাইরে বিশ্বব্যাপী নিজেদের চিন্তা-চেতনার প্রসার ঘটানো। চৌদ্দ বছরে তিনি ডিজনিকে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ মর্যাদাসম্পন্ন মিডিয়া কোম্পানিতে রূপান্তর করলেন। এখন পিক্সার, মার্ভেল, লুকাসফিল্ম, টুয়েন্টি ওয়ান সেঞ্চুরি ফক্স প্রভৃতি স্বনামধন্য কোম্পানির মালিক দা ওয়াল্ট ডিজনি কোম্পানি। রবার্ট ইগারের লেখা “দা রাইড অফ এ লাইফ টাইম” সাপ্তাহিক ‘বাংলা কাগজ’এ ধারাবাহিকভাবে অনুবাদ করছেন উন্নয়ন সংগঠক ও অনুবাদক কোরবান আলী)

দ্বাদশ.
চতূর্থ অধ্যায়
ডিজনির সান্নিধ্য
(পূর্ব প্রকাশিতের পর) আমি জানতাম আমি রাজি হলে আমাকে আবার লস অ্যাঞ্জেলেসে ফিরে যেতে হবে। কিন্তু আমি লস অ্যাঞ্জেলেসে ফিরে যেতে চাই না। আবার আমার মেয়েদের ছেড়ে দূরে যাতে মোটেই চাই না। লং আইল্যান্ডে আমার বৃদ্ধ মা-বাবা থাকেন আমি তাঁদের কাছাকাছি থাকতে চাই। এক বছরেরও কিছু বেশি হবে আমি উইলো বের সাথে নতুন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছি। উইলো নিউ ইয়র্কে একটা ভালো চাকুরী করে। সে গুড মর্নিং আমেরিকার সাপ্তাহিক ছুটির দিনের প্রগ্রাম পরিচালনা করে। সপ্তাহের অন্যান্য দিনে এই অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন জোয়ান লুন্ডেন। জোয়ান লুন্ডেনের উত্তরসূরি হবে উইলো, সে ভাবেই নিজেকে প্রস্তুত করে নিচ্ছে। আমি চাইনা তাকে ছেড়ে দূরে যেতে আবার তাকে চাকরী ছেড়ে দেবার প্রস্তাবও দিতে চাই না, যাতে করে সে আমার সাথে সারা দেশ ঘুরে বেড়াতে পারে।
সুতরাং একদিকে ব্যক্তিগত সমস্যাগুলোর পাল্লা অনেক ভারী যা আমাকে নিউ ইয়র্ক ছেড়ে যেত বাধা দিচ্ছে। আবার অন্যদিকে পেশাগত উন্নয়ন ও জৌলুস আমাকে সমান ভাবে টানছে নিউ ইয়র্ক ছেড়ে যাবার জন্য। আমি মাইকেলকে ভালোভাবে জানি না, তবে তাঁকে পছন্দ করি, সম্মান করি। অনেক বছর আগে আমাদের দুজনের হালকা জানাশুনা ছিল তখন তিনি এবিসিতে ছিলেন। কিন্তু আমি তখন নি¤œ স্তরের কর্মী ছিলাম। আমাদের পথ কখনই এক ছিল না। আরও অনেক বছর পর সে এবং জেফরি ক্যাটজেনবার্গ আমাকে ডিজনিতে নিয়োগ দেয়ার জন্য চেষ্টা করেছিলেন, তখন আমি এবিসি বিনোদনের প্রধান নির্বাহী। ডিজনির প্রধান নির্বাহী হওয়ার পর মাইকেল তাঁদের স্টুডিওগুলো দেখাশোনা করার জন্য জেফরি ক্যাটজেনবার্গকে নিয়োগ দিয়েছিলেন। সেই তিনি এখন বলছেন আমাকে ছাড়া তাঁরা এবিসি/ক্যাপ-সিটি কিনবেন না। তিনি এও বলেছেন একদিন হয়তো আমাকে ডিজনির প্রধান পরিচালন কর্মকর্তার পদ গ্রহণের কথা বলবেন। যে পদটি ফ্রাঙ্ক ওয়েলসের মৃত্যুর পর এখনও ফাঁকা আছে। আমি সাধারণত আগামীতে কোন পদে যাবো সে পদের জন্য চিন্তা করি না বরং বর্তমান পদের কাজকর্মের উপর বেশি মনোযোগী হওয়াই আমার বৈশিষ্ট। কিন্তু আমাকে হয়তোবা একদিন ডিজনি পরিচালনা করতে হতে পারে সেই চিন্তা থেকেই বর্তমান প্রস্তাব উপেক্ষা করা কঠিন।

উইল দ্ব্যার্থহীনভাবে তাঁদের প্রস্তাব গ্রহণের পক্ষে মত দিয়েছিল। সে বলেছিল আমার তো হারাবার কিছু নেই বরং তঁদের সাথে থাকলে অনেক কিছু পাবার সম্ভাবনা অনেক বেশি। সে আরও বলেছিলো তাঁদের সাথে থাকার জন্য আমাদের যাকিছু করা দরকার আমাদের তাই করা উচিৎ। আমি টম মর্ফিকেও অনুরোধ করেছিলাম তাঁর বিজ্ঞ মতামত দেবার জন্য। টম দ্বিধাদ্বদ্বে ছিলেন কারণ তিনি চেয়েছিলেন আমাকে আমার পদসহ কোম্পানি হস্তান্তর করতে, সে ক্ষেত্রে তিনি নিজের স্বার্থ ত্যাগ করতেও রাজি ছিলেন। তিনি সবসময় আমাকে সেরা উপদেশগুলো দিয়েছেন। তিনি আসল কথাটা বললেন, ‘বন্ধু, তুমি যদি তোমার কার্ডগুলো সঠিকভাবে খেলতে পার তবে একদিন আসবে যেদিন তুমিই এই কোম্পানি পরিচালনা করবে।’

একদিন শুক্রবার রাতে ডিজনি এবং ক্যাপিটাল-সিটি/এবিসি কোম্পানি আর্থিক শর্তগুলোর বিষয়ে একমত হলেন। কিছু সূক্ষ্ন বিষয়াদি বাকি রইল যেগুলো মিমাংশা হওয়া জরুরী। এগুলোর মধ্যে প্রধানতম অমিমাংশিত বিষয় হচ্ছে আমি ডিজনিতে থাকবো নাকি ছেড়ে যাবো। একই রাতে আমার আর উইলর বিবাহ সুসম্পান্ন করার জন্য আমরা দুজনে পুরোহিত জেসুইটের সাথে প্রাতরাসের তারিখ ঠিক করেছি। (আমি ইহুদি আর উইলো ক্যাথলিক, কাজেই আমরা ক্যাথলিক পুরোহিত ফাদার ঘিরালান্ড আর নিউ জারসি থেকে একজন ইহুদি পুরোহিতকে বেছে নিয়েছিলাম আমাদের বিবাহ সুসম্পন্ন করার জন্য।) সেদিন প্রাতরাসে বসে একজন তালাক প্রপ্ত ইহুদি যুবক ক্যাথলিক পুরোহিতকে মুগ্ধ করার প্রয়াস চালাচ্ছিলাম আর প্রতি দুই মিনিট অন্তর আমাকে উঠে দাঁড়িয়ে ক্ষমা প্রর্থনা করে বাইরে বের হয়ে ফোন ধরতে হচ্ছিল ডিজনির প্রশ্নের উত্তর দেবার জন্য। আমি অত্যন্ত ভয়ে ছিলাম পাছে ফাদার ঘিরালান্ডর অসম্মান না হয়ে যায়, শেষে আমি তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়ে বললাম, ‘আমি জানি আমি ইহুদি তবে আপানার কাছে আমি আশা করবো আপনি ‘পুরোহিত-খোদ্দের’ সম্পর্কিত সমস্ত গোপনীয়তা বজায় রাখবেন।’
অবশ্যই, এটি আমার কর্তব্য’ তিনি বললেন।

বিনোদন জগতের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ক্রয়-বিক্রয়ের ঘোষণা করতে যাচ্ছি আর আমি সিদ্ধান্ত নেবার চেষ্টা করছিলাম আমি কোম্পানিটিতে থাকবো না ছেড়ে দেবো। এ সমস্ত বিষয় নিয়েই আমরা ফোনে আলাপ-আলোচনা করছিলাম।’
ফাদার ঘিরাল্ড ঈশ্বর প্রদত্ত জ্ঞানদীপ্ত কোন উপদেশ দিলেন না বরং আমার গৃহীত সিদ্ধান্ত যেন মঙ্গোলময় হয় তার জন্য আশির্বাদ করলেন। আমাদের বিবাহের জন্য পুরোহিত সেবাগুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলতে থাকল, কিন্তু প্রত্যেক সময় আমি ক্ষমা চেয়ে আর একবার ফোনে কথা বলার অনুমতি নিয়ে ফোনে কথা বলা শুরু করতাম। আমেরিকার ব্যবসা বাণিজ্যের ইতিহাসে অন্যতম বড় অধিগ্রহণের চাক্ষুস স্বাক্ষী হোতে পেরে ফাদার ঘিরাল্ডকে বিরক্ত হবার বদলে বরং হালকা রোমাঞ্চিত দেখাচ্ছিল।

টম মর্ফির পরামর্শ মোতাবেক আমি একজন আইনজীবি নিয়োগ দিলাম, তাঁর নাম জো ব্যাচেল্ডার। সনিবার সকালে নিউ ইয়র্ক শহরের মাঝখানে ম্যানহটনে তাঁর অফিসে গেলাম। তাঁকে বললাম এটি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সামাধানে আসতে হবে। আমি মূলতঃ ডিজনিতে থাকার পক্ষেই ছিলাম, কিন্তু জোকে পাঠিয়েছিলাম ডিজনির কনসল জেনারেল স্যান্ডি লিডভ্যাকের সাথে যুক্তিতর্কের মাধ্যমে আমার পদ ও বেতন সংক্রান্ত জটিলতা থেকে মুক্ত হোতে, আমি যাতে একটা গ্রহণযোগ্য অবস্থান পায়। পরের রাত্রে ডিজনি আর এবিসির বোর্ড মেম্বাররা ডেউই বালানটাইন অফিসে উপস্থিত হলেন। ডেউই বালানটাইন একটা কর্পোরেট আইন সংস্থা যারা এই বিশাল অধিগ্রহণের জন্য ডিজনিকে প্রতিনিধিত্ব করছিল। শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি। দুটি বৃহদাকার কর্পারেট কোম্পানিকে একিভূত করার জন্য যখন উভয় বোর্ড যুক্তি-তর্ক তুলে ধরছিল। স্যান্ডি লিটভ্যাক বলছিলেন সমস্ত কিছুই ভন্ডুল হয়ে যেতে পারে যদি জো এমন শক্ত সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন। এক সময় মাইকেল টম মর্ফিকে এক পাশে নিয়ে যেয়ে তাঁকে অনুরোধ করলেন আমাকে বোঝানোর জন্য এবং বিষয়টি মিমাংশা করে দেয়ার জন্যে। ডিজনি আমাকে যে পদ ও সুবিধাদি দিচ্ছে সেটি আমাকে মেনে নিতে অনুরোধ করলেন। একটু পরে মাইকেল নিজেই আমার মুখোমুখি হলেন, বললেন, ‘বব, এই ১৯.৫ বিলিয়ন ডলারের সম্পত্তি কেনা আমার কাছে অনেক সহজ কিন্তু আপনাকে কোম্পানিতে রাখা অনেক কঠিন মনে হচ্ছে। আপনি কি দয়া করে হ্যাঁ বলবেন?’

সর্বশেষ বিতর্কিত বিষয় ছিল আমি কার কাছে আমার কাজের জন্য দ্বায়বদ্ধ থাকবো। জো একটা লিখিত চুক্তির পক্ষে ছিলো যেখানে লেখা থাকবে আমি সরাসরি মাইকেলের কাছে দ্বায়বদ্ধ থাকবো। মাইকেল সেটি অস্বীকার করল। মাইকেল চায় আমাদের দুজনের মাঝখানে একজন প্রেসিডেন্ট থাকবেন যার কাছে আমি দ্বায়বদ্ধ থাকবো। এবং তিনি নিশ্চিৎ হতে চাচ্ছিলেন আমি সেটি বুঝবো এবং সেভাবে কাজ করবো। যেখানে আমি চাচ্ছিলাম যে সে বলুক আমি লিখিতভাবে তাঁর দুই নম্বর সহকর্মী। মাইকেলের খোলা মন মানুসিকতার জন্য তাঁর প্রশংসা না করে উপায় নেই। পরে তিনি যা বলছেন তাই মেনে নেবার জন্য আমি জোকে অনুরোধ করলাম। ডিজনির প্রধান নির্বাহী হবার একটা সহজ পথ আমি আশা করছিলাম। আবার ভাবলাম পৃথিবীতে কোন কিছুই নিশ্চিৎ নয়। যাহোক এটার জন্য মাইকেলের সাথে বাদানুবাদের সঠিক সময় এখন নয়। আমি মনে প্রানে চাচ্ছিলাম একিভূতকরণ ভালোভাবে সম্পন্ন হোক। ক্যাপ-সিটির লোকজনকে ডিজনি ভালোভাবে সম্মানের সাথে গ্রহণ করুক। নিরপেক্ষভাবে দেখলে বোঝা যায় বাকি সবাই ডিজনি কর্তৃক নিয়োগ পেয়েছিলেন, তবে সকলেই কমবেশি হতাশ হয়েছেন।

পরের দিন খুব সকালে আমরা সকলে এবিসির প্রধান কার্যালয়ে, ছেষট্টিতম সড়কে মিলিত হলাম। আমাদের পরিকল্পনা ছিল ঘোষণাপত্র পাঠ করা আর প্রেস কনফারেন্স করা সেটি অনুষ্ঠিত হবে এবিসির একটা গুরুত্বপূর্ণ স্টুডিওতে যার নাম টিভি-১ যেখানে ১৯৬০ সালে কেনেডি-নিক্সন টিভি বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এর পর মাইকেল ও টম পাশের স্টুডিও টিভি-২তে হেঁটে যাবেন গুড মর্নিং আমেরিকায় এক টিভি সাক্ষাৎকার দেবেন, যা সরাসরি স¤প্রচার হবে। এটি অবশ্যই একটা ব্রেকিং নিউজ হবে। এবিসি নিউজের কাউকেই আগে বলা হয়নি যে এই অনিবার্য সংবাদটি এখন স¤প্রচার করা হবে। কাকতালিয়ভাবে সেদিন অনুষ্ঠানটি প্রযোজনা করছিলেন উইলো, আসলে উইলো জোয়ান লুন্ডেনের জায়গায় সেদিন কাজ করছেন। সেদিন উইলোর সহযোগী ছিলেন চার্লি গিবসন। তিনি পাশের স্টুডিওতে হৈচৈ শুনতে পেয়ে উইলোকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘এক থেকে দশের স্কেলে আপনি কোথায় টিক দেবেন পাশের স্টুডিওতে কি হচ্ছে।’ উইলো জানতেন পাশের রুমে কি হচ্ছে তবে তিনি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলেন কাউকে বলবেন না। তাই তিনি উত্তর দিলেন, ‘আমি বারো নম্বরে টিক দিবো, চার্লি।’

এই অধিগ্রহণের ঘোষণায় আমার পাঁচ বছরের চুক্তির কথাও ঘোষণা হয়। তারপর আমি দ্রæতই ক্যাপ-সিটি ও এবিসির সকল নির্বাহীদের নিয়ে এক জরুরী সভা করি। এই সভার জন্য কেউ প্রস্তুত ছিলেন না, সকলকেই অনেক হতভম্ব দেখাচ্ছিল। টেবিলের চারপাশের বসে থাকা সমস্ত মানুষ টম আর ড্যানের জন্য পেশাগত জীবনের সমস্তটাই অতিবাহিত করেছেন, তাঁরা হতবাক হয়ে আমার দিকে চেয়ে আছেন আর প্রশ্ন করছেন, ‘এখন কি হবে? আমরা কি করবো?’

আমি যতটা সম্ভব খোলাখুলিভাবে বলার চেষ্টা করলাম। ডিজনি আমাদের চেয়ে অনেক আলাদা ধরনের কর্পোরেট সংস্কৃতির চর্চা করে, কিন্তু টম যখন অধিগ্রহণের প্রস্তাবে রাজি হন তখন কোম্পানির সমস্ত বিষয় তাঁর মাথায় ছিল। একটা ভিন্ন ধরনের পরিবর্তনের অভিজ্ঞতা আমরা সকলে উপলব্ধি করবো। এ জটিলতম পরিবর্তনের স্বাদ আমাদের সকলকেই পেতে হবে। আমি সকলকে বোঝানোর চেষ্টা করছিলাম কতটা অনিশ্চিৎ আর অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে আমাদের যেতে হবে। আমরা যে কর্পোরেট সংস্কৃতির মধ্যে পেশাগত জীবন অতিবাহিত করছিলাম সেটার পরিসমাপ্তি ঘটেছে। আমরা যে প্রতিষ্ঠানে এতোদিন কাজ করেছি তার চেয়ে ডিজনি অনেক দ্রæত গতি সম্পন্ন, অনেক সৃজনশীল হলিউড কেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠান। আমি এই অধিগ্রহণটিকে সহয করার পক্ষে কাজ করেছি। আমি তাঁদের বোঝাতে চেয়েছি তাঁদের যদি কোন সাহায়্যের প্রয়োজন হয় তবে তাঁরা আমার উপর আস্থা রাখতে পারেন।

মাত্র ১৯.৫ বিলিয়ন ডলারে এত বড় কোম্পানি বিক্রি করায় অনেকেই হতাশ হয়েছেন। অনেকেই অভিমত দিয়েছেন টম যদি আর কিছুদিন অপেক্ষা করতেন তবে অনেক বেশি দামে বিক্রি করতে পারতেন। আসলে ভবিষ্যত সম্পর্কে কেউ নিশ্চিৎ করে কিছুই বলতে পারেন না। ডিজনির দরকষাকষির দক্ষতার কারণে এই দাম নির্ধারিত হয়েছিল। এটা অনেকটাই নিশ্চিৎ ছিল। মাইকেল এটি ক্রয়ের জন্য কখনও কোন কৃতিত্ব পাননি বরং এটি ছিল একটা ঝুঁকিপূর্ণ অধিগ্রহণ যার খেসারত ডিজনিকে বছরের পর বছর দিতে হয়েছে। এই ক্রয় ডিজনিকে এক ধরনের স্বাধীনতা দিয়েছিল যেখানে অন্যান্য ছোট কোম্পানিগুলো হীনমন্যতায় ভূগতো যে তাঁরা ছোট কোম্পানি তাঁরা কিভাবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে খাপ খাইয়ে চলবে। যে সম্পদ এই অধিগ্রহণে ডিজনি অর্জন করেছিল তা ছিলো ব্যবসায় টিকে থাকার সাহস। কারণ ডিজনি তার অ্যানিমেশন ব্যবসায় প্রায় এক দশক ব্যাপি হতাশায় ডুবে ছিল। পক্ষান্তরে ইএসপিএন বছরের পর বছর প্রবৃদ্ধি অর্জন করে গেছে। (চলবে)