টরন্টোর ডানফোর্থের বায়তুল আমান জামে মসজিদে ঈদের নামাজের একাংশ

সুহেল ইবনে ইসহাক, টরন্টো, কানাডা: কানাডাতে গত ১৩ মে বৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদুল ফেতর উদযাপিত হয়। কানাডার বিভিন্ন স্থানে ভিন্ন মাত্রায় উদযাপিত হয়েছে এবারের ঈদুল ফিতর। এবারের ঈদ ছিল একেবারেই আলাদা। কানাডাতে এবারের ঈদ ছিল অন্য রকম। উৎসব ছিল তবে তা প্রাণহীন। অধিকাংশ মসজিদে সীমিত আকারে ঈদের জামাত আয়োজন করেছে। শুধু ১০ থেকে ১২ জনে নিয়ে জামাত আয়োজন করেছে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে। ফজরের নামাজের পরপরই ঈদের জামাতে অংশ নিতে স্থানীয় মসজিদগুলোতে জড়ো হন বিভিন্ন দেশের মুসলিম নাগরিক, প্রবাসী বাংলাদেশিসহ সকল দেশের ধর্মপ্রাণ মুসল্লীরা। ঈদের জামাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে, মাস্ক, গøাভস পরে নামাজ আদায় করতে দেখা গেছে।

কানাডার বিভিন্ন স্থানে উদযাপিত হয়েছে ঈদুল ফিতর। প্রবাসী বাঙালিরা এ বছর এক ব্যতিক্রম ঈদ উদযাপন করেছেন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সীমিত পরিসরে মিলিত হয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন একে অপরের সঙ্গে। তাছাড়া মসজিদে স্থান সংকুলানের অভাবে ও ওন্টারিওতে স্টে এট হোম অর্ডারের কারণে অনেক প্রবাসীরাই ঘরে নামাজ আদায় করেন। তাছাড়া বৃহস্পতিবার কানাডায় কর্ম দিবস থাকায় অনেকেই ঘরে নামাজ পড়ে কর্মস্থলে চলে যান।

ঈদের দিনে কারো কারো কর্মদিবস থাকায় খুব ভোরে নতুন পোশাক পরে অনেকেই আগেভাগে বের হয়ে পড়েন ঈদের নামাজ আদায় করতে। প্রবাসী বাঙালিদের নিজস্ব মসজিদ ছাড়াও বিভিন্ন কমিউনিটির মসজিদে প্রবাসীরা নামাজ আদায় করেন। কানাডার বিভিন্ন মসজিদে কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

ডি.আই.সি.’র ঈদ উদযাপন

ডেনফোর্থ ইসলামিক সেন্টার সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে কয়েকটি ঈদের জামাতের মধ্যখানে সকাল ১০ ঘটিকার সময় ভার্চুয়াল ঈদ সেলিব্রেশন এর আয়োজন করে। জুম্ এ সরাসরি এই অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়। সিটি মেয়র জন টোরি, এম.পি. ও মিনিস্টার বিল বেøয়ার, এম.পি. নেতানিয়েল স্মিথ, এম.পি.পি. রিমা বার্নস ম্যাকগাউন, এম.পি.পি. ডলি বেগম, সিটি কাউন্সিলর গ্রে ক্রাউফোর্ড ও সিটি কাউন্সিলর বেড ব্রাডফোর্ড অংশগ্রহণ করে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। পরে ঈদের খুৎবা পাঠ করা হয়, খুৎবা পাঠ করেন শেখ ইরশাদ ওসমান।

কানাডায় বসবাসরত মুসলমানরাও ঈদের দিন পরিবার-পরিজনদের সঙ্গে সময় কাটায়। সাধারণত এদিন তারা অফিস থেকে ছুটি নেয়। টরেন্টো, মন্ট্রিয়ল, ভ্যাঙ্কুভার, অটোয়ার মতো বড় শহরে কয়েক দফায় ঈদের নামাজ পড়ানো হয়। নামাজ শেষে এখানকার চিরাচরিত নিয়ম অনুযায়ী মানুষ একেক জনের বাসায় ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় ও বেড়াতে যেত। বাংলাদেশিদের এই ঈদের আয়োজনে এখানকার মূলধারার রাজনীতিবিদেরাও অংশ নিতেন। এ বছর তা দেখা যায়নি। ঘরোয়াভাবে সবাই ঈদ করেছে। নিজেরা রান্না করে নিজেরা খেয়েছে। তবে মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রকোপে মুসলিম উম্মার এ উৎসবটি ঘরে বসেই কাটাতে হচ্ছে মুসলমানদের।

কানাডাজুড়ে সীমিত পরিসরে ঈদ উদযাপন করলেও কোথায় যেন ছিল এক শূন্যতা। করোনায় প্রিয়জন হারানো প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে এখনও হতাশা বিরাজ করছে। তবুও প্রবাসী বাঙালিরা খুব ভোরে নতুন পোশাক পরে পরিবার-পরিজন নিয়ে বাড়িতে ঈদের নামাজ পড়েন, চিরায়ত ঈদ উৎসবের আমেজে নিজেকে অবগাহিত করেন।