অনলাইন ডেস্ক : কারাদণ্ডের মেয়াদ বেড়েছে বাংলাদেশের সাবেক এমপি কাজী শহিদ ইসলাম ওরফে পাপুলের। আজ সোমবার কুয়েতের একটি আপিল আদালত তার কারাদণ্ডের মেয়াদ আরো তিন বছর বাড়িয়েছে। এর আগে তার চার বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল। ফলে এখন তার কারাদণ্ডের মেয়াদ মোট সাত বছর। এর বাইরে তাকে ২০ লাখ কুয়েতি দিনার জরিমানা করা হয়েছে। কুয়েতের পত্রিকা কাবাসের অনলাইন সংস্করণ জানিয়েছে এ খবর।
এতে বলা হয়, শহিদ ইসলাম পাপুলের বিরুদ্ধে কুয়েতে ঘুষ লেনদেন ও মানবপাচারের অভিযোগে একটি মামলা আছে। আরেকটি মামলা আছে অর্থ পাচারের অভিযোগে।
ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে এর আগেই তাকে চার বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। আর সোমবার মানব পাচারের অভিযোগে আরো তিন বছরের কারাদণ্ড ও ২০ লাখ কুয়েতি দিনার জরিমানা করা হয়েছে।
অপরদিকে অর্থ পাচারের মামলা এখনও বিচারাধীন। এই মামলার রায় পেতে আরো কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে। ধারণা করা হয়, এই মামলায় তার কয়েক বছরের সাজা হতে পারে। মানব ও অর্থ পাচারের অভিযোগে পাপুলকে গত বছরের ৬ জুন রাতে তার কুয়েত সিটির বাসা থেকে দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা আটক করে। সোমবার মানবপাচারের মামলায় পাপুল ছাড়াও আরো তিনজনের কারাদণ্ড হয়েছে। তারা হলেন কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক আন্ডারসেক্রেটারি জেনারেল শেখ মাজেন আল জারাহ। তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। অন্য দু’জন হলেন কুয়েতের সাবেক এমপি সালাহ খুরশিদ এবং কুয়েতের একজন সরকারি কর্মকর্তা। তাদেরকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এ মামলা থেকে বর্তমান এমপি সাদুন হামাদকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ, বাংলাদেশ থেকে অবৈধ উপায়ে কুয়েতে মানুষ নিয়োগ দিতেন পাপুল। এক্ষেত্রেও ব্যাপক বড় অংকের টাকার ঘুষ লেনদেন হতো। এ অভিযোগে তাকে জানুয়ারিতে চার বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। জরিমানা করা হয় ৫৩ কোটি টাকা। এ মামলায় কুয়েতের তিন নাগরিকের পাশাপাশি এমপি পাপুলের তিন সহকর্মী এবং সিরিয়ার এক নাগরিককে কারাদণ্ড দেন আদালত। মামলা সংশ্লিষ্ট কুয়েতের পাবলিক প্রসিকিউটরের দপ্তর, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সূত্র ও নথিপত্র থেকে জানা যায়, শুরু থেকেই শহিদ ইসলাম পাপুলের বিরুদ্ধে মানব পাচারের পাশাপাশি মুদ্রা পাচারের অভিযোগ ছিল। এমনকি কুয়েতে শহিদ ইসলামের বাড়ির গ্যারেজে রাখা গাড়ি এবং তার প্রতিষ্ঠানে তল্লাশি চালিয়ে চেকসহ আর্থিক লেনদেনের বেশ কিছু প্রমাণ পায় দেশটির গোয়েন্দারা।
এখানে উল্লেখ্য, লক্ষ্মীপুর-২ আসন (রায়পুর-লক্ষ্মীপুর সদরের আংশিক) থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন শহিদ ইসলাম পাপুল। কুয়েতে দণ্ডিত হওয়ার পর বাংলাদেশে এমপি পদ হারান তিনি। কুয়েতে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে লক্ষ্মীপুরের মানুষ শহিদ ইসলাম পাপুলকে দানবীর হিসেবে জানতেন। এলাকার লোকজন জানান, ১৯৮৯ সালে একটি প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজার (শ্রমিকদের তত্ত্বাবধায়ক) হিসেবে চাকরি নিয়ে কুয়েত যান শহিদ। তখন তিনি ছিলেন অনেকটা নিঃস্ব। ১৯৯০ সালে ইরাকের কুয়েত দখলের কারণে তিনি দেশে ফিরে আসেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শহিদ আবার কুয়েতে যান।