অনলাইন ডেস্ক : জাতীয়তার অন্যতম সনদ পাসপোর্ট শক্তি বা মূল্যায়নের উপর ভিত্তিতে প্রতিবছর সারণী তালিকা প্রকাশ করে হেনেলি পাসপোর্ট ইনডেক্স। এইচপিআই-এর সর্বশেষ বৈশ্বিক র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের পাসপোর্ট সেই ১০১ নম্বরেই থাকছে।

গত জানুয়ারিতে প্রকাশিত এইচপিআই ইনডেক্সে ৯৮ তম স্থানে ছিল বাংলাদেশের জাতীয় ভ্রমণ ছাড়পত্র। এরপর জুলাইতে আরও তিন ধাপ নেমে যায়।

মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) র‍্যাংকিং সারণীটি প্রকাশিত হয়। পাসপোর্ট মূল্যায়নে অন্যতম মানদণ্ড হিসাবে আগে থেকেই ভিসা ছাড়াই সরাসরি কোন দেশ ভ্রমণের ক্ষমতাকে গুরুত্ব দেয় হেনলি।

ওই সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীরা মাত্র ৪১টি দেশে এভাবে ভ্রমণ করতে পারেন।

এক দশক আগে অবশ্য এদেশের পাসপোর্টধারীরা ২২৭টি দেশের মধ্যে ৩৯টিতে ভ্রমণ করতে পারতেন কোন আগাম ভিসার প্রয়োজন ছাড়াই।

বাংলাদেশি পাসপোর্টে ভিসা ছাড়া ভ্রমণ করা যায়; এমন ১৬টি গন্তব্য আফ্রিকায়, ১১টি ক্যারিবিয় অঞ্চলে, সাতটি ওশেনিয়া অঞ্চলে (অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড বাদে), ছয়টি এশিয়ায় এবং মাত্র একটি দক্ষিণ আমেরিকায় অবস্থিত।

ভিসা ছাড়া ভ্রমণ বলতে ওই দেশগুলোতে যেতে ভিসা লাগবে না। আর ভিসা অন অ্যারাইভাল মানে ভিসা লাগবে, তবে বিমানে ওঠার সময় না হলেও চলবে। দেশটিতে গিয়ে বিমানবন্দর বসে আবেদনের পর সেখান থেকেই সংগ্রহ করা যাবে।

বাংলাদেশি পাসপোর্ট সবচেয়ে শক্তিশালী হয় ২০০৬ সালে। সেবছর ৬৮তম স্থানে ছিল। ১০১-ই এ যাবতকালের সবচেয়ে খারাপ অবস্থান।

টানা চতুর্থ বছরের মতো পাসপোর্টের এই সূচকে জাপান ধরে রেখেছে শীর্ষস্থান। দেশটির পাসপোর্টধারীরা ভিসা ছাড়াই ভ্রমণ করতে পারে ১৯১টি দেশে।

অন্যদিকে ২০২০ সালের মতো এবারও আফগানিস্তানের পাসপোর্টকে চিহ্নিত করা হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে দুর্বল পাসপোর্ট হিসেবে। মাত্র ২৬টি দেশে আগাম ভিসা ছাড়া প্রবেশ করতে পারে দেশটির পাসপোর্টধারীরা।

হেনলি পাসপোর্ট ইনডেক্স তৈরি করা হয় ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (আইএটিএ) কর্তৃক প্রদত্ত তথ্যের ভিত্তিতে। এতে ১৯৯টি পাসপোর্ট এবং ২২৭টি ভ্রমণ গন্তব্যের উপর ভিত্তি করে সক্ষমতা নির্ধারিত হয়।

সারা বছরই তারা পাসপোর্ট সংক্রান্ত তথ্য সংযোজন করতে থাকে, ফলে নানা দেশের ভিসা নীতির রদবদলও সেখানে যুক্ত হয়।

আর্টন ক্যাপিটালের পাসপোর্ট সূচক বিবেচনায় রাখে জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্র এবং ছয়টি অঞ্চলের পাসপোর্টকে। অন্য দেশের মধ্যে বিতর্কিত স্থানকে তারা গন্তব্যস্থানের স্বীকৃতি দেয় না। যেগুলো হচ্ছে- গণপ্রজাতন্ত্রী তাইওয়ান, ম্যাকাও (এসএআর চীন), হংকং (এসএআর চীন), কসোভো, ফিলিস্তিনি অঞ্চল এবং ভ্যাটিক্যান।

তাছাড়া সূচক থেকে বাদ দেওয়া হয় অন্যান্য দেশের সাথে সংযুক্ত অঞ্চলগুলিকে।

হেনলি অ্যান্ড পার্টনার-এর সূচক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর তৈরি করা সূচকগুলোর মধ্যে অন্যতম। যা নির্ধারণ করা হয় কোন দেশের পাসপোর্ট সেই দেশের নাগরিককে কতটা সুবিধা দিচ্ছে তার উপর ভিত্তি করে।

২০২১ সালের সেরা পাসপোর্টধারী দেশগুলো হচ্ছে:

জাপান (১৯১টি দেশ), সিঙ্গাপুর (১৯০), দক্ষিণ কোরিয়া ও জার্মানি (১৮৯), ইতালি, ফিনল্যান্ড, স্পেন, লুক্সেমবার্গ (১৮৮), ডেনমার্ক, অস্ট্রিয়া (১৮৭), সুইডেন, ফ্রান্স, পর্তুগাল, নেদারল্যান্ডস, আয়ারল্যান্ড (১৮৬), সুইজারল্যান্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, নরওয়ে, বেলজিয়াম, নিউজিল্যান্ড (১৮৫), গ্রীস, মাল্টা, চেক প্রজাতন্ত্র, অস্ট্রেলিয়া (১৮৪), কানাডা (১৮৩) ও হাঙ্গেরি (১৮১)।

সবচেয়ে কম ক্ষমতাসম্পন্ন পাসপোর্টধারী দেশগুলো হচ্ছে: বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ ৪০টিরও কম দেশে ভিসা-মুক্ত ভ্রমণের বা অন-অ্যারাইভাল ভিসার সুযোগ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:-

১০৩। উত্তর কোরিয়া (৩৯ টি দেশে)
১০৪। লিবিয়া, নেপাল (৩৮)
১০৫। ফিলিস্তিনি অঞ্চল (৩৭)
১০৬। সোমালিয়া, ইয়েমেন (৩৩)
১০৭। পাকিস্তান (৩২)
১০৮। সিরিয়া (২৯)
১০৯। ইরাক (২৮) ও
১১০। আফগানিস্তান (২৬)