অনলাইন ডেস্ক : বন্ধুদের বোকা বানাতে ক্যান্সারের আক্রান্ত রোগী হবার অভিনয়। এমনকি মাথার চুল ফেলে টাক করে ফেলেন। এমন আচরণ দিয়ে বন্ধুদের বোঝাতে চেয়েছিলেন যে, তিনি ক্যান্সারে মারাত্মক অসুস্থ অন্যের সাহায্য ছাড়া সিঁড়ি বাইতে তো দুরের কথা নামতে পর্যন্ত পারেন না। হাতে বেশী সময় নেই, চিকিৎসক তাকে দু’মাস সময় দিয়েছেন। এরপরেই তিনি মারা যাবেন।

এমন আবেদনে জানান আর্থিক সহায়তা। এমন পরিস্থিতিতে আসতে থাকে অর্থ। প্রতারণার এমনই এক দুর্দান্ত নতুন কৌশল অবলম্বন করে ইংল্যান্ডের চেশায়ারে ২৯ বছর বয়সী যুবতী টনি স্ট্যানডেন হাতিয়ে নিয়েছে ৮৫০০ পাউন্ড।

তবে প্রতারণার এই কৌশলে আসা অর্থ দিয়ে চিকিৎসা নয় বরং তিনি বিয়ে করেছেন তার পার্টনার জেমসকে। অর্থাৎ বিয়ের খরচ উঠাতে ক্যান্সারে আক্রান্তের রোগী সেজেছিলেন টনি স্ট্যানডেন। কিন্তু তার এমন প্রতারণা দীর্ঘ হয়নি বরং ধরা পড়ে যায় বন্ধুদের কাছেই। এতে টনি স্ট্যানডেনকে এখন স্বামীর ঘরের বদলে জেলের ভাত খেতে হচ্ছে। স্ট্যানডেনের এমন প্রতারণার জন্য আদালত তাকে ৫ মাসের জেল দিয়েছে।

এমনই খবর দিয়েছে বিবিসি। এতে বলা হয়, টনি স্ট্যানডেন বন্ধুদের কাছে আর্থিক আবেদন জানানোর পর তারা গো ফান্ড মি নামে একটি পেজ খোলেন। এতে তার চিকিৎসার খরচের জন্য অর্থ সহায়তা চাওয়া হয়।

টনি তার পার্টনার জেমসের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চান। এর জন্য টনির আর্থিক সাহায্যের প্রয়োজন ছিল, তাই সে এমন প্রতারণার আশ্রয় নেয়। কিন্তু যখন দেখা যায় টনি ক্যান্সার আক্রান্ত নয়, তখন বিষয়টি আদালতে গড়ায়। মঙ্গলবার চেস্টার ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে হাজিরা দেন টনি। সেখানে নিজের দোষও স্বীকার করে নেন। তাকে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী ২০০০ পাউন্ড দান করেছিলেন। সেই অর্থ ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। একই সঙ্গে আদালত তাকে ৫ মাসের জেল দেয়।

ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিস জানায়, ২০১৫ সালের জুনের এই ঘটনায় তখন টনি স্ট্যানডেন তার দুই বন্ধু অ্যাশলে রওশন এবং জেনিফার ডগলাসকে জানান যে, তার জননাঙ্গে ভয়াবহ ক্যান্সার ধরা পড়েছে। এরপর তিনি চিকিৎসার নিয়মিত আপডেট জানাতে থাকেন। ফলে তার বন্ধুরা এবং দাতব্য সংস্থাগুলোর কোনো সংশয় ছিল না তার অসুস্থতা নিয়ে। এক পর্যায়ে তিনি আপডেটে জানান যে, চিকিৎসকরা বলেছেন, তিনি আর মাত্র দু’মাস বাঁচবেন। এ সময় তার ৫৭ বছর বয়সী পিতা ডেরেকও ক্যান্সারে মৃত্যুপথযাত্রী। তার সঙ্গেই তার জীবনের ইতি ঘটতে যাচ্ছে হয়তো। এ অবস্থায় তার বিয়ে দিতে বন্ধুরা একটি তহবিল গড়েন। তার পিতার মৃত্যুর পরে উইডনেসে সেইন্ট বেডে’স ক্যাথলিক চার্চে তাদের বিয়ে হয়। তার পিতা মারা যাওয়ার আগে ধারণ করা একটি ভিডিও এদিন চালানো হয়।