অনলাইন ডেস্ক : অবশেষে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া সেই প্রেমিকের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিতে রাজি হয়েছেন জাপানের যুবরাজ ফুমিহিতো। দীর্ঘদিন ধরে স্থগিত থাকা এই বিয়ের অনুমোদন দিয়েছেন তিনি। গতকাল সোমবার স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের বরাতে এ খবর জানিয়েছে বিবিসি।
যুবরাজ ফুমিহিতোর মেয়ে রাজকুমারী মাকোর বাগদান হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া প্রেমিক কেই কোমুরোর সঙ্গে। ২০১৮ সালে বাগদান হলেও আর্থিক জটিলটায় আর বিয়ে করা হয়নি তাঁদের। তখন যুবরাজ ফুমিহিতো রাজি না থাকলেও অবশেষে দীর্ঘদিন পর সেই বিয়েতে রাজি হয়েছেন তিনি।
কোমুরো ২০১৮ সালের আগস্ট থেকে নিউইয়র্কের ফোরহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বার এক্সাম দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে পড়াশোনা করছেন। ২০১৭ সালে সেপ্টেম্বরে ২৯ বছর বয়সী প্রিন্সেস মাকো ও কোমুরো তাঁদের বাগদানের পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। ২০১৮ সালে নভেম্বরে তাঁদের বিয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে জানিয়ে দেওয়া হয় ২০২০ সাল পর্যন্ত তাঁদের বিয়ের প্রস্তুতি স্থগিত করা হয়েছে।
যদিও জাপানের রাজপরিবারে এটা প্রথম ঘটনা নয়। এর আগে ২০০৫ সালে সম্রাট আকিহিতোর মেয়ে সায়াকো রাজপরিবারের বাইরে সাধারণ নগর পরিকল্পনাবিদকে বিয়ে করে রাজপরিবার ছেড়েছিলেন। ভরণপোষণ বাবদ এককালীন ১৩ লাখ ডলার পেয়েছিলেন তিনি। এক যুগ পর ফুপুর পথ অনুসরণ করে নতুনভাবে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন ২৫ বছর বয়সী মাকো।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজপরিবারের বাইরে কাউকে বিয়ের মধ্য দিয়ে রাজকুমারী তকমা হারাতে যাচ্ছেন মাকো। তিনি আর রাজকুমারীর মর্যাদা পাবেন না।
জাপানের রাজপরিবার আইন ১৯৪৭ অনুসারে, রাজকন্যারা সাধারণ ব্যক্তিকে বিয়ে করলে রাজপরিবার ছাড়তে হয়। জাপানের আইন অনুযায়ী, রাজপরিবারের নারী সদস্যরা সাধারণ কোনো মানুষকে বিয়ে করলে রাজকীয় উপাধি ত্যাগ করতে হয়।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, একটি আইনি প্রতিষ্ঠানের কর্মী কেই কোমুরোর (২৫) সঙ্গে আগামী বছর বিয়ের সম্ভাবনা রয়েছে রাজকন্যা মাকোর। রাজপরিবারের নিয়ম অনুসারে, বিয়ের পরপরই মাকো হারাবেন তাঁর রাজকীয় উপাধি। তাঁর জীবনে আসবে নাটকীয় সব পরিবর্তন। তাঁকে রাজপরিবার ছেড়ে চলে যেতে হবে। স্বামীর সঙ্গে বসবাস করতে হবে রাজপরিবার থেকে দূরে কোনো স্থানে। তবে রাজকন্যা এককালীন কিছু অর্থ পাবেন, যা নিজেদের ভরণপোষণের কাজে লাগাতে পারবেন। তাঁকে সাধারণ নাগরিকদের মতো ভোট দিতে হবে এবং কর পরিশোধ করতে হবে। দোকানে যাওয়া, টুকিটাকি কেনাকাটাসহ নিজের কাজ নিজেকেই করতে হবে। আর এই দম্পতির সন্তানেরা রাজপরিবারের সদস্য হিসেবে বিবেচিত হবে না।
উল্লেখ্য, জাপান রাজপরিবারের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে ১০ বছরের রাজকুমার হিসাহিতো একমাত্র ছেলে। রাজপরিবারের ভবিষ্যৎ তাঁর সঙ্গেই শেষ হয়ে যাবে। জাপানের রাজপরিবার আইন ১৯৪৭ অনুসারে, রাজকন্যারা সাধারণ ব্যক্তিকে বিয়ে করলে রাজপরিবার ছাড়তে হয়। আবার বর্তমান রাজকন্যাকে বিয়ে করার মতো রাজপরিবারে কোনো পুরুষ সদস্যও নেই। তবে সিংহাসনের উত্তরাধিকারী হিসেবে নারীদের মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়ে জাপানে ইতিবাচক জনমত রয়েছে। সূত্র : বিবিসি