অনলাইন ডেস্ক : কানাডার আলবার্টার ক্যালগেরিতে বাংলাদেশের নারীদের প্রতি অনাচার, যৌন নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতিবাদে এক ভার্চুয়াল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রবাস বাংলা ভয়েস এর প্রধান সম্পাদক আহসান রাজীব বুলবুলের সঞ্চালনায় ভার্চুয়াল আলোচনায় অংশ নেন সৈয়দা রওনক জাহান, প্রকৌশলী মো. কাদির, সিলেট অ্যাসোসিয়েশন অব ক্যালগেরির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রূপক দত্ত, ব্যবসায়ী কিরণ বণিক শংকর এবং উন্নয়ন গবেষক ও সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষক মাহমুদ হাসান দিপু।

বক্তারা বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, শুধু রাষ্ট্র, সরকার, রাজনৈতিক ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপর দায় চাপিয়ে পার পাওয়া যাবে না। জীবিকার জন্য পড়ালেখা করলেই চলবে না, পড়ালেখা করতে হবে নারীবান্ধব মানসিকতা ও নৈতিকতা উন্নয়নের জন্য।
সৈয়দা রওনক জাহান বলেন, “অসুরের সাথে আপস বিহীন দ্বন্দ চাই”– আমার প্রশ্ন সাধারণ মানুষকে কেন বার বার প্রতিবাদে নামতে হয় ?? এগুলো দেখার দায়িত্ব যাদের তারা কি করে? তারা যদি সঠিক ভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করতে না পারে, তবে তাদের সেই পদে অধিষ্ট কেন রাখা হয়?

সিলেট অ্যাসোসিয়েশন অফ ক্যালগেরির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রূপক দত্ত বলেন, সিলেট এমসি কলেজসহ সারাদেশের সকল নারী নির্যাতন ও অনাচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অতি দ্রুত এসব নরপশুদের বিচারের আওতায় আনা হোক।

প্রকৌশলী মোহাম্মদ কাদির বলেন, যারা এ ধরনের ঘৃণ্য ও জঘন্য কাজ করেছেন তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি। সামাজিকভাবে তাদের সমাজ থেকে বয়কট করা হউক। আর যেন এই ধরণের ঘটনা না ঘটে সেই ব্যবস্থা নেয়া হউক।

ব্যবসায়ী কিরন বনিক শংকর বলেন, বাংলাদেশের সামাজিক অবক্ষয় আর অস্থিরতা চরম আকার ধারণ করেছে। পাশাপাশি সমাজে নৈতিক মূল্যবোধের অভাব ও সামাজিক অবক্ষয়ে ধর্ষণের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। ধর্ষণের মত জামিন অযোগ্য অপরাধ করেও বারবার অপরাধীরা জামিন পেয়ে যাচ্ছে আর বিচারহীনতা, দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া, রাজনৈতিক প্রভাব এই সব কারণে এদের সঠিক বিচারও হচ্ছে না। বর্তমান সরকার ধর্ষণ সংক্রান্ত ব্যাপারে “জীরো টলারেন্স” অবস্থান গ্রহণ করবে- এই আশাবাদ ব্যাক্ত করছি।

উন্নয়ন গবেষক ও সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষক মো. মাহমুদ হাসান বলেন, “বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী বাংলাদেশীদের মতো আমিও চরমভাবে লজ্জিত, দুঃখিত ও ক্ষুব্ধ। পবিত্র ভূমি সিলেটের পর বেগমগঞ্জের যে পৈশাচিক কর্মকাণ্ডের খবর জনসমক্ষে এসেছে তা সভ্য দুনিয়ায় আমাদের চরমভাবে লজ্জিত ও বিব্রত করেছে, দ্রুত বিচার আদালতের মাধ্যমে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত হোক, এই প্রত্যাশা যেমন আছে, সেই সাথে তরুণ প্রজন্মের এই চরম নৈতিক অবক্ষয়ের পিছনের মূল শক্তি মাদক আর কালোটাকা মুক্ত সমাজ ব্যবস্থা গড়তে না পারলে ফাঁসি আর ক্রসফায়ার কোনটিই এই দুরারোগ্য ক্যান্সারকে সারাতে পারবে না।”