স্পোর্টস ডেস্ক : চরম নাটকীয়তা শেষে ৩৬ বছরের অপেক্ষার অবসান করল আর্জেন্টিনা। ফ্রান্সকে টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে হারিয়ে আর্জেন্টিনাকে তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ শিরোপা জেতালেন লিওনেল মেসিরা।
শ্বাসরুদ্ধ ম্যাচের নির্ধারিত ৯০ মিনিটে ২-২ গোলে সমতায় ছিল। পরে অতিরিক্ত সময়ে দুদল আরও একটি করে গোল দিলে ৩-৩ গোলে ম্যাচ টাইব্রেকারে গড়ায়। সেখানেই বাজিমাত করেন আর্জেন্টিনা তথা দলটির গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেজ।
যদিও টাইব্রেকারে কিলিয়ান এমবাপ্পের প্রথম শটটি ঝাপিয়ে পড়লেও রুখতে পারেননি মার্তিনেজ। এগিয়ে যায় ফ্রান্স। পরে মেসি গোল করে সমতায় ফেরান। কিন্তু ফ্রান্সের দ্বিতীয় ও তৃতীয় শট করতে আসা কিংসলে কোম্যান ও অরেলিয়েন চুয়োমেনিকে আটকে নায়ক বনে যান মার্তিনেজ।
এরপর রানদাল কোলো মুনাই ফ্রান্সের চতুর্থ শটে গোল করলেও অপরদিকে আর্জেন্টিনার দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শটে যথাক্রমে পাওলো দিবালা, লিওনার্দো পারেদেস ও গনজালো মন্তিয়েল গোল করলে শিরোপা জয়ের আনন্দে মাতে আর্জেন্টিনা।
এর আগে মূল ম্যাচ ছিল আরও নাটকীয়তায় ভরপুর। পেনাল্টি থেকে মেসি এগিয়ে দেওয়ার পর প্রথমার্ধেই আনহেল দি মারিয়ার গোলে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে মাত্র ৯৭ সেকেন্ডের মাথায় জোড়া গোল করে ফ্রান্সকে সমতায় ফেরালে স্বস্তি ফেরে দিদিয়ের দেশম শিবিরে।
২-২ ব্যবধানে সমতায় থেকে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানে প্রথমার্ধে ফের মেসির গোলে লিড পায় আর্জেন্টিনা। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে এমবাপ্পে পেনাল্টি গোলে হ্যাটট্রিক করলে ৩-৩ ব্যবধানে ম্যাচ টাইব্রেকারে যায়।
রোববার লুসাইল স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় দুদল। যেখানে ম্যাচের প্রথম থেকেই আক্রমণে আধিপত্য বিস্তার করে খেলে আর্জেন্টিনা। তবে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় ফ্রান্স।
খেলার প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক খেলা আর্জেন্টিনা ২৩তম মিনিটে লিওনেল মেসির পেনাল্টি গোলে এগিয়ে যায়। ফ্রান্সের ডি-বক্সে আনহেল দি মারিয়াকে ফরাসি ফরোয়ার্ড উসমান দেম্বেলে ফাউল করে ফেলে দিলে রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান।
৩৬তম মিনিটে প্রতি আক্রমণ থেকে দারুণ এক গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করে আর্জেন্টিনা। মেসির ফ্লিকে মাঝ মাঠ থেকে আলিক্সেস ম্যাক আলিস্তারের দিকে বল বাড়ান হুলিয়ান আলভারেজ। পরে সেখান থেকে তার বাঁদিকে ক্রস কোনাকুনি শটে সহজেই গোল করেন আনহেল দি মারিয়া।
বিরতির পর দুই মিনিটে ব্যবধানে জোড়া গোল করে ফ্রান্সকে সমতায় ফেরান কিলিয়ান এমবাপ্পে। ম্যাচের ৮০তম মিনিটে ব্যবধান পেনাল্টি থেকে প্রথম গোল করেন পিএসজি ফরোয়ার্ড। রানদাল কোলো মুনাইকে আর্জেন্টিনার নিকলাস ওতামেন্দি ফাউল করলে পেনাল্টি পায় ফ্রান্স।
৯৭ সেকেন্ড পরেই আর্জেন্টিনাকে স্তব্ধ করে জোড়া গোল পূর্ণ করে ফ্রান্সকে ২-২ ব্যবধানে সমতায় ফেরান এমবাপ্পে। দারুণ এক আক্রমণে থুরামের পাসে কোনাকুনি জোরাল শটে গোলটি করেন তিনি। আর্জেন্টিনা গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেজের হাতে লাগলেও বল জালে জড়াতে কোনো সমস্যা হয়নি। এরপর আর কোনো গোল না হলে ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে গড়ায়।
অতিরিক্ত সময়ের ১০৮ মিনিটে মেসির দারুণ গোলে ৩-২ ব্যবধানে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। তবে ১০ মিনিট পরেই পেনাল্টি থেকে হ্যাটট্রিক পূরণ করে ফ্রান্সকে ফের সমতায় ফেরান এমবাপ্পে।