অনলাইন ডেস্ক : কমালা হ্যারিস। নামটা আজ সকলেরই পরিচিত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে জানুয়ারিতেই ‍নিজের কাজ শুরু করবেন তিনি। টাইম ডট কমের একটি প্রবন্ধ থেকে উঠে এসেছে তার জীবনের নানা ইতিহাস। ভারতীয় মহিলা হিসাবে তিনি ইতিমধ্যেই নিজের কাজের ছাপ রেখেছেন। ইন্দো, মার্কিনদের মধ্যে তিনি যে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন তা নিয়ে আমেরিকানরা তাকে শুভেচ্ছার বন্যা বইয়ে দিয়েছে। হোয়াইট হাউজকে তিনি কি দেবেন, কিভাবেই বা তিনি নিজের কাজ করবেন তা নিয়ে ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে নতুন জল্পনা। ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমালা হ্যারিস তার মাকে দেখে শিখেছেন কিভাবে নিজেকে তৈরি করতে হবে।

কোন পথে এগিয়ে গেলে সফলতার শিখরে পৌঁছনো যাবে তা তিনি নিজের মায়ের কাছেই শিখেছেন। তার মা তার জীবনের প্রধান ব্যক্তি ছিলেন। নিজের এক সাক্ষাৎকারে তিনি একথা বলেছেন। তার মা জানতেন আমেরিকায় এসে সেই দেশ গড়ার কাজে তিনি কিভাবে কাজ করবেন। তার পিতামহ পি ভি গোপালন যিনি ভারতে সরকারি চাকরি করতেন তিনি তার মাকে উৎসাহ দিয়েছিলেন। মানুষের জন্য কাজ করতে হবে এই চিন্তা নিয়েই তিনি আমেরিকায় গিয়েছিলেন। ব্রাক্ষ্মণ পরিবারের সন্তান হওয়ার পর ধর্মীয় মেরুকরণের পথে তিনি হাঁটেননি। সকলের থেকে আলাদা ছিলেন বলেই তিনি হয়তো আজ এই উচ্চতায় পৌঁছেছেন। হ্যারিস একজন উচ্চশিক্ষিত এবং বাস্তববাদী মহিলা যিনি একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তার পিতা মনে করতেন, মহিলাদের শিক্ষিত হওয়া কতটা প্রয়োজনীয়। মার্কিন সিনেটের সদস্যা হওয়ার সময় তার পিতা তাকে বলেছিলেন, তুমি পরিবারের রত্ন। এর আলো গোটা মার্কিন মুলুকে ছড়িয়ে দিতে হবে। কৃষাঙ্গ মানুষদের হয়ে লড়াই করার যেখানে কেউ ছিল না সেখানে কমালা সকলকে দেখিয়ে দিয়েছেন কিভাবে সকলকে নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। মার্কিন সিনেটে হ্যারিসের প্রথম ভাষণের মধ্যে দিয়েই সকলে অনুমান করেছিলেন আগামীদিনে তিনি এখানেই থেমে থাকবেন না। তার টার্গেট আরও বিশাল। মার্কিন মুলুকে কৃষ্ণাঙ্গদের হয়ে যে সওয়াল তিনি সেদিন করেছিলেন তাতে অবাক হয়েছিলে‍ন সিনেটের অন্য সদস্যরা। ১৯৩০ সালে মিসিসিপিতে তিনি একটি স্বাস্থ্য পরিষেবার অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। তার সেই কাজটি থেকেই তিনি প্রমাণ করেন, তিনি মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরি করতে চান না। প্রতিটি মানুষের প্রতি তিনি সঠিক আচরণ করতেই বিশ্বাসী ছিলেন। অসহায় মানুষদের হেনস্থা করার বিরুদ্ধে তিনি বরাবরই গর্জে উঠেছিলেন। প্রতিপক্ষকে পরোয়া না করেই তিনি নিজের কাজ করে গিয়েছেন। মানুষের প্রতি তার আচরণ এবং সম্পর্কই আজ তাকে এই পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। তিনি সোনার চামচটি মুখে নিয়ে জন্মগ্রহণ করেননি। তাই আজ তিনি ইতিহাসের দোরগোড়ায়। নিজেকে তিনি মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে তুলে নিয়ে এসেছেন। মার্কিন নাগরিকরা তাইতো তার পক্ষেই তাদের রায় দিয়েছেন। কাজ, সাহস, পরিশ্রম, ইচ্ছা, আশা এই সবকে পাথেয় করেই আজ কমালা হ্যারিসের উত্থান। এবার শুধু তার কাজ করার পালা। তার দিকেই এবার তাকিয়ে রয়েছে হোয়াইট হাউজ। একজন লড়াকু মহিলার উত্থানের কাহিনী এবার বাস্তবের মাটিতে।