অনলাইন ডেস্ক : কাঁচামরিচের দাম হু হু করে বাড়ছে। সোমবার কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার বিভিন্ন বাজারে প্রকারভেদে কাঁচামরিচ প্রতি কেজি ৩২০ থকে ৪০০ টাকা বিক্রি হয়। আর রাজশাহীর বাঘায় রোববার প্রতি কেজি বিক্রি হয় ৩২০ টাকায়। হঠাৎ এই দাম বাড়ার কারণ বলতে পারছেন না খুচরা ব্যবসায়ীরা। তাদের অভিযোগ করছেন, কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়ানো হচ্ছে।

তবে পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, ‘খড়া ও বৃষ্টিতে মরিচ খেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ কারণে দাম বেড়েছে।’

এমন পরিস্থিতিতে সরকার ভারত থেকে কাঁচামরিচি আমদানির অনুমতি দিয়েছে। সোমবার দিনাজপুরের হিলি বন্দর দিয়ে ভারত থেকে কাঁচামরিচ আনা শুরু হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

পাকুন্দিয়া (কিশোরগঞ্জ) : পাকুন্দিয়ার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক পোয়া কাঁচামরিচ ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ এক কেজির দাম ৪০০ টাকা। রোববারও এক কেজি মরিচ ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়। একদিনের ব্যবধানে ১০০ টাকা বেড়ে যায়।

একজন ক্রেতা জানান, এক কেজি কাঁচামরিচ ৪০০ টাকা, ভাবা যায়! যেখানে ৪০০ টাকা হলে ৬ কেজি চাল কেনা যায় সেখানে ১ কেজি কাঁচামরিচের দাম ৪০০ টাকা। এক শ্রেণির মুনাফালোভী ব্যবসায়ী ইচ্ছামতো জিনিসপত্রের দাম বাড়াচ্ছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

আরেক ক্রেতা খোকন মিয়া বলেন, কাঁচামরিচের দাম বাড়ার পেছনে খুচরা ব্যবসায়ীদের কোনো হাত নেই। আমাদের ধারণা, বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়ানো হচ্ছে।

তবে পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, কাঁচামরিচের দাম বাড়ার পেছনে ব্যবসায়ীদের কারসাজির সুযোগ নেই। চাহিদার থেকে সরবরাহ কম থাকলে দাম বাড়বে এটাই স্বাভাবিক।

তারা বলেন, বৃষ্টি ও খড়ায় দেশের বিভিন্ন স্থানে মরিচ খেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ কারণে দাম বেড়েছে।

বাঘা (রাজশাহী): বাঘা উপজেলার দিঘা বাজার ঘুরে দেখা যায়, চার দিন আগেও সেখানে কাঁচামরিচ খুচরা প্রতি কেজি ১০০-১২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। রোববার তিনগুণ বেড়ে ৩২০ টাকায় বিক্রি হয়। সবজি ব্যবসায়ী আয়নাল হক বলেন, চার দিন আগে বাজারে কাঁচামরিচ পাইকারি হিসাবে কেজি ১০০-১২০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। কিন্তু হঠাৎ পাইকারি বাজার থেকে তিনগুণ দাম দিয়ে ক্রয় করতে হচ্ছে। বাধ্য হয়ে বেশি দামে বিক্রি করছি।

এই বাজারের ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টি না হওয়া এবং প্রচণ্ড রোদ-গরমে খেতে মরিচ নষ্ট হচ্ছে। এতে সরবরাহ কমে গেছে। তাই দাম বেড়েছে।

হাকিমপুর (দিনাজপুর): প্রায় ১০ মাস বন্ধের পর দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে কাঁচামরিচ আমদানি শুরু হয়েছে। সোমবার বেলা ১১টার দিকে একটি ট্রাক কাঁচামরিচ নিয়ে হিলি স্থলবন্দরে প্রবেশ করে। মরিচের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকায় সরকার আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে দেশের বাজারে দাম কমবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। বর্তমানে হিলির খুচরা বাজারে ২০ টাকা কমে ১৮০ টাকা দরে কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে।

আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান সততা বাণিজ্যালয়ের প্রতিনিধি শাহাবুল ইসলাম বলেন, ভারত থেকে কাঁচামরিচ আমদানি হচ্ছে। এখন পর্যন্ত আমরা প্রায় ৫০ টন কাঁচামরিচের এলসি করছি। সরকার আমদানি অব্যাহত রাখলে বাজারে দাম অনেকটাই কমে আসবে।