অনলাইন ডেস্ক : বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘আজকে সারাদেশের মানুষ জাগরিত। তাদের মনের যে জাগরণ দেশ মাতৃকা রক্ষার জন্য, এখানে হিন্দু-মুসলমান এই মাতৃকায় যাদের জন্ম, এই মাটির সন্তান তারা। তারা এই দেশকে অন্যের গোলামির কাছে বিক্রি করবে কেন? আমরা হিন্দু-মুসলমান একইসঙ্গে লড়াই করব। দিল্লির দাসত্বকে খান খান করে দেব।’

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন ফ্রন্টের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশ ও পদযাত্রায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘বিজেপি সরকার গোঁড়া হিন্দুত্ববাদকে পুঁজি করে ক্ষমতায় এসেছে। এদের আর কোনো পুঁজি নেই। সুতরাং, ক্ষমতায় থাকতে হলে হিংসা ও ঘৃণা ছড়াতে হবে। এ ছাড়া নরেন্দ্র মোদি বাবুর ক্ষমতায় থাকা অনেক মুশকিল হবে। কারণ ভারতের স্বাধীনতায় তাদের পূর্বসূরিদের কোনো অবদান নেই। এটি আমার নিজের ইতিহাস পাঠ নয়, একজন বিখ্যাত লেখক অন্নদা শংকর রায় তার এক লেখায় বলেছেন।’

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমার কাছে অবাক লাগে, যে ভদ্রমহিলার (ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ছিল। অসাম্প্রদায়িক, সেক্যুলার হিসেবে যে রাজনীতিবিদকে চিনতাম, তাকেও মনে হলো— রাজনীতির জন্য মুখে অসাম্প্রদায়িকতার কথা বলতেন, ধর্ম নিরপেক্ষতার কথা বলতেন, কিন্তু তার গভীরে ছিল কট্টর হিন্দুত্ববাদ। যেকোনো আদর্শের কট্টরবাদ মানবতার পরিপন্থী।’

তিনি বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে মুসলিমদের হার ২৫ শতাংশ, অথচ সরকারি চাকরিতে সুযোগ পায় মাত্র ১ শতাংশ। তাহলে মমতা তো কখনোই ধর্মনিরপেক্ষ মানবতাবাদী ছিলেন না। ’

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমরা জোর গলায় বলতে পারি— শেখ হাসিনা ছাড়া অন্যের ধর্মের প্রতি ঘৃণা ও বিদ্বেষ কেউ কখনোই ছড়ায়নি (বাংলাদেশে)। এই দেশে যারা ইসলামী রাজনীতি করেন, তারাও কিন্তু সাম্প্রদায়িক কথা বলেন না। অন্য ধর্মের প্রতি আক্রমণ করে কোনো কথা বলেন না। এটাই আমাদের ঐতিহ্য।’

ভারতীয়দের উদ্দেশে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘আপনারা আগরতলায় সহকারী হাইকমিশনে আমাদের পতাকা নামিয়ে ছিঁড়েছেন। এটা তো প্রচণ্ড আঘাত। এটা আমরা কোনোদিনও ভুলে যাব না।’

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমরা আমাদের স্বাধীনতা রক্ষায় অঙ্গিকারাবদ্ধ। আমরা ভারতসহ যত বড়, ক্ষুদ্র রাষ্ট্র আছে প্রত্যেকটা দেশের স্বাধীনতার মর্যাদা দিই, কিন্তু ভারতের শাসকগোষ্ঠী যদি মনে করে, ‘‘সম্প্রসারণ চালিয়ে বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান ও অন্যান্য দেশ আমরা (ভারত) কব্জা করে নেব’’। তাহলে আপনারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন।’

বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন ফ্রন্টের সভাপতি অর্পুনা রায় দাসের সভাপতিত্বে, সাধারণ সম্পাদক সমীর কুমার বসুর সঞ্চলনায় অন্যদের মধ্যে ছিলেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অমলন্দ দাস অমলেন্দু দাস অপু, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদ খান প্রমুখ।